বর্তমান বাস্তবতায় রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন যেমন অনিশ্চিত, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের একার পক্ষে এ বিশাল জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ওপর দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ তৈরি করছে। রোহিঙ্গা সংকটে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর ভূমিকা ও প্রাসঙ্গিক জটিলতা নিয়ে লিখেছেন উম্মে ওয়ারা

২০২২ সাল থেকে প্রতিবছর ২৫ আগস্ট দিনটি বাংলাদেশে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ২০১৭ সালের এই দিনে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও সম্পদ লুটের মাধ্যমে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্বিচার আক্রমণ শুরু করে।

অনেক বছর ধরে নিষ্পেষণ ও বৈষম্যের শিকার রোহিঙ্গাদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমার সরকার মূলত ‘অপারেশন ক্লিয়ারেন্স’-এর নির্দেশনা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের সীমান্ত অতিক্রম করে আশ্রয় গ্রহণ করে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক আদালত এ নৃশংস হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু অপরাধের এ সংজ্ঞায়ন আট বছর ধরে ক্যাম্পে মানবেতর জীবন কাটানো রোহিঙ্গাদের জীবনে কোনো গুণগত পরিবর্তন আনতে পারেনি।

এর কারণ হিসেবে উল্লেখযোগ্য দুটি আলোচ্য বিষয় হলো:

ক. ‘শরণার্থী’ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে আইনি স্বীকৃতি না পাওয়া এবং

খ. মিয়ানমারের দায়বদ্ধতা বিষয়ে ভারত-চীনের মতো শক্তিশালী দক্ষিণ এশীয় দেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কোনো ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারা।

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া কি মিথে পরিণত হচ্ছে

১২ ঘণ্টা আগে

রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া কি মিথে পরিণত হচ্ছে

২.

বাংলাদেশ সরকারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে শরণার্থী (রিফিউজি) হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দেওয়ার পেছনে কিছু রাজনৈতিক, আইনি ও কূটনৈতিক কারণ রয়েছে।

বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে স্বাক্ষরকারী নয়। তাই আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ২০১৭ সালে আসা রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা দেওয়ার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা বাংলাদেশ সরকারের ছিল না। এর পরিবর্তে বাংলাদেশ তাদের ‘ফোর্সিবলি ডিপ্লেসেড মিয়ানমার ন্যাশনালস’ বা ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে।

বাংলাদেশ সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী নয়; বরং অস্থায়ী আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে বসবাস করতে দিয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মহলের মানবিক সহায়তা পেয়ে এলেও বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে সরকার বাধ্য থাকে না।

এ ছাড়া তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার মনে করেছে, রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা না দিয়ে বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবে মিয়ানমারকে বার্তা দিয়েছে যে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী ঠিকানা মিয়ানমারে। এ কারণে দেরিতে হলেও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে।

বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দিয়ে কয়েক দফায় লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে একদিকে মানবিক দায়িত্ব পালনের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, অপর দিকে দীর্ঘ মেয়াদে স্থানচ্যুত এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার কারণে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাড়তি জনসংখ্যার চাপ, পরিবেশের ক্ষতি, অর্থনৈতিক বোঝা এবং অপরাধমূলক কাজের বৃদ্ধি বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে চাপের মধ্যে ফেলেছে।

যে উদ্দেশ্য মাথায় রেখে ‘শরণার্থী’ হিসেবে রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছে নানা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক জটিলতার কারণে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীনের কার্যকর হস্তক্ষেপের অনুপস্থিতি। এর পেছনে বেশ কিছু ভূরাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত কারণ বিদ্যমান।

৩.

যে উদ্দেশ্য মাথায় রেখে ‘শরণার্থী’ হিসেবে রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছে নানা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক জটিলতার কারণে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীনের কার্যকর হস্তক্ষেপের অনুপস্থিতি। এর পেছনে বেশ কিছু ভূরাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত কারণ বিদ্যমান।

চীন ও ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের প্রভাব বিস্তারের জন্য মিয়ানমারকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে। মিয়ানমার হলো চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অন্যতম করিডর। অপর দিকে ভারত মিয়ানমারকে তার ‘অ্যাক্ট অব ইস্ট পলিসি’র অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে চায়।

চীন মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশগুলোর একটি। মিয়ানমারের বন্দর, খনি, গ্যাস, অবকাঠামোতে চীন বিশাল বিনিয়োগ করেছে। অন্যদিকে ভারতও মিয়ানমারে কালাদান মাল্টিমডেল প্রজেক্ট এবং সড়ক-সংযোগ প্রকল্প পরিচালনা করছে।

এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে দেশ দুটি মিয়ানমারের ভৌগোলিক অবস্থানকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। তাই চাপ সৃষ্টি করলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিকতার চেয়ে চীন ও ভারত তাদের ভূরাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

৪.

ভারত বা চীনই শুধু নয়, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চীন ছাড়াও রাশিয়ার ভেটোর কারণে মিয়ানমার আন্তর্জাতিকভাবে বড় কোনো শাস্তির মুখে পড়েনি। তবে শাস্তির সম্মুখীন না হলেও মিয়ানমার যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক আক্রমণ চালিয়েছে, তা ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসেই জাতিসংঘের তৎকালীন মানবাধিকার প্রধান সে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এবং সতর্কতামূলক পর্যবেক্ষণের কথাও উল্লেখ করেছিলেন।

২০১৮ সালের আগস্ট মাসে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা (জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন) প্রকাশ করে যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডে ‘গণহত্যামূলক ইনটেন্ট’ বা জেনোসাইড সংঘটনের উদ্দেশ্য উপস্থিত ছিল। তারা যেসব অপরাধের কথা তুলে ধরে, তার মধ্যে জেনোসাইড, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি রেজল্যুশন পাস হয়। সেখানে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন উল্লেখ করে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ প্রকাশ করা হয় এবং জেনোসাইডের মতো অপরাধ হয়েছে কি না, সে বিষয়ে তদন্তের কথা বলা হয়। তবে এটিও কোনো ‘আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি’ নয়; বরং এটাকে নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণভিত্তিক সিদ্ধান্ত হিসেবেই উল্লেখ করা হয়।

৫.

মিয়ানমার ১৯৫৬ সালে জেনোসাইড কনভেনশনটি অনুমোদন করেছিল। ফলে গাম্বিয়া এই আইনের ৯ নম্বর ধারার অধীন একটি মামলা করে। এটা ‘জেনোসাইডের জন্য রাষ্ট্রের দায়–সম্পর্কিত’ পক্ষগুলোর মধ্যে বিরোধ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজেতে (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস) আবেদন জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়।

২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি গাম্বিয়া বনাম মিয়ানমার মামলায় আইসিজে ‘অস্থায়ী প্রজ্ঞাপন’ জারি করে। এতে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যেকোনো গণহত্যা প্রতিরোধ, নিরাপত্তা বাহিনীর অগ্রহণযোগ্য আচরণ বন্ধ করা এবং রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণের প্রমাণ সুরক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এটি একটি বড় আইনি স্বীকৃতি হলেও এটি মামলার চূড়ান্ত রায় নয়। মামলাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। উভয় পক্ষের লিখিত দাখিল সম্পন্ন হওয়ার পর মামলাটির মৌখিক শুনানি হবে, যেখানে গাম্বিয়া ও মিয়ানমার আদালতে তাদের যুক্তি উপস্থাপন করবে।

এ আইনি যুক্তি বিবেচনা সাপেক্ষে আদালত চূড়ান্ত রায় দেবেন, যা আরও কয়েক বছর সময় নিতে পারে। আইসিজের মামলাগুলো যদিও দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পন্ন হয় এবং কোনো ফৌজদারি তদন্ত করার এখতিয়ার রাখে না। তবু এ মামলাগুলো ন্যায়বিচারের স্বার্থে অবদান রাখতে পারে এবং ভবিষ্যতের অপরাধ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরফাইল ছবি

৬.

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট) ব্যক্তিকেন্দ্রিক অপরাধীর (যেমন রাষ্ট্রপ্রধান, সেনাপ্রধান বা রাজনীতিবিদ) বিরুদ্ধে মামলা করার এখতিয়ার রাখেন। এরপরও আইসিসি মিয়ানমার সরকার–সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির বিচার করতে পারছেন না।

এর কারণ হলো মিয়ানমার ১৯৯৮ সালের রোম সংবিধি স্বাক্ষর বা অনুমোদন করেনি। তবে বাংলাদেশ রোম সংবিধির সদস্যদেশ এবং রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়ন যেহেতু আংশিকভাবে বাংলাদেশের ভেতরে সংঘটিত হয়েছে, তাই আইসিসি ‘ফোর্সড ডিপোর্টেশন’ বা ‘জোরপূর্বক বিতাড়ন’-এর এই অপরাধ তদন্তের এখতিয়ার অর্জন করেছে।

২০১৯ সাল থেকে আইসিসি এ অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত চালাচ্ছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করেনি। ২০২৪ সালের নভেম্বরে আইসিসির প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের একজন সামরিক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জন্য একটি আবেদন দাখিল করা হয়েছিল।

তবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে কি না, তা বিচারকদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমনের জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ সংগ্রহ করতে তদন্তে কত বছর সময় লাগতে পারে, তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন

হাসিনা আমলের রোহিঙ্গা নীতি পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

হাসিনা আমলের রোহিঙ্গা নীতি পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি

৭.

শরণার্থী সুরক্ষাবিষয়ক রাজনৈতিক ও আইনি কাঠামোতে ‘বার্ডেন শেয়ারিং’ বা সব রাষ্ট্রের মধ্যে দায়দায়িত্ব ভাগাভাগির একটি নীতির উল্লেখ আছে। এই নীতি অনুযায়ী, শরণার্থীদের সুরক্ষাসহ অন্যান্য সমস্যা-সংকট নিরসনে বিভিন্ন দেশ সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে দায়িত্ব ভাগ করে নেবে, যেন কোনো একটি নির্দিষ্ট রাষ্ট্র নিজ দেশের সক্ষমতার বেশি চাপ অনুভব না করে।

দুঃখজনক হলেও সত্যি, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ন্যায্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব বণ্টনের ক্ষেত্রে অসমতা রয়েছে। অনেক বছর ধরে বাংলাদেশই মূল এ দায়িত্ব পালন করে আসছে, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রত্যাবাসন এবং মানবিক সহায়তার জন্য পর্যাপ্ত বা সমন্বিত সহায়তা প্রদানেও ব্যর্থ হচ্ছে।

এ অসামঞ্জস্য দায়িত্ব বণ্টনের মূল কারণগুলো হলো রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান এবং নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারের অব্যাহত অস্বীকৃতি ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অপর্যাপ্ত তহবিল এবং দীর্ঘস্থায়ী শরণার্থী পরিস্থিতি পরিচালনার বাস্তবিক চ্যালেঞ্জগুলো।

এ বিষয়গুলো বাংলাদেশের ওপর দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ তৈরি করছে। বর্তমান বাস্তবতায় রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন যেমন অনিশ্চিত, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের একার পক্ষে এ বিশাল জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এ জটিল পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আরও প্রয়োজন আন্তর্জাতিক মহল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। এগুলোর ব্যত্যয় হলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট আরও অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হবে।

উম্মে ওয়ারা সহযোগী অধ্যাপক, ক্রিমিনোলজি বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মতামত লেখকের নিজস্ব

সূত্র, প্রথম আলো