যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুফাইল ছবি: রয়টার্স

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই যুদ্ধে ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত, ১ লাখ ৬৮ হাজার জন আহত এবং কয়েক হাজার শিশু অনাহারে মারা গেছে। সর্বশেষ গাজা সিটি দখল করতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলে।

এই নির্মম চক্র ‘ভাঙতে’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক প্রস্তাব ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি একটি এআই-জেনারেটেড ভিডিও পোস্ট করে গাজাকে মার্কিন দখলে নিয়ে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর স্বপ্নের কথাও জানান দিয়েছিলেন তিনি।

নতুন করে আবারও তিনি ২০ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। যেখানে হামাসকে উচ্ছেদ করে ‘টেকনোক্র্যাটিক ফিলিস্তিনি কমিটি’ গঠনের কথা রয়েছে। সেই কমিটিকে তদারক করার জন্য একটি ‘শান্তি পরিষদ’ গঠন করা হবে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে। তবে চেয়ারম্যান প্রধান থাকবেন ট্রাম্প নিজেই।

সোমবার হোয়াইট হাউস এই পরিকল্পনা প্রকাশের আগে চলমান জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে আরব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। এরপর তিনি নেতানিয়াহুর সম্মতি গ্রহণ করেন এবং হামাসকে হুমকি দিয়েছেন, ‘মেনে নাও, নইলে যুদ্ধ চলবে।’

কিন্তু এই ‘শান্তি পরিকল্পনা’ কি শান্তি আনবে, নাকি ফিলিস্তিনিদের জন্য এটা হবে একটা নতুন শৃঙ্খল? ফিলিস্তিনি-আমেরিকান বিশ্লেষক ওমর বদ্দার এই পরিকল্পনাকে আখ্যা দিয়েছেন ‘পয়জন পিল’ বলে। তিনি আল–জাজিরাকে বলেছেন, কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও এর মূল উপাদান ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হয়েছে। গাজার বাসিন্দা ইবরাহিম জুদেহ বলেন, ‘এটি অবাস্তব—যুদ্ধ চলবে।’

বিষাক্ত স্বপ্নের সূচনা যেভাবে হয়

ট্রাম্পের বর্তমান পরিকল্পনা মূলত তার ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর ‘গাজা রিভিয়েরা’ প্রস্তাবেরই ছায়া। সে সময় তার ‘গাজা রিকনস্ট্রাকশন, ইকোনমিক অ্যাকসিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্ট (GREAT) প্রকল্পে গাজাকে দুবাই-স্টাইলের রিসোর্টে রূপান্তরের কল্পনা করা হয়, যেখানে থাকবে স্কাইস্ক্র্যাপার, কৃত্রিম দ্বীপ, ‘ট্রাম্প রিভিয়েরা’ এবং ‘ইলন মাস্ক স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং জোন’।

৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে ৯ হাজার ডলারের ‘রিলোকেশন প্যাকেজ’ দিয়ে ‘স্বেচ্ছায়’ অন্য দেশে সরানোর পরিকল্পনা ছিল। পরে আরব রাষ্ট্রনেতারা ও জাতিসংঘ এটিকে ‘পাগলামি’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। এমনটি ইসরায়েলে জনপ্রিয় দৈনিক হারেৎজ ‘ট্রাম্পিয়ান গেট-রিচ-কুইক স্কিম’ বলে উপহাস করে।

পরে প্রকাশ পায় যে, এই প্রস্তাবের নেপথ্যে ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের তদন্তে উঠে আসে, ব্লেয়ারের ‘টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জ’ (টিবিআই) ইসরায়েলি ব্যবসায়ী ও বিসিজির সঙ্গে মিলে ‘গাজা ইকোনমিক ব্লুপ্রিন্ট’ তৈরি করে এবং ইসরায়েল পরিচালিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) নিরাপত্তা প্রধান সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা ফিল রিলে সে সময় ব্লেয়ারের সঙ্গে লন্ডনে সাক্ষাৎ করে প্রজেক্ট পিচ করেন।

সেই ‘রিভিয়েরা’র ছায়াই ট্রাম্পের বর্তমান পরিকল্পনায় ফিরে এসেছে। ধারণা করা হয়, সে কারণেই বর্তমান পরিকল্পনায় ব্লেয়ার ‘ট্রানজিশনাল অথরিটি’র পরিচালক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।

ব্লেয়ারের বিতর্কিত ভূমিকা

পরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে গাজার শাসন একটি ‘অস্থায়ী টেকনোক্র্যাটিক ফিলিস্তিনি কমিটি’, যা ‘শান্তি পরিষদ’–এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। কিন্তু কমিটির সদস্য কে নির্বাচন করবে? প্রক্রিয়া কী? এর কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। ব্লেয়ারকে বলা হয় ২০০৩-এর ইরাক যুদ্ধের ‘স্থপতি’। চিলকট রিপোর্ট প্রমাণ করে, ব্লেয়ার শান্তিপূর্ণ বিকল্প চূড়ান্ত না করে যুদ্ধে যান, যা লাখ লাখ জীবন ধ্বংস করেছে।

ওমর বদ্দার বলেন, ‘ব্লেয়ার ও ট্রাম্পের রেকর্ড অপরাধমূলক। ব্লেয়ার ইরাক আক্রমণের মিথ্যার অজুহাতের নায়ক ছিলেন; আর ট্রাম্প হলো পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতি স্থাপন, গোলান মালভূমি দখল, জেরুজালেম ইসরায়েলের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সমর্থক।’

জাতিসংঘের আবাসন বিশেষজ্ঞ বালাকৃষ্ণান রাজাগোপাল আল–জাজিরাকে বলেছেন, ‘ব্লেয়ারের নেতৃত্বে ‘ট্রানজিশনাল অথরিটি’ মাধ্যমে স্থায়ী বাফার জোন তৈরি গাজার ভূমি দখলের একটি ঘৃণ্য প্রচেষ্টামাত্র।’ অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর ডেভিড শুব্রিজ বলেছেন, ‘ব্লেয়ার গাজায় কেন, তার তো ইরাক যুদ্ধের জন্য বিচারের কাঠগড়ায় থাকা উচিত।’ লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিনের মতে, ‘ব্লেয়ার মধ্যপ্রাচ্যে থাকা উচিত নয়—তার ইরাক সিদ্ধান্ত হাজার হাজার জীবন কেড়েছে।’

২০০২ সালে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তিপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে, বিশেষ করে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের লক্ষ্যে ‘কোয়ার্টেট অন দ্য মিডল ইস্ট’ নামের একটি আন্তর্জাতিক গ্রুপ গঠিত হয়েছিল। ব্লেয়ার ছিল এই গ্রুপের প্রতিনিধি। ব্লেয়ারের দায়িত্ব ছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রতিষ্ঠান গঠনে সহায়তা, অর্থনৈতিক প্রকল্প তত্ত্বাবধান এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় সহযোগিতা করা। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, তিনি তখন অবৈধ ইসরায়েলি বসতি রোধ করতে কোনো ভূমিকা রাখেননি, বরং ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছেন। এমনকি ২০১৪ সালে ইসরায়েল গাজায় অভিযান চালালেও ব্লেয়ার নীরব থাকেন।

হামাসকে নিরস্ত্র করা নাকি স্থায়ী দখলের চেষ্টা

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাস অস্ত্র ছাড়লে ইসরায়েল ‘মান, অগ্রগতি ও সময়সীমা’ বিবেচনা করে সেনা প্রত্যাহার করবে। কিন্তু কোনো টাইমলাইন নেই। গাজা ‘সন্ত্রাসমুক্ত’ না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল একটা ‘নিরাপত্তাবেষ্টনী’ দিয়ে রাখবে। কিন্তু কে ঠিক করবে যে ‘সন্ত্রাসমুক্ত’ হয়েছে কি না?

ওমর বদ্দার বলেন, ‘ইসরায়েল অনির্দিষ্টকাল দখল চালাবে, প্রত্যাহারের কোনো গ্যারান্টি নেই। ফিলিস্তিনিরা বন্দি জীবন যাপন করবে।’ ফিলিস বেনিস বলেন, ‘কোনো নিশ্চয়তা নেই যুদ্ধ শেষ হবে। ইসরায়েল জিম্মি ফিরিয়ে নিয়ে বলতে পারে, ‘সহযোগিতা পাচ্ছি না, যুদ্ধে ফিরব।’ হোয়াইট হাউসের মানচিত্রে দেখানো হয়েছে, তৃতীয় ধাপে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘নিরাপত্তা বাফার জোন’ ধরে রাখবে।

একটি ‘অস্থায়ী আন্তর্জাতিক শান্তি বাহিনী’ (আইএসএফ) নিরাপত্তা দেখবে। কিন্তু কোন দেশ? ম্যান্ডেট কী? ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো হাজার হাজার শান্তিরক্ষী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, আবার তিনি জাতিসংঘের অধিবেশনে শিগগিরই ইসরায়েলকে ইন্দোনেশিয়া ‘স্বীকৃতি’ দেওয়ার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেছেন।

তা ছাড়া এই বাহিনীকে কি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা দেওয়া হবে? সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিক অ্যালন পিনকাস বলেন, ‘এটি একটি সিমুলেশন গেম—জটিল, বিতর্কিত। নেতানিয়াহু চুক্তি ব্যর্থ করতে সময় কিনবেন। হামাস ৭২ ঘণ্টায় বন্দী মুক্তি দেবে না।’

হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর সোমবার যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (বাঁয়ে) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর সোমবার যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কী হবে

পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রত্বের ‘বিশ্বাসযোগ্য পথ’ আছে বলা হয়েছে, কিন্তু তা শর্ত সাপেক্ষে। আগে গাজা পুনর্নির্মাণ, তারপর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) সংস্কার। অথচ একই সঙ্গে ট্রাম্প এটাও বলেছেন, ‘কিছু দেশ বোকামি করে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’

নেতানিয়াহু সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পিএ গাজায় আসতে পারবে না, হামাসও না। পরিকল্পনার ১৭ নম্বর দফায় বলা হয়েছে, হামাস যদি পরিকল্পনা গ্রহণে বিলম্ব করে কিংবা প্রত্যাখ্যান করে তবু ‘সন্ত্রাসমুক্ত এলাকায়’ নতুন গঠিত কমিটি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

আল–জাজিরার জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারার মতে, হামাস যদি এটা মেনে নেয়, তাহলে তা হবে ‘হামাসের আত্মসমর্পণ। ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে হামাস একটি আলটিমেটাম হিসেবে দেখবে—হয় আত্মসমর্পণ করো, নয়তো যুক্তরাষ্ট্র তার সবচেয়ে কাছের মিত্র ইসরায়েলকে সমর্থন করবে। এখন তাদের বোঝানো হতে পারে যে হয়তো তাদের উন্নতির জন্য আত্মসমর্পণ করা উচিত। তিন বছরের গণহত্যার পর রক্তপাত বন্ধ হতে পারে, কিন্তু রাষ্ট্র? কোথায়?’

বিশ্লেষক রিমা হোসেইনের মতে, ‘এটা কোনো শান্তি প্রচেষ্টা নয়, ইসরায়েলের আধিপত্যের নতুন রূপ। পিএ-কে বাইপাস করে গাজাকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।’

যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, ভারত, যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে এই পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ স্বাগত জানিয়েছে; তুরস্কের এরদোগান ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। আরব নেতারা (মিসর, জর্ডান, সৌদি, কাতার) সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা এই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে রাজি নয়। কেননা, এতে কেবল ‘প্রতিশ্রুতি’ আছে, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কোনো সম্ভাবনা নেই।

কী বলছে ফিলিস্তিনিরা

গাজার মানুষ পরিকল্পনাকে ‘হাস্যকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ৩৯ বছয় বয়সী গাজার বাসিন্দা ইবরাহিম জুদেহ আল-মাওয়াসিতে তার আশ্রয় থেকে এএফপি নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, ‘এটা স্পষ্ট যে এই পরিকল্পনা অবাস্তব, এটি এমন শর্ত দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল উভয়ে জানে হামাস কখনো মানবে না। আমাদের জন্য এর অর্থ হলো যুদ্ধ ও কষ্ট অব্যাহত থাকবে।’

উত্তর গাজার বাড়ি থেকে মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহতে উদ্বাস্তু হওয়া ৫২ বছর বয়সী আবু মাজেন নাসার সমানভাবে হতাশ। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার জন্য আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা ছাড়া সব বন্দীকে হস্তান্তর করার মানে কী? আমরা, জনগণ হিসেবে এই হাস্যকর প্রস্তাব মানব না, হামাস এখন চুক্তি নিয়ে যা-ই সিদ্ধান্ত নিক, তা অনেক দেরি হয়ে গেছে।’

ফিলিস্তিনি বুদ্ধিজীবী কবি তামিম বারগুসি তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে লিখেছেন, ১৯৮২ সালে ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগঠন (পিএলও) এমন একটা মার্কিন পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছিল। শর্ত ছিল, তারা অস্ত্রসহ বৈরুত থেকে বেরিয়ে যাবে, শহরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে একটা আন্তর্জাতিক বাহিনী, আর নিশ্চয়তা থাকবে যে ইসরায়েল সেখানে প্রবেশ করবে না। পিএলও বেরিয়ে গেল, কিন্তু আন্তর্জাতিক বাহিনী সরে দাঁড়াল, আর তখনই ইসরায়েল ঢুকে পড়ে সাবরা ও শাতিলায় ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালায়।

আজকের মার্কিন পরিকল্পনার খসড়ায় বলা হচ্ছে—(হামাসের) টানেল ও অস্ত্র ধ্বংস করা হবে, অস্ত্রধারীরা বেরিয়ে যাবে, আর গাজার মানুষকে রেখে দেওয়া হবে কেবল এক ‘প্রতিশ্রুতির‘ ভরসায়। বন্দিমুক্তির বিনিময়েও দেওয়া হবে কেবল প্রতিশ্রুতি…। যদি প্রতিরোধশক্তি (হামাস) এই প্রস্তাব মেনে নেয়, তবে তো হামাস নিজেই টিকবে না। তাদের যোদ্ধারাই তাহলে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে সংগঠনের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, আত্মরক্ষার তাগিদে এবং নিজের পরিবারকে বাঁচানোর জন্য।

এটা কোনো ভবিষ্যদ্বাণী না—বরং অতীতের শিক্ষা। সাবরা-শাতিলার পর যেমন সংগঠন ভেতর থেকে ভেঙে পড়েছিল, শরণার্থীশিবিরগুলোয়ও ফিলিস্তিনিদের নিজেদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেছিল। তাই কোনো ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব এই পরিকল্পনা গ্রহণ করলে দেখা যাবে তার নিজের যোদ্ধারাই তাকে উৎখাত করবে।

সূত্র, প্রথম আলো