বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন রাজনৈতিক দল। দলটি ১৯৭১-৭৫, ১৯৯৬-২০০১ এবং ২০০৯-২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন ছিল। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী একমাত্র রাজনৈতিক দলের দাবিদার। যদিও এমন দাবি নিয়ে বিস্তর মতপার্থক্য রয়েছে। তবে গণবিরোধিতা, গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদী মানসিকতার কারণে তারা এখন রীতিমত ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই গণহত্যার দায়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫ সালের ১০ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে ধারাবাহিকতায় ১২ মে ২০২৫ সালে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের গোড়াপত্তন হয়। পরবর্তীকালে এর নাম ছিল ‘নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’। ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে এর নামকরণ করা হয় ‘আওয়ামী লীগ’।

প্রতিষ্ঠালগ্নে আওয়ামী লীগ একটি উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক আদর্শের রাজনৈতিক দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেও দীর্ঘকালের পরিক্রমায় দলটির পক্ষে সে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি বরং ক্ষমতালিপ্সা ও গণবিরোধিতা তাদেরকে রীতিমত গণবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। কারণ, তারা কখনোই গণতান্ত্রিক আদর্শের ওপর স্থির থাকতে পারেনি বরং দলটি রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য বারবার গণতন্ত্র হত্যা ও গণতন্ত্রের অপব্যাখ্যার অবতারণা করেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে, আওয়ামী লীগারদের স্বার্থ রক্ষা ও তাদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থই যেন গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ।

মূলত, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মত-পথ নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনসাধারণ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও স্বাধীনতা পরবর্তী সরকার দেশের মানুষের সাথে রীতিমত প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের কবর রচনা করে প্রতিষ্ঠিত করা হয় একদলীয় বাকশালী শাসন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে নানা অজুহাত তুলে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে জামায়াতে ইসলামীর মত আদর্শবাদী, গণমুখী ও গণতান্ত্রিক আদর্শের রাজনৈতিক দলকে অন্যায়ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। কিন্তু ইতিহাস তাদেরকে ক্ষমা করে নি বরং তারা নিজেদের খোঁড়া গর্তে নিজেরাই পড়েছে। সম্প্রতি এখন নির্বাহী আদেশে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মূলত, জামায়াতকে যেসব অপবাদ দিয়ে বারবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো, সুনির্দিষ্ট সেসব অভিযোগেই আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। যা ইতিহাসের নির্মম প্রতিশোধ হিসাবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।

ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মুখে অন্তর্বর্তী সরকার গত ১০ মে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছিলো আওয়ামী লীগ। তবে এবারই প্রথম কোনো দলকে নিষিদ্ধ না করে, তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে শুধুমাত্র মতভিন্নতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগের তিনটি অংশ, পিডিপিসহ কথিত স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী এবং সব ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে। এমনকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অনেক নাগরিকের নাগরিকত্বও বাতিল করা হয়। কারণ, আওয়ামী লীগ সবসময়ই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ভয় পেতো। সঙ্গত কারণেই বিরোধীদের সাথে সহাবস্থানে তারা কখনোই বিশ্বাসী ছিলো না বরং তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উপর দলন-পীড়ন চালিয়েই তাদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করেছে।

আওয়ামী নেতিবাচক রাজনীতির অংশ হিসাবেই ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে একদলীয় শাসন চালু করেন শেখ মুজিব। গঠন করা হয় বাকশাল। এতে তাদের জন্ম পরিচয়ও অস্বীকার করা হয়। কারণ, বাকশাল গঠনের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে তাদের পিতৃ সংগঠন আওয়ামী লীগও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর বাকশালের কার্যক্রমসহ সব রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করা হয় সামরিক আইনে। অবশ্য রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মো. সায়েম ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। এ সময়ে বাকশাল থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত করেন জোহরা তাজউদ্দিনসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। তবে নেতৃত্বের বিরোধে আওয়ামী লীগ (মালেক) এবং আওয়ামী লীগ (মিজান) দু’ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আসার পর আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ভেঙে আবার বাকশাল গঠিত হয়। এর আগে ১৯৭৯ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময় জামায়াতসহ নিষিদ্ধ সব দল রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ পায়। তবে সে বছরই ভোটের রাজনীতিতে ফিরতে পারেনি। জামায়াত নেতারা ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) নামের একটি দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেন।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীকে বিশেষভাবে টার্গেটে পরিণত করেছিলো। কখনো ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ, আবার কখনো কথিত সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দেশের এই বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো বারবার। এমনকি ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের শাসনামলে হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেন। যদিও এ বিচার নিয়ে জনমনে নানাবিধ প্রশ্ন রয়েছে। যা এখন মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। গত বছরের ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াত ও ছাত্রশিবিরিকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করে। মূলত, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন তীব্রতর হয়ে উঠেছিলো তখন জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্যই সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং ৫ দিনের মাথায় তাদেরকে অপমানজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছিলো। একই সাথে দেশ ছাড়া অথবা আত্মগোপনে যেতে হয়েছিলো তাদেরকে। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গত আগস্টের ২৮ তারিখে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ফলে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে জারিকৃত নিষেধাজ্ঞার স্বাভাবিকভাবেই অপমৃত্যু ঘটে। ইতিহাসের নির্মম পরিহাসে দেশে আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রমই এখন নিষিদ্ধ। তারাই এখন দেশান্তরী।

স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধকরণের অপসংস্কৃতি শুরু হয় আওয়ামী লীগের হাত ধরেই। আর এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীকে বিশেষভাবে টার্গেট করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার, মৌলবাদী, উগ্রবাদী ও জঙ্গীবাদীসহ নানা ধরনের ট্যাগ লাগানো হয়। কিন্তু এসবের সবকিছুই ছিলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রীতিমত ষড়যন্ত্রমূলক। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এখন ওই দলটিই নিষিদ্ধের শিকার হলো। অন্তর্বর্তী সরকার গত ১০ মে রাতে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি হয়েছে। সঙ্গত কারণেই নির্বাচন কমিশনে দলের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আওয়ামী লীগ নিজেদের পাতানো ফাঁদে নিজেরাই আটকা পড়েছে। রাজনীতিক মহল ও আইনজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার মতো তিনটি আইন বিদ্যমান রয়েছে। এর দু’টিই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন পাস করেছে। আইন দু’টি হচ্ছে বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯। এ সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মূলত, তারা নিজেদের খোঁড়া গর্তে নিজেরাই আটকা পড়েছে। অবশ্য সম্প্রতি এ আইনে সংশোধনীও এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ আইনে বেশ কয়েকটি দল ও সংগঠন এখনো নিষিদ্ধ রয়েছে। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার মতো আরেকটি আইন হচ্ছে পলিটিক্যাল প্র্যাকটিস অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৮।

ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে একদলীয় শাসন চালু করেন শেখ মুজিব। গঠন করেন বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল)। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর বাকশালের কার্যক্রমসহ সব রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করা হয় সামরিক আইনে। রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মো. সায়েম ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। ওই সময়ে বাকশাল থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত করেন জোহরা তাজউদ্দীনসহ সিনিয়র নেতারা। তবে নেতৃত্বের বিরোধে আওয়ামী লীগ (মালেক) এবং আওয়ামী লীগ (মিজান) দু’ধারায় বিভক্ত হয় দলটি। শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আসার পর আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ভেঙে আবার বাকশাল গঠিত হয়।

আওয়ামী লীগের আমলে সর্বশেষ নিষিদ্ধ হয় জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ছাত্রশিবির। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করে। ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আগস্টেই এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

জামায়াতে ইসলামী শুধু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েই নিষিদ্ধ হয়নি বরং পাকিস্তান আমলে নিষিদ্ধ হয়েছিলো। এ ক্ষেত্রে অজুহাতেরও কোন অভাব হয়নি। তবে শত বাধা-প্রতিবন্ধকতা, জুলুম-নির্যাতন হামলা, হামলা, গণগ্রেফতার ও ফাঁসির দড়ি উপেক্ষা করেই জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, পাকিস্তান সৃষ্টির পর জামায়াতে ইসলামী মূলত ভারত ও পাকিস্তান দু’টি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের শাখা থেকে সৃষ্টি হয়। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খান প্রণীত মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আল্লামা মওদূদীসহ ৬০ জন জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের ১৩ জন জামায়াত নেতা ছিলেন। অধ্যাপক গোলাম আযম তাদের একজন। ঐ বছর অক্টোবরেই আবার নিষেধাজ্ঞা তুলে তদানীন্তন পাক সরকার। মূলত, জামায়াতে ইসলামীকে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই বর্তমান অবস্থায় পৌঁছতে হয়েছে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ।

মূলত স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে চায়নি বা তাদের সে সামর্থও ছিলো না। তাই তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থের মাধ্যমেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করার চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে তারা জামায়াতে ইসলামীকেই বিশেষভাবে টার্গেটে পরিণত করেছে। নানা বায়বীয় অভিযোগ ও অপবিশেষণে বিশেষিত করে দলটিকে বারবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি দলীয় প্রসিকিউশন, সাজানো মামলা, ফরমায়েশি সাক্ষীর মাধ্যমে কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসিকাষ্ঠে শহীদ করা হয়েছে। কিন্তু দলটির অগ্রযাত্রা কোনভাবেই থামানো যায়নি বরং তারা এখন দেশের শীর্ষস্থানীয় ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিহাসে আওয়ামী লীগই এখন দেশছাড়া এবং এক প্রকার নিষিদ্ধই। যা তাদের আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে।

সূত্র, সংগ্রাম