আলহামদুলিল্লাহ, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম ভাইয়ের আপীল মঞ্জুর করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্য প্রমাণিত করে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। অতিসত্তর তিনি আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন ইনশাআল্লাহ।

স্বৈরাচারের সাজানো মিথ্যা মামালায় “একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়” মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম আপিলের রায়ে খালাস পেয়েছেন।

মহান আল্লাহ সর্বশক্তিমান মহান।

রাখে আল্লাহ মারে কে?

যেমন আয়না ঘরে জীবন্ত কবরে বন্দী রেখে ব্যারিস্টার আরমান আর আমান আল আজমী ভাইকে হত্যা করতে পারেনি, তেমনি ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত আজহার ভাইও মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন। মুক্ত বাতাসে আজহার ভাইয়ের মুক্তি রাজনৈতিক অঙ্গনে এক বিস্ময়কর প্রত্যাবর্তন।

ট্যাগের সংস্কৃতি এবার নতুন বাংলাদেশের ইতিহাস লিখতে হবে নতুন করে, ইনশাআল্লাহ।

মহান আল্লাহর ক্ষমতা ও শক্তি কি পরিমাণ হতে পারে তাকি আর প্রমাণ করার প্রয়োজন রয়েছে?

তাঁহার (আল্লাহ) আদেশ শক্তি এইরূপ যে, যখন তিনি কোন কিছু করতে ইচ্ছা করেন, তখন শুধু মাত্র “হও” আদেশ করিলেই তাহা হইয়া যায়। (ইয়াসীন ৮২ নং আঃ)

আজকে এ রায়টি শুনে সবচেয়ে বেশি খুশী হতেন যে মানুষটি, ভাইয়ের প্রিয় সহধর্মিনী। অনেক কষ্টের পাথর বুকে চেপে তিনি আজ দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। বাসা থেকে এরেস্ট হবার পর যে প্রিয়তমার প্রিয় মুখটি দেখে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন আজ বাড়ি ফিরে সে মুখটি ইহ জীবনে আর দেখতে পারবেন না এটাই সবচেয়ে কষ্টকর । দীর্ঘ ১৩টি বছর স্বামী-স্ত্রীর সুখী দাম্পত্য সম্পর্ক ও পরিবার থেকে যারা বঞ্চিত করেছে , ইতিহাসের পথ পরিক্রমায় আজ তারা গণধিকৃত -বিতাড়িত, পলাতক আসামী। এভাবেই মহান আল্লাহ যুগে যুগে তাঁর ওয়াদা সত্যে পরিণত করেন। যদিও আজহার ভাই জীবনের এ ১৩টি বসন্ত আর ফিরে পাবেন না তথাপি তিনি স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি এটাই তার জীবনের পরম পাওয়া। আজহার ভাইয়ের এ রায়ের মাধ্যমে কিছুটা হলেও আমাদের শহীদ নেতৃবৃন্দের শাহাদাতের ব্যাথা কিছুটা হলেও যেন লাঘব হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়ের মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হলো শহীদ নেতৃবৃন্দরা কিভাবে ডিক্টেড রায়ের মাধ্যমে জুডিশিয়াল কিলিং এর শিকার হয়েছিলেন।

মহান আল্লাহ দ্বীনের জন্য আজহার ভাইয়ের এ ত্যাগ কুরবানি কবুল করুন। তার মুক্তির মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলন আরো বেশি বেগবান হবে ইনশআল্লাহ।

মজলুম জননেতা আজহার ভাই কে দীর্ঘ পনের বছর বিনা অপরাধে জেল খাটানোর জন্য উনার আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করছি রাষ্ট্রের কাছে।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে ১৯৭১ নিয়ে মিথ্যা অপবাদের কালিমা থেকে এদেশের ইসলামী রাজনীতি আরেকবার মুক্ত হলো। এর আগে ১৯৯৪ সালে সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের নাগরিকত্ব মামলায় আপীল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছিল ১৯৭১ এর কোন অপরাধ, অন্যায়, অপবাদের কালিমার সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোন সংযোগ, সম্পর্ক ছিল না।

বাংলাদেশের শীর্ষ আদালতে দুইবার এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে ১৯৭১ এ জামায়াতে ইসলামীর কোন নেতাকর্মী ব্যক্তিগতভাবে ও দলীয়ভাবে কোন ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত ছিল না। এখন সবকিছু আদালতের মাধ্যমে প্রমাণিত ও সুস্পষ্ট হয়েছে। তাই ৭১ নিয়ে আর কোন ধরনের হীনমন্যতায় ভোগার কোন ধরনের কারণ নেই।

আলহামদুলিল্লাহ্! কোন জনদুর্ভোগ করে নয় অথবা রাজনৈতিকভাবে সরকারকে চাপ সৃষ্টি করে নয়। দীর্ঘ ১০ মাস আইনি লড়াই এর মাধ্যমে এ বিজয় অর্জিত হয়েছে। মুক্ত বাতাসে ভাইকে স্বাগতম সুস্বাগতম আল কুরআনের সে বানীটিই যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে আজ আকাশে বাতাশে-

‎আর বল, ‘হক এসেছে এবং বাতিল বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় বাতিল বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল’। (বনী ইস্রাঈল-৮১)

সূত্র, সংগ্রাম