বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানোর কথা ভাবছে কানাডা
Share on:
কানাডার সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমানোর কথা ভাবছে। কারণ দেশটিতে আবাসন সংকট হয়েছে। কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মিলার বলেছেন, এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কানাডার অর্থনীতি ও রাজনীতি এই সমস্যার কারণে প্রভাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নাঈম উল হাসান বলেন, এই সিদ্ধান্ত কানাডার জনপ্রিয়তা কমাবে।
বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানোর কথা ভাবছে কানাডা সরকার। আবাসন সংকটের কারণেই মূলত এই চিন্তা করছে দেশটি। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
দেশটির অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মিলারের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডায় বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমানোর কথা ভাবছে সরকার। নাগরিকদের আবাসন ক্রয়ক্ষমতার সংকটের জন্য কানাডার সরকার সম্প্রতি সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে।
গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্ক মিলার বলেন, ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকার এই বছরের প্রথম এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমাবদ্ধ করে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। কানাডায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি বিরক্তিকর। এটি এমন একটি সিস্টেম যা সত্যিই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।’ অবশ্য কানাডা সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ঠিক কতটা কমানোর কথা বিবেচনা করছে তা তিনি বলেননি।
কানাডা তার অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে ও বয়স্ক জনসংখ্যাকে সমর্থন করার জন্য অভিবাসনের ওপর নির্ভর করে থাকে। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বার্ষিক অভিবাসন বাড়াচ্ছেন। তবে আবাসন সংকটের জন্য দেশটিতে অভিবাসী এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়েছে। কারণ মুদ্রাস্ফীতির কারণে উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে বাড়ি নির্মাণ অনেকটাই ধীর হয়ে গেলেও বাড়ির চাহিদা সমানভাবে বেড়েই চলেছে।
এ বিষয়ে ক্যালগেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সে অধ্যায়নরত বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নাঈম উল হাসান এর কাছে জানতে চাইলে, তিনি সমকালকে বলেন, কানাডিয়ান সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের কানাডায় আসাকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলবে । সেইসাথে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম পছন্দ হিসেবে কানাডা থাকলেও এর জনপ্রিয়তা ক্রমশ কমে যাবে বলে আমি মনে করি।
কানাডার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সক্রিয় ভিসাসহ ৮ লাখেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী কানাডায় অবস্থান করছিলেন। ২০১২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার।
ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকার গত বছরের আগস্টে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসার সংখ্যা সীমাবদ্ধ করার কথা প্রথম জানিয়েছিল। কিন্তু সে সময় কানাডার আবাসনমন্ত্রী শন ফ্রেজার বলেছিলেন, সরকার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে কিনা সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
অন্যদিকে ট্রুডোর লিবারেল পার্টি ৮ বছরেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পরে তাদের জনপ্রিয়তা বেশ হ্রাস পেয়েছে। জরিপে পিয়েরে পোইলিভরের নেতৃত্বে বিরোধী রক্ষণশীলরা এগিয়ে রয়েছেন। এছাড়া আবাসন সমস্যা সঠিকভাবে পরিচালনা না করার জন্য সরকারের সমালোচনাও করে থাকে বিরোধীরা।
উল্লেখ্য, কানাডা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। কারণ পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কাজ করা তুলনামূলকভাবে সহজ।