সম্পাদকীয় প্রকাশনার সময়: বুধবার ২৪, জানুয়ারী ২০২৪

চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস

Share on:

সব শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সর্দি-কাশি হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সরকারকেও এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।


দেশে শীত ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করায় ঠান্ডাজনিত রোগব্যাধি বাড়ছে। তবে উদ্বেগজনক লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের।

দেশে করোনার ওমিক্রন ধরনের জেএন.১ উপধরনের সংক্রমণ ঘটতে দেখা যাচ্ছে। এ উপধরনটিতে আক্রান্তদের লক্ষণ প্রকাশের তীব্রতা কম হলেও তা দ্রুত ছড়ায়। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও যাদের কোমরবিডিটি (একসঙ্গে একাধিক রোগ) আছে, তাদের জন্য এটি বড় ঝুঁকি বহন করছে।

পরিতাপের বিষয়, বর্তমানে করোনার নতুন এ উপধরনটি চোখ রাঙালেও রোগটি প্রতিরোধে কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এমন বাস্তবতায় জেএন.১ উপধরনটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, অতি দ্রুত ছড়ানোটাই ভীতির কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও নতুন উপধরনটিকে ‘ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা এর দিকে নজর রাখার মতো ধরন বলে জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩০ জন। সব মিলে দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৪৮১-তে। আর আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৭৮৮। এছাড়া করোনায় এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৪ হাজার ১৭৯ জন।

এ অবস্থায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সর্দি-কাশি হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সরকারকেও এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ যখন কোনো রোগের সংক্রমণ বেশি হয়, তখন স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর প্রভাব পড়ে। রোগী বেশি হলে হাসপাতালগুলোতেও চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে রোগ যাতে বেশি না ছড়ায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।

মনে রাখতে হবে, জেএন.১-এর ঝুঁকি কম থাকলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দেওয়ায় এটি অনেক বেশি কার্যকর। এ কারণে এর সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি হেলাফেলা করা যাবে না। ভাইরোলজিস্ট, চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্যবিদদের পরামর্শ নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। আইইডিসিআরকে ভাইরাসের জিনগত নকশা (জেনোম সিকোয়েন্সিং) উন্মোচনের কাজও বাড়াতে হবে। করোনার নতুন উপধরনটির বৈশিষ্ট্য, ছড়িয়ে পরার শঙ্কার দিক এবং প্রতিরোধের ক্ষেত্রে টিকার কার্যকারিতা ইত্যাদি বিষয়ে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

সূত্র: দৈনিক যুগান্তর