গাছেরাও কথা বলে!
Share on:
গাছেরাও কথা বলে। একে অন্যের খোঁজ নেয়, হুঁশিয়ার করে আসন্ন বিপদ থেকে। আর ধারণা নয়। এই তত্ত্ব এবার প্রমাণিত। রীতিমতো ক্যামেরাবন্দি। এই প্রথম গাছেদের ‘কথা বলা’ ধরা পড়ল ক্যামেরায়। রেকর্ড করলেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
এই বিষয়ে‘সায়েন্স অ্যালার্ট’ জানাচ্ছে, সম্প্রতি জাপানের একদল বিজ্ঞানী এই উদ্ভাবন করেছেন। দলে ছিলেন মলিকিউলার বায়োলজিস্ট থেকে শুরু করে পোস্ট-ডক্টোরাল রিসার্চার, পিএইচডি-রত শিক্ষার্থী প্রভৃতি। জানা গিয়েছে, পরীক্ষার জন্য এই বিজ্ঞানীরা একটি এয়ার পাম্পকে দুটি কৌটোর সঙ্গে যুক্ত করেন। একটিতে ছিল শুঁয়োপোকা আর টমাটো গাছের পাতা। অপরটিতে আরাবিডপসিস থাইল্যাঙ্কা নামে এক ধরনের আগাছাজাতীয় উদ্ভিদ। শুঁয়োপোকাগুলোকে পাতা আর আগাছা খেতে দেন বিজ্ঞানীরা।
অন্যদিকে, আরাবিডপসিস থাইল্যাঙ্কা প্রজাতিরই অন্য একটি আগাছার প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করতে শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। দ্বিতীয়টি ছিল পোকাহীন। পরীক্ষার জন্য একটি বায়োসেন্সর ব্যবহার করা হয়েছিল। দেখা যায়, তার সবুজ আলো জ্বলে উঠেছে। পাশাপাশি সেন্সরে ধরা পড়েছে ক্যালসিয়াম আয়নের অস্তিত্বও।
প্রসঙ্গত, মানব কোষ সংযোগের মাধ্যম হিসাবে ক্যালসিয়াম আয়নকেই ব্যবহার করে থাকে। বিজ্ঞানীদের দলটি ‘গাছেদের কথা বলার’ যে ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে, তাতে পোকাহীন, দ্বিতীয় গাছটির, প্রথম এবং ‘আহত’ (যেহেতু শুঁয়োপোকা সেটি খেয়েছে) গাছটির থেকে বিপদ সংকেত পেয়েছে। তার প্রমাণ, বার্তা পাওয়ামাত্রই সেন্সরের সবুজ হয়ে জ্বলে ওঠা এবং ক্যালসিয়াম আয়নের অস্তিত্ব ধরা পড়া।
বিজ্ঞানীদের দাবি, যে সব গাছ কীটপতঙ্গ বা অন্য কিছুর দ্বারা আক্রান্ত হয়, তারা বাতাসে ‘ভিওসি’ তথা ‘ভোলাটাইল অরগ্যানিক কম্পাউন্ড’ নিঃসরণ করে। সুস্থ, প্রতিবেশী গাছটি সেই ‘ভিওসি’ গ্রহণ করে সতর্ক হয়। এটাই গাছেদের আন্তঃসংযোগ। এটাই তাদের ‘কথা বলা’। যা প্রথমবার ক্যামেরাবন্দি করলেন জাপানী বিজ্ঞানীরা।