সম্পাদকীয় প্রকাশনার সময়: শুক্রবার ১৯, জানুয়ারী ২০২৪

ডলার সংকট নিয়ে সতর্কবার্তা

Share on:

বিদ্যমান ডলার সংকট মোকাবিলা এবং বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। তবে আশু পদক্ষেপ হিসাবে ডলার সংকট কাটাতে রপ্তানি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।


দেশে ডলার সংকটের কারণে চলতি অর্থবছরে আমদানিতে বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকবে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে এর প্রভাব পড়বে। ফলে চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার কমবে। মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, দেশের প্রবৃদ্ধির হার আটকে থাকবে ডলার সংকটের কারণে। ধারণা করা হচ্ছে, ডলার সংকটে আমদানি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘ সময় সক্রিয় থাকবে। এদিকে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় চলতি বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়নের নিচে নামতে দেওয়া হবে না। নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও গতিশীল রাখতে সরকারকে অর্থনীতির সম্ভাবনাময় খাতগুলো উন্মোচন করতে হবে। রাজস্ব সংগ্রহে আরও জোর দিতে হবে। ডলার সংকট অব্যাহত থাকলে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর ও ডিসেম্বরের আমদানি বিল বাবদ ১২৭ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, রিজার্ভ ২০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। জানা যায়, বিদায়ি বছরজুড়ে ডলার সংকটের পাশাপাশি রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম ছিল। ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমেছে। প্রকট ডলার সংকটের কারণে বিদায়ি বছরজুড়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভোগ্যপণ্যের আমদানিতেও। নতুন সরকারের সামনে বড় এক চ্যালেঞ্জ উচ্চ মূল্যস্ফীতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় অধিকাংশ পণ্য বর্তমানে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। কাজেই নতুন সরকারকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের বাধা দূর করার পদক্ষেপও নিতে হবে।

জানা যায়, বিদ্যমান ডলার সংকট মোকাবিলা এবং বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। তবে আশু পদক্ষেপ হিসাবে ডলার সংকট কাটাতে রপ্তানি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির ওপরও গুরুত্ব বাড়াতে হবে। প্রবাসীরা যাতে তাদের উপার্জিত অর্থ বৈধপথে দেশে প্রেরণ করেন, সে বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। অর্থ পাচার ও হুন্ডি রোধে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ।

সূত্র: দৈনিক যুগান্তর

তারিখ: ১১ জানুয়ারি ২০২৪