এসডিজি বাস্তবায়ন চিত্র
Share on:
এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বহু ঝুঁকি ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেসব মোকাবিলায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। বস্তুত এসডিজি বাস্তবায়নে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা দরকার।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সূচকে এখনো পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ; উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সূচকের অগ্রগতি সন্তোষজনক; বেশকিছু সূচকের লক্ষ্য ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে। এছাড়া উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সূচক মূল্যায়নে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনটি ২০২২ সাল পর্যন্ত মূল্যায়নের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক নতুন ইস্যুর সৃষ্টি হয়। বস্তুত এলডিসি থেকে উত্তরণ, মহামারি, বারবার সংঘটিত আন্তর্জাতিক সংকট এসডিজির অগ্রগতি শ্লথ করেছে। নানা বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে রয়েছে, এটি আশাব্যঞ্জক। তবে এসডিজির কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে হলে পিছিয়ে থাকা সূচকগুলোয় বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।
জানা যায়, এসডিজির ১৭টি অভীষ্টের মধ্যে অভীষ্ট-১-এর একটি সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এছাড়া কয়েকটি সূচকের অগ্রগতি সন্তোষজনক, কয়েকটি সূচকের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি রয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে একটি সূচকের। অভীষ্ট-২-এর ক্ষেত্রে কয়েকটি সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ; কয়েকটি সূচকের অগ্রগতি সন্তোষজনক, হালনাগাদ তথ্য-উপাত্তে ঘাটতি আছে দুটি সূচকের এবং লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে একটি সূচকের। অভীষ্ট ৩, ৪ ও ৫-এর প্রতিটি ক্ষেত্রে কয়েকটি সূচকের অগ্রগতি সন্তোষজনক; কয়েকটি সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। অভীষ্ট-৭ এর ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই একটিও, কয়েকটি সূচকের অগ্রগতি সন্তোষজনক এবং লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে একটি সূচকের। অভীষ্ট-৮ থেকে অভীষ্ট-১৭ পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই কয়েকটি সূচকের অগ্রগতি সন্তোষজনক, কোনো কোনো সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ; এছাড়া রয়েছে হালনাগাদ তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি।
বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে চরম দারিদ্র্য দূর করার অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমাদের মতো আমদানিনির্ভর দেশগুলোতে এসডিজির বহু লক্ষ্য অর্জনে নানাবিধ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এসব সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।
আমাদের দেশে এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বহু ঝুঁকি ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেসব মোকাবিলায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। বস্তুত এসডিজি বাস্তবায়নে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা দরকার। রপ্তানি যাতে অব্যাহত বৃদ্ধি পায়, তার পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে রেমিট্যান্স প্রবাহ ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ খাত চাঙা করার জন্যও নিতে হবে পদক্ষেপ। দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে স্বাস্থ্য খাতের সমস্যাগুলোর সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষার মান বাড়ানোর লক্ষ্য অর্জনে সংকট তৈরি হলে এসডিজি বাস্তবায়নে ঝুঁকি বাড়তে পারে।
সূত্র: দৈনিক যুগান্তর
তারিখ: ১২ জানুয়ারি ২০২৪