সম্পাদকীয় প্রকাশনার সময়: শুক্রবার ১৯, জানুয়ারী ২০২৪

চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠোর হতে হবে

Share on:

বিগত সময়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা নানা পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেও বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেননি। তাই নবগঠিত সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে দেশবাসী। বাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কর্তৃপক্ষকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।


পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও ৩ মাস ধরে ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়েছে চালের দাম। সবার ধারণা ছিল আমন ধানের চাল বাজারে এলেই দাম কমবে। কিন্তু আমন ওঠার পরও দাম কমেনি। বরং মিল পর্যায় থেকে সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ৩০০ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে পাইকারি বাজারে হুহু করে বেড়েছে দাম। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। এতে ক্রেতা প্রতি কেজি চাল ২ থেকে ৫ টাকা বাড়তি দরে কিনছেন। গত বছরও দেশে একই প্রবণতা লক্ষ করা গছে। মজুত ও সরবরাহে ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও কেন কিছুদিন পরপর চালের বাজার অস্থির হয় উঠে এ প্রশ্নের জবাব মিলে না। কারসাজি করে কীভাবে চালর বাজারে অস্থির করা হয় তা বহুল আলোচিত। প্রশ্ন হলো, যারা কারসাজি করে কর্তৃপক্ষ তাদের বিষয়ে শৈথিল্য প্রদর্শন করছে কেন? শুধু চাল নয়, গত কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের বাজারেই অস্থিরতা চলছে। জানা গেছে, বছরের শুরুতে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। টিসিবির হিসাবেই রাজধানীর বাজারে ৮ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোটা চাল, প্যাকেটজাত আটা, ময়দা, মসুর ও মুগ ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ ৪ ধরনের মসলা ও ব্রয়লার মুরগি-এ ১৩টি পণ্যের দাম বেড়েছে; কোনো ক্ষেত্রে ২ টাকা, কোনো ক্ষেত্রে ৫০ টাকা। এ বছর শীতকালীন সবজির দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।

বাজারে শৃঙ্খলা নষ্ট হলে পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়তে পারে। সম্প্রতি আলু ও ডিম ব্যবসায়ীরা যখন অস্বাভাবিক মুনাফা করেছে, তখন পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরাও বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এর প্রভাব পড়েছে সবজি বাজারেও। এ বছর আলুর বাজারে যে অস্থিরতা বিরাজ করেছে এটা ছিল নজিরবিহীন। বলা যায়, সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের বাজারব্যবস্থা। বাজারে সিন্ডিকেটের কারসাজি চলছে, অসৎ ব্যবসায়ীরা অসাধু পন্থা অবলম্বন করে অতি মুনাফা লুটছে-এসব কি দেখার কেউ নেই?

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রবেশের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখা হবে প্রধান অগ্রাধিকার কাজ। বিগত সময়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা নানা পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেও বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেননি। তাই নবগঠিত সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে দেশবাসী। বাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কর্তৃপক্ষকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।