‘স্যার’ সংস্কৃতি পরিবর্তনের উপযুক্ত সময় এখনই
Share on:
শিক্ষার্থীদের সংস্কার আন্দোলন থেকে ঘটনাক্রমে সরকার পতনের পর দেশের মানুষ রাষ্ট্র এবং এর নীতিকানুনের সংস্কার নিয়ে ভাবছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংকার এমনই একটি সামাজিক সমস্যাকে চিহ্নিত করেছেন।
তিনি জটিলতাটিকে ‘স্যার সংস্কৃতি’ নামে চিহ্নিত করে একটি মতামত দিয়েছেন। বণিক বার্তার পাঠকের জন্য তার মতামতটি তুলে ধরা হলো—
‘সমাজে বৈষম্য দূরীকরণে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন প্রয়োজন। হয়তো ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসবে। বড় বড় পরিবর্তনের পাশাপাশি ছোট ছোট অনেক পরিবর্তনও জরুরি।
আমার দৃষ্টিতে এরূপ একটি প্রয়োজন — ‘স্যার সংস্কৃতির’ পরিবর্তন। সরকারের বিভিন্ন সেবাদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়োজিত লোকজন (সচিবালয়, বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, আয়কর কর্তৃপক্ষ, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ইত্যাদি) সবসময়ই সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে স্যার সম্বোধন আশা করেন। অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আশাই করে না, স্যার সম্বোধন না করায় অনেক অপ্রীতিকর ঘটনারও নজির আছে। সেবাগ্রহীতা যখনই সেবাদাতাকে স্যার সম্বোধন করে, সেবাদাতা তখনই নিজেকে সুপিরিয়র ভেবে নেন।
আমার মনে হয়, আমরা যদি এই ‘স্যার সংস্কৃতি’ থেকে বের হয়ে আসতে পারি তাহলে সেবাগ্রহীতার সঙ্গে সেবাদাতার অর্থাৎ এই স্যার শ্রেণীর লোকদের মানসিক দূরত্ব কিছুটা হলেও কমতে পারে।
স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যতীত কোনো অফিস-আদালতে কেউ কাউকে স্যার সম্বোধন করতে পারবে না— এই বিষয়টি যদি আইন করে দেয়া হয় তাহলে সমাজের তথাকথিত সুপিরিয়র শ্রেণীর যে সংস্কৃতি রয়েছে সেখানে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।
আমি মনে করি, এই স্যার সংস্কৃতি পরিবর্তনের এখনই উত্তম সময়। এই বিষয়ে আইন করার উদ্যোগ নেয়া হলে বিভিন্ন পক্ষ থেকে বাধা আসার সম্ভাবনা থাকলেও এখনকার পরিস্থিতিতে কোনো পক্ষ থেকে বাধা আসার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হয়।