পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দানে আল্লাহর সুন্নাত
Share on:
এই বিশ্বজাহান পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহপাকের একটি নিয়ম রয়েছে কিন্তু তিনি নিজে সেই নিয়মের অধীন নন। আল্লাহপাক সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তিনি যা ইচ্ছা করেন সেটিই ঘটে। শুধু বলেন, হও-তাৎক্ষণিক হয়ে যায় এবং এই বিশ্বে সাগর-মহাসাগর, গ্রহ-নক্ষত্র ও সকল সৃষ্টি আল্লাহর ইচ্ছার প্রকাশ। সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর দেয়া নিয়মের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এই অর্থে সবাই মুসলিম।
কিন্তু মানুষ ব্যতিক্রম। আল্লাহপাক আদম (আ.)-কে মাটি থেকে সৃষ্টি করে একটি অবয়ব দানের পর নিজ থেকে রুহ ফুঁকে দেন। মানুষ মূলত আল্লাহর গোলাম ও প্রতিনিধি (খলিফা)। মহান আল্লাহপাকের যেসব গুণ ও ক্ষমতা রয়েছে তার অতি ক্ষুদ্র অংশ মানুষকে দান করেছেন যাতে মানুষ আল্লাহ তায়ালার যথার্থ প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। এজন্য বলা হয়েছে, তোমরা আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হও, আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হও। আল্লাহ আল মালিক এবং মানুষ হবে আব্দুল মালিক যার কাজ হবে সুশাসন কায়েম করা। আবার আল্লাহ হলেন আল হাকিম এবং মানুষ আব্দুল হাকিম হয়ে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত করবে।
মানুষ ফেরেশতা নন যার কাজ কেবল আল্লাহর গোলামি করা বরং তার চেয়েও বড়ো। মানুষ নিজে আল্লাহর গোলামি করবে এবং সেই সাথে সকলে যাতে স্বাচ্ছন্দে আল্লাহর গোলামি করতে পারে সে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা তার মৌলিক কাজ। আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করার পর ফেরেশতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদমকে সেজদা করার জন্য। ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করেছিলেন। আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার ফলে সে অভিশপ্ত ও লাঞ্ছিত হয় এবং সে আল্লাহর কাছে হায়াত ও সুযোগ চায় যাতে সে তার শত্রু মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। আল্লাহপাক তাকে সুযোগ দেন এবং এখানেই মানুষের পরীক্ষা। আল্লাহপাক মানুষকে সকল সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, সে শয়তানের সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত নস্যাৎ করে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর গোলামি করবে ও তাগুতকে অস্বীকার করবে।
আদম (আ.) পৃথিবীতে চলে আসার সময় স্বাভাবিকভাবে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন এবং সেসময়ে আল্লাহপাক তাঁকে অভয়বাণী শুনিয়েছিলেন, ‘আমরা বললাম, তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও। এরপর যখন আমার পক্ষ থেকে কোনো হেদায়াত তোমাদের কাছে পৌঁছবে তখন যারা আমার সেসব হেদায়াত অনুসরণ করবে তাদের কোনো ভয় ও দুঃখ থাকবে না’-সুরা বাকারা ৩৮। আদম (আ.) ছিলেন প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী এবং যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রসুলের আগমন ঘটেছে। শেষ নবি হলেন প্রিয়তম নবি মুহাম্মদ (সা.)। সকল নবী ও রসুলের দাওয়াত ছিল অভিন্ন-‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। ভিন্নভাবে বলা যায়, ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাগুতকে অস্বীকার করো’-সুরা নহল ৩৬। এই কালিমা তাইয়্যেবা স্রেফ একটি বাক্য নয়, এ এক বিপ্লবাত্মক ঘোষণা, এক পলিটিকাল স্লোগান। এই কালিমা যখনই কোনো নবি-রসুল তাঁর জাতির কাছে ঘোষণা করেছেন তখনই শাসকবর্গ ও তাদের উচ্ছিষ্টভোগীরা প্রচ-ভাবে বিরোধিতা করেছে এবং এটিই স্বাভাবিক। আজও যারা তাগুতকে অস্বীকার করে একনিষ্ঠভাবে কেবল আল্লাহকে মানতে চায় তাগুতের পক্ষ থেকে বাধা আসবেই। দেশে দেশে ইসলামপন্থীদের উপর স্বৈরশাসকদের বাধা ও জুলুম-নির্যাতন তা কুরআনে বর্ণিত অতীতকালে নবী-রসুল ও তাঁদের সঙ্গী-সাথিদের সাথে যা করা হয়েছে তারই ধারাবাহিকতা।
সকল নবী-রসুল ও তাঁদের অনুসারী ঈমানদার জনগোষ্ঠীর মৌলিক দায়িত্ব হলো দ্বীন কায়েম করা এবং এরই মধ্য দিয়ে প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন সম্ভব। আল্লাহর বাণী, “তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের সেসব নিয়ম-কানুন নির্ধারিত করেছেন যার নির্দেশ তিনি নুহকে দিয়েছিলেন এবং (হে মুহাম্মদ) যা এখন আমি তোমার কাছে ওহির মাধ্যমে পাঠিয়েছি। আর যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহিম, মুসা ও ইসাকে। তার সাথে তাগিদ করেছিলাম এই বলে যে, দ্বীন কায়েম করো এবং এ ব্যাপারে মতপার্থক্য সৃষ্টি করো না’-সুরা শুরা ১৩। দীন কায়েমের প্রশ্নে কোনো মতপার্থক্য আল্লাহপাক মেনে নেবেন না। হ্যাঁ, প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। দীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যেই মূলত রসুল (সা.)-এর সকল কর্ম-প্রচেষ্টা এবং আল্লাহর ঘোষণাও তাই। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কুরআন মজিদে তিন জায়গায় সুরা তাওবা (৩৩ নং), সুরা ফাতাহ্ (২৮ নং) ও সুরা সফে (৯ নং) উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর বাণী, ‘তিনি আপন রসুলকে হেদায়াত ও সঠিক জীবনব্যবস্থা (দীনে হক) দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে সকল জীবনব্যবস্থার ওপর একে বিজয়ী করে দিতে পারেন, মুশরিকদের কাছে তা যতই অসহনীয় হোক’-সুরা সফ ৯।
দ্বীন কায়েমের এই চেষ্টা-প্রচেষ্টার নামই হলো জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। মৌলিক ইবাদতসমূহের (নামায, জাকাত, রোজা, হজ্ব) মূল লক্ষ্যই হলো জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য প্রস্তুত করা। এজন্য রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নামায হলো দ্বীনের ভিত্তি এবং এর চূড়া হলো জিহাদ। জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজকে আল্লাহপাক ব্যবসা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রতি ঈমান আনা ও জান-মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার মধ্যেই রয়েছে সর্বোত্তম কল্যাণ এবং যারা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর কাজে আত্মনিয়োগ করবে তাদের সকল গুনাহ মাফ ও এমন জান্নাত দেবেন যার নিচ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত। একজন মুমিনের জন্য এটিই সবচেয়ে বড়ো সফলতা। আল্লাহপাক বাড়তি দেবেন যা মুমিনরা খুবই আকাক্সক্ষা করেন-তা হলো আল্লাহর সাহায্য ও নিকটবর্তী বিজয় (সুরা সফ ১০-১৩)। রসুলুল্লাহ (সা.) যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে যাচ্ছেন সে সময়ে আল্লাহ তাঁকে দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন, ‘তুমি বলো, হে আমার রব (যেখানেই নিয়ে যাও), তুমি আমাকে সত্যের সাথে নিয়ে যেও এবং (যেখান থেকেই বের করো সত্যের সাথে বের করো এবং তোমার কাছ থেকে আমার জন্য একটি সাহায্যকারী রাষ্ট্রশক্তি দান করো”-সুরা বনি ইসরাইল ৮০। আল্লাহপাক চান, তাঁর বান্দারা তাগুতকে অস্বীকার করে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর আনুগত্য করবে। আল্লাহপাকের বাণী, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা পুরোপুরি ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না; নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন’-সুরা বাকারা ২০৮। এটি স্পষ্ট যে, জমিনে দ্বীন কায়েম ছাড়া পুরোপুরি ইসলাম মানা যায় না। দ্বীনের কিছু অংশ মানা এবং কিছু অমান্য করা কালিমা তাইয়্যেবার দাবির সাথে সাংঘর্ষিক। এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাক বলেছেন, “তোমরা কি দ্বীনের কিছু অংশ মানবে এবং কিছু অংশ অমান্য করবে, তাহলে দুনিয়ার জীবনে রয়েছে জিল্লতি ও আখিরাতে রয়েছে ভয়াবহ আজাব’-সুরা বাকারা ৮৫। আজ মুসলমানদের জীবনে জিল্লতির পেছনে মূল কারণ জমিনে দীন প্রতিষ্ঠিত না থাকা।
প্রাণান্ত প্রচেষ্টা ছাড়া দ্বীন কায়েম সম্ভব নয় এবং দ্বীনের বিজয় একান্তভাবে আল্লাহপাকের মর্জির উপর নির্ভরশীল। তাই প্রচেষ্টার সাথে আল্লাহর কাছে কাতরভাবে দোয়া করতে হবে এবং নামায-রোজা, জিকির-আজকার ও আল্লাহর পথে ব্যয়ের মধ্য দিয়ে তাঁর সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। জিহাদবিমুখ জীবন মুসলমানদের জীবন নয়। নবী মুহাম্মদ (সা.) জিহাদকে ঈমানের সাথে সম্পর্কিত করেছেন। তিনি বলেছেন, যে লোক মারা গেল অথচ না জিহাদ করলো আর না জিহাদের বাসনা অন্তরে পোষণ করলো তার মৃত্যু হলো মুনাফিকের মৃত্যু।
এইতো শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে সকল মজলুম সাড়া দেয়ায় আল্লাহপাক স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছেন। এই আন্দোলনে মজলুমদের বিজয় মূলত ছয় শতাধিক লোকের আত্মদান ও অসংখ্য ছাত্র-জনতার পঙ্গুত্ববরণের বিনিময়ের ফসল। এটিই আল্লাহপাকের সুন্নাত। কিছু বান্দার প্রচেষ্টা ও অধিকাংশের সমর্থন থাকলে আল্লাহ তায়ালা তাদের সাহায্য করেন। মানুষের সকল প্রচেষ্ট ব্যর্থ হতে পারে যদি তাতে সমর্থন না থাকে। তাঁর বাণী, ‘বলো, হে আল্লাহ! তুমি রাজত্বের মালিক, যাকে চাও রাজত্ব দান করো, আর যার থেকে চাও রাজত্ব কেড়ে নাও এবং যাকে চাও সম্মান দান করো। আর যাকে চাও অপমানিত করো, তোমার হাতেই কল্যাণ, নিশ্চয়ই তুমি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান’-সুরা আলে ইমরান ২৬। সমাজে সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন চলতে থাকলে এবং মজলুমের প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ক্ষমতা জালেম ধ্বংস করে দিলে আল্লাহপাকের দায়িত্ব হয়ে পড়ে মজলুমের পক্ষ অবলম্বন করা। তাঁর বাণী, ‘আমি সংকল্প করেছিলাম, যাদেরকে পৃথিবীতে লাঞ্ছিত করে রাখা হয়েছিল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবো, তাদেরকে নেতৃত্ব দান করবো, তাদেরকে উত্তরাধিকার করবো এবং পৃথিবীতে তাদেরকে কর্তৃত্ব দান করবো’-সুরা ক্বাসাস ৫-৬। তিনি আরো বলেছেন, “যদি আল্লাহ লোকদেরকে একের মাধ্যমে অন্যকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা না করতেন, তাহলে যেখানে আল্লাহর নাম বেশি করে উচ্চারণ করা হয় সেসব আশ্রমে, গির্জা, ইবাদতখানা ও মসজিদ ধ্বংস করে দেয়া হতো। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন যারা এঁকে সাহায্য করবে। আল্লাহ বড়ই শক্তিশালী ও পরাক্রান্ত’-সুরা হজ্ব ৪০।
এবারের এ বিজয় পরিপূর্ণ ইসলামের বিজয় নয়। বরং এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে ইসলাম কায়েমের পথকে আল্লাহ তায়ালা প্রশস্ত করে দিয়েছেন। আল্লাহর দেয়া এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এখন প্রয়োজন ইসলামপন্থী সকলের ঐক্য এবং ব্যাপকভাবে মানুষের কাছে দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। এই দাওয়াত হতে হবে জনকল্যাণমূলক কাজের মধ্য দিয়ে। ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-ভাষা নির্বিশেষে মানুষকে সম্মান প্রদান, তাদের কল্যাণ সাধন আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সা.)-এরই নির্দেশ। আল্লাহপাকের বাণী, ‘তোমরা সর্বোত্তম দল। তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানব জাতির কল্যাণ সাধনের জন্য। তোমরা ভালো কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজে নিষেধ করবে’-সুরা আলে ইমরান ১১০। ইসলামী রাষ্ট্র বলতে বোঝায় কল্যাণমূলক সমাজ, এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না, থাকবে না শোষণ-বঞ্চনা। প্রতি জুমায় খতিব ময়োদয় তেলাওয়াত করেন, আল্লাহ ন্যায়-নীতি, পরোপকার ও আত্মীয়-স্বজনদের দান করার হুকুম দেন এবং অশ্লীল-নির্লজ্জতা ও দুষ্কৃতি এবং অত্যাচার-বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষালাভ করতে পারো’-সুরা নহল ৯০। তিনি আরো বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! ইনসাফের পতাকাবাহী ও আল্লাহর সাক্ষী হয়ে যাও, তোমাদের ইনসাফ ও সাক্ষ্য তোমাদের নিজেদের ব্যক্তিসত্তার অথবা তোমাদের বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনদের বিরুদ্ধে গেলেও।
উভয় পক্ষ ধনী বা অভাবী যাই হোক না কেন আল্লাহ তাদের চাইতে অনেক বেশি কল্যাণকামী। কাজেই নিজেদের কামনার বশবর্তী হয়ে ইনসাফ থেকে বিরত থেকো না। আর যদি তোমরা পেঁচালো কথা বলো অথবা সত্যতাকে পাশ কাটিয়ে চলো, তাহলে জেনে রাখো, তোমরা যা কিছু করছো আল্লাহ তার খবর রাখেন’-সুরা নিসা ১৩৫। ইনসাফ ও সুবিচারের কথা বারবার উচ্চারিত হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! সত্যের ওপর স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত ও ইনসাফের সাক্ষ্যদাতা হয়ে যাও। কোনো দলের শত্রুতা তোমাদেরকে যেন এমন উত্তেজিত না করে দেয়, যার ফলে তোমরা ইনসাফ থেকে সরে যাও। ইনসাফ ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠিত করো। এটা আল্লাহভীতির সাথে বেশি সামঞ্জস্যশীল। আল্লাহকে ভয় করে কাজ করতে থাকো। তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ সে সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত আছেন’-সুরা মায়েদা ০৮।
বিচার-মীমাংসার ক্ষেত্রেও ইনসাফের পরিচয় দিতে হবে। আল্লাহর বাণী, ‘আর মীমাংসা করে দিলে যথার্থ ইনসাফ সহকারে মীমাংসা করো। কারণ আল্লাহ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন’-সুরা মায়েদা ৪২। শাসককে হতে হবে ন্যায়পরায়ণ এবং প্রতিশোধপরায়ণ নয়, সকলের সাথে ইনসাফপূর্ণ ব্যবহার করতে হবে। ইনসাফকারী শাসকের মর্যাদা আল্লাহর কাছে অতি উচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হাশরের ময়দানে যখন আল্লাহর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো আশ্রয় থাকবে না সেই কঠিন মুহূর্তে আরশের ছায়ার নিচে আশ্রয়প্রাপ্তদের মধ্যে অন্যতম হবেন ন্যায়পরায়ণ শাসক ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী বিচারক’। আবার তিনি হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেন এ বলে ‘যে শাসক জালেম ও খেয়ানতকারী হিসেবে মৃত্যুবরণ করবে, আল্লাহ অবশ্যই তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন’। (চলবে)