দুর্যোগের ক্ষত এখনো শুকায়নি, মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ নিন
Share on:
সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার শিকার হলো দেশের পূর্বাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। এখনো সেই দুর্যোগের ঘা শুকায়নি। এর মধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা, কক্সবাজার জেলা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু উপজেলা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়েছে।
সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে সেসব এলাকায় ভারী বর্ষণ চলছে। টানা ১২ ঘণ্টার বর্ষণে কক্সবাজারের পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। সেখানে পাহাড়ধসে ইতিমধ্যে ছয়জন নিহত হয়েছেন। জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে প্রায় পুরো জেলা শহর। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদেরা সতর্কতা দিয়েছেন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা ১২ ঘণ্টার ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের পুরো শহর অনেকটা অচল হয়ে গেছে। শহরের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। এমন ভারী বর্ষণ গত ৫০ বছরে দেখেননি স্থানীয় বাসিন্দারা। আর টানা ভারী বর্ষণে জেলাটিতে পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা নতুন নয়। এবারের বর্ষণেও এখন পর্যন্ত ছয়জন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন শহরতলির ঝিলংজার দক্ষিণ ডিককুল এলাকার বাসিন্দা ও তিনজন উখিয়া রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে শিশুও। ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
পাহাড়ি ঢলের পানিতে পাহাড়তলীর তিনটি সড়ক ডুবে কয়েক শ ঘরবাড়ি ও পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। নারী-শিশুরা চরম দুর্ভোগ আছেন। কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, অপরিকল্পিত সড়ক উন্নয়ন, ঠিকমতো নালা পরিষ্কার না করা এবং শহরের পাহাড় নিধন বন্ধ না হওয়ায় এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পৌরসভার মেয়রসহ অধিকাংশ কাউন্সিলর আত্মগোপনে যান। ফলে শহরের ময়লা-আবর্জনায় নালা-নর্দমা ভরে আছে। ভারী বর্ষণ ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানি নালা দিয়ে নেমে যেতে পারছে না বলেই শহরজুড়ে এমন জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়দের অনেকে মনে করছেন। তবে কক্সবাজারের জলাবদ্ধতা সমস্যা ও পাহাড়ধস নতুন নয়। দিন দিন জলাবদ্ধতার ব্যাপকতা ও পাহাড়ধসে প্রাণহানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জেলা শহরটির এসব সমস্যা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নতুন করে ভাবতে হবে এবং সে অনুযায়ী টেকসই পদক্ষেপ নিতে হবে।