একটি উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতির আকার বাড়াতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে এফডিআই। তবে দেশে এ বিনিয়োগ আকর্ষণ করার মতো খাত থাকা জরুরি। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি এফডিআই এসেছে পোশাক শিল্প, গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাত, টেলিযোগাযোগ এবং আর্থিক খাতে।
বাংলাদেশের শীর্ষ বিনিয়োগকারী দেশগুলোর অন্যতম চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও মালয়েশিয়া। নতুন সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে সফটওয়্যার শিল্প তুলনামূলকভাবে ছোট খাত। তবে এ খাত এখন দেশের অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা দেশটির জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে এবং হাজার হাজার আইটি পেশাদারদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে। দুই দশক ধরে বাংলাদেশের সফটওয়্যার শিল্প উল্লেখযোগ্যভাবে প্রবৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে।
এটি সত্যি যে প্রথম দিকে বাংলাদেশি সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা না থাকায় বাংলাদেশের সফটওয়্যার বাজারের একটি বড় অংশ বিদেশি কোম্পানিগুলোর দখলে চলে যায়। বর্তমানে দেশীয় কোম্পানিগুলোও এই বাজারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে। তবে দুঃখের বিষয় এখনো বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সফটওয়্যার কেনায় বিদেশি কোম্পানিগুলো প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ফলে দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে। এর পেছনে অবশ্য কারণও ছিল।
অনেক সময় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সফটওয়্যার ক্রয়ের দরপত্রে এমন কিছু শর্ত দেয় যা দেশীয় কোম্পানিগুলোর পক্ষে পূরণ করা কঠিন। ফলে বিদেশি কোম্পানিগুলো প্রাধান্য পায়। দেশীয় কোম্পানিগুলোর কাছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও বড় ধরনের আর্থিক বিনিয়োগের অভাব থাকাতে বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে সক্ষম নয়। বিদেশি কোম্পানিগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও ব্র্যান্ড ভ্যালুর কারণে দেশীয় বাজারেও সুবিধা পায়। ফলে দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর বৃদ্ধি ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারের ফলে দেশের সফটওয়্যার খাতে খরচ বৃদ্ধি পায়, যা দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
সাধারণত বিদেশ থেকে সব ধরনের কোম্পানির সফটওয়্যার আমদানি করা হয়। কিন্তু এসব সফটওয়্যার ব্যবহারে রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকি। কারণ আমদানীকৃত অনেক নামিদামি কোম্পানির সফটওয়্যারেই সোর্স কোড থাকে না। এতে সফটওয়্যারে কোনো জটিলতা দেখা দিলে বা কাজের প্রয়োজনে এটি সংশোধন বা পরিবর্ধন করতে হলে সংশ্লিষ্টদের ওই কোম্পানির স্মরণাপন্ন হওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প থাকে না। আর নামহীন কোম্পানি হলে ভোগান্তি আরও বাড়ে।
মূল কথা হলো, এ নিয়ে সময় ও অর্থ দুই-ই অপচয় হচ্ছে। বাংলাদেশের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রকল্পে ২০১১ সালে ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স চালু করে বিআরটিএ। প্রথম ৫ বছরের চুক্তিতে ১১ লাখ স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড সরবরাহের দায়িত্ব পায় টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি দেশব্যাপী লাইসেন্স নিবন্ধনের কাজে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে ১১ লাখেরও বেশি ভোটার তথ্য সংগ্রহ ও ডাটাবেজ তৈরি করে তা বিআরটিএর সিস্টেমের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন করে।
দেশীয় কোম্পানি টাইগার আইটি কর্তৃক আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স সিস্টেমে দ্রুত সময়ের মধ্যে আঙুলের ছাপের আইডেন্টিফিকেশন, ডি-ডুপ্লিকেশন, ভেরিফিকেশন সম্পন্ন বাংলাদেশের সফটওয়্যার শিল্পে সক্ষমতার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রথম ৫ বছরের সফল সমাপ্তির পর ২০১৬ সালে বিআরটিএর সাথে পুনরায় ৫ বছরের চুক্তিতে ১৫ লাখ স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড সরবরাহের দায়িত্ব পায় টাইগার আইটি। ২০১৯ সালের মধ্যেই ১৪,৩৪,১৮৪টি কার্ড সরবরাহ করে চুক্তির কোটার প্রায় সমপরিমাণ পূরণ করে ফেলে।
ছাত্র আন্দোলনের কারণে হঠাৎ কার্ড চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও স্বল্প সময়ে বিআরটিএকে সরবরাহ করে তাদের দক্ষতা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। কিন্তু হঠাৎই মাঝপথে এর ছন্দপতন ঘটে। পতিত আওয়ামী সরকারের কোন এক ব্যক্তির স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বাইরের ভারতীয় কোম্পানি মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্সের (গঝচ) মতো বিদেশি কোম্পানিকে সুযোগ দেওয়ায় জন্য টাইগার আইটিকে অযৌক্তিকভাবে বাদ দেয় বিআরটিএ।
টাইগার আইটির সঙ্গে প্রকল্প শেষের পূর্বেই ২০২০ সালে বিআরটিএ গঝচ-কে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বার বার দরপত্রের শর্ত পরিবর্তন করে এবং এর মাধ্যমে গঝচ ১২০ কোটি টাকার চুক্তিতে ৫ বছরে ৪০ লাখ স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের দায়িত্ব পায় তারা।
(গঝচ) এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার বিরুদ্ধে একাধিক দেশে অনিয়ম, দুর্নীতি, তথ্য পাচার ও ব্যর্থ প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিযোগ রয়েছে। খোদ ভারতে আধার কার্ড প্রকল্পে নাগরিকের তথ্য বিক্রির অভিযোগে আজীবন নিষিদ্ধ এই প্রতিষ্ঠান। কেনিয়ায় গঝচ-র জাল ট্যাক্স স্ট্যাম্প কেলেঙ্কারির কারণে দেশটিতে নকল চিনি, সার ও নকল পণ্য ঢুকে পড়ে, জনস্বাস্থ্য সংকট হয়। এতে গঝচ-এর ৯ পরিচালকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার জারি হয়।
দক্ষিণ সুদানে লাখ লাখ ডলার ব্যয়ে তৈরিকৃত ট্যাক্স স্ট্যাম্প ব্যবস্থা পরবর্তীতে অকার্যকর বলে প্রমাণ হয়। গঝচ-এর বিরুদ্ধে লাইবেরিয়া, মরিশাস, শ্রীলঙ্কায় ঘুষ, তথ্য পাচার, ব্যর্থ চুক্তি ও অনিয়মের অভিযোগ, নেপালে আছে নি¤œমানের ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড সরবরাহ ও ব্ল্যাকমেইলিং।
বাংলাদেশেও তাদের ব্যর্থতা চোখে পড়ার মতো। সময়মতো কার্ড সরবরাহে ব্যর্থ- লাখ লাখ মানুষ লাইসেন্সের জন্য অপেক্ষায়। অনেক কার্ডের মান নিম্নমানের হওয়ায় বিআরটিএ তা গ্রহণ করেনি। বিআরটিএ চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় চালক রফতানি ব্যাহত হয়েছে। বাংলাদেশ বিদেশি বাজার হারাচ্ছে। অনৈতিকভাবে দরপত্র শর্ত চারবার পরিবর্তন করে গঝচ-কে সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, তারাই একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে হিজাব পরিহিত নারীদের ছবি তুলতে বাধা দিয়ে সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি করেছিল, যা নিয়ে তৎকালীন সময় বহু সমালোচনার জন্ম দেয়।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ২০১২ সালে সরকার এমআরপি সেবা সম্প্রসারণের জন্য ৩৩টি নতুন জেলা পাসপোর্ট অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এ প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১৩৬ কোটি টাকা। মালয়েশিয়ান প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নিয়ে যথাযথ দর দিয়েও পায়নি। প্রকল্পটি পায় স্থানীয় প্রতিষ্ঠান উধঃধবফমব খঃফ. এবং পোল্যান্ডের সরকারি প্রিন্টিং কোম্পানি চডচড (Polska Wytwórnia Papierwó Wartoœciowych)-এর কনসোর্টিয়াম। কনসোর্টিয়ামের সফটওয়্যার ও সিস্টেমের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা থাকলেও, অভিযোগ ওঠে তা করা হয়নি।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশে দেশি কোম্পানিগুলোকে সুযোগ দিতে হবে সরকারকে। এজন্য প্রচলিত নীতিমালা পরিবর্তন করলেই এগিয়ে যাবে দেশের সফটওয়্যার খাত। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) জরিপ মতে, দেশ যত ডিজিটাল হচ্ছে, সফটওয়্যারের ব্যবহার তত বাড়ছে। দেশে এখন বছরে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার সফটওয়্যারের বাজার আছে। প্রতি বছরই এ বাজার বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে সফটওয়্যার আমদানি।
বর্তমানে মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ সফটওয়্যারই আমদানি করা হচ্ছে। এ হিসাবে বছরে আমদানি হচ্ছে প্রায় ২ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার সফটওয়্যার। বাকি ৬৪০ কোটি টাকার সফটওয়্যার দেশীয়ভাবে জোগান দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে বিশেষ করে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে আরও সফটওয়্যার আসছে। এদিকে স্থানীয় বাজারে চাহিদা থাকলেও দেশি কোম্পানিগুলো তাদের তৈরি সফটওয়্যার বিদেশে রপ্তানি করে বছরে প্রায় ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা আয় করছে। এই আয় প্রতি বছরই বাড়ছে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার বা ৪০ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। ২০২৩ সালে এই আয় ৭৫০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর একটি প্রত্যাশা ছিল। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ৭০ হাজার ডলারে। তবে আইটি সেবা থেকে আয় ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে ৩৬১ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি বিগত এক দশকে বড় আকার ধারণ করেছে সফটওয়্যারের দেশীয় বাজারও। দেশের বাজার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই আবার দেশি সফটওয়্যার নির্মাতারা দখল করে আছেন। দেশের ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে ২৭টি ব্যাংকেই দেশি সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে। আইসিটিখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের সফটওয়্যার খাতে বেশি চাহিদা রয়েছে ইআরপি, বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন তৈরিসহ ডিজিটালাইজেশনের কাজে ব্যবহৃত সফটওয়্যার।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ১ হাজার ১০০ কোম্পানি সফটওয়্যার তৈরি করছে। সরকার উৎসাহমূলক পদক্ষেপ নিলে এই উদ্যোক্তারা আরও এগিয়ে যাবেন। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটঅয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের জরিপ অনুযায়ী নিজস্ব সফটওয়্যারের চাহিদার ৮০ শতাংশই মেটাতে সক্ষম বাংলাদেশ। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবিসহ বিদেশি অর্থায়নে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়, সেখানে এমন সব শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, যে কারণে দেশি কোম্পানিগুলো দরপত্রে অংশ নিতে পারে না। এ নীতি সংশোধন করে দেশি কোম্পানিগুলোকে সুযোগ দিলে এই শিল্প দ্রুত এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত গত দুই দশকে দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে। বর্তমানে দেশের আইটি কোম্পানিগুলো কেবল দেশীয় বাজারেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিজেদের দক্ষতা ও সাফল্যের পরিচয় দিচ্ছে। বিশেষ করে টাইগার আইটি, ডেটাসফট, বেসিসের অন্তর্ভুক্ত বহু কোম্পানি প্রমাণ করেছে যে স্থানীয় আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি কোম্পানির তুলনায় কম দক্ষ নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে অধিক কার্যকর, সাশ্রয়ী এবং সময়োপযোগী সমাধান দিতে সক্ষম।
টাইগার আইটির আন্তর্জাতিকভাবে প্যাটেন্টকৃত পণ্য অঋওঝ সফটওয়্যার ১০ কোটি ভোটারের আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র বাস্তবায়ন। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইডেন্টিফিকেশন, ডি-ডুপ্লিকেশন, ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়। দেশি কোম্পানি টাইগার আইটি কর্তৃক কোম্পানি কর্তৃক তৈরি ও আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের জন্য অঋওঝ সফটওয়্যার বাস্তবায়ন সম্পন্ন হওয়ায় অনেক বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হয়। তারা নেপাল, ভুটান এবং আফ্রিকার কিছু দেশে প্রযুক্তি সেবা রপ্তানি করছে।
২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশে জাতীয় ভোটার নিবন্ধন, বায়োমেট্রিক ডাটাবেজ, ডাটা মাইগ্রেশন, ভেরিফিকেশন এবং আইসিটি অবকাঠামো নির্মাণে টাইগার আইটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় প্রথম পাইলট প্রকল্প থেকে শুরু করে, ইলেকশন কমিশনের অধীনে চঊজচ, ঋওঘওউঈ, ওউঊঅ এবং বিআরটি এর অধীনে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রকল্পসমূহে দীর্ঘদিন কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। অনেক সাফল্যের ইতিহাস তৈরি করেছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে।
টাইগার আইটির সাফল্য প্রমাণ করে যে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো কাটিং-এজ টেকনোলজি ব্যবহার ও জটিল প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নে সমানতালে প্রতিযোগিতা করতে পারে। এটি প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক মানে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম এবং অনেক ক্ষেত্রেই বিদেশি কোম্পানির চেয়ে কার্যকর, সময়োপযোগী ও সাশ্রয়ী সমাধান দিতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি দেশি কোম্পানিগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া বাংলাদেশের ডিজিটাল উন্নয়ন, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা এবং কর্মসংস্থানের জন্য অপরিহার্য। নীতিনির্ধারক ও বড় প্রকল্পদাতাদের জন্য যুক্তিযুক্ত পথ হলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতা ভাঙিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে তাদেরকে শক্তিশালী করে উন্নত পার্টনারশিপের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা।
লেখক : পরিচালক, স্মার্ট ইনোভেশনস