ইসলাম যেসব বিষয়কে ধ্বংসাত্মক বলে স্থির করেছে, সেগুলো মুহলিকাত। হিংসা, লোক দেখানো আমল, আত্মগর্ব, অহঙ্কার, অনিয়ন্ত্রিত রাগ, প্রবল লোভ, কৃপণতা, নফসের খেয়ালের দাসত্ব, প্রতারণা, পরনিন্দা-অপবাদ, কঠোর হৃদয়-দুনিয়ার মোহ ইত্যাদি মুহলিকাতের নমুনা। আত্মাকে কলুষিত করে, এমন সব বিষয় থেকে নিজেকে বিরত রাখা ঈমানের প্রমাণ। এসব মন্দের ধারণ বা পরিহারের দিক থেকেও ব্যক্তির আচরণ বিশ্লেষণ করে ইসলামইসলাম যেসব বিষয়কে ধ্বংসাত্মক বলে স্থির করেছে, সেগুলো মুহলিকাত। হিংসা, লোক দেখানো আমল, আত্মগর্ব, অহঙ্কার, অনিয়ন্ত্রিত রাগ, প্রবল লোভ, কৃপণতা, নফসের খেয়ালের দাসত্ব, প্রতারণা, পরনিন্দা-অপবাদ, কঠোর হৃদয়-দুনিয়ার মোহ ইত্যাদি মুহলিকাতের নমুনা। আত্মাকে কলুষিত করে, এমন সব বিষয় থেকে নিজেকে বিরত রাখা ঈমানের প্রমাণ। এসব মন্দের ধারণ বা পরিহারের দিক থেকেও ব্যক্তির আচরণ বিশ্লেষণ করে ইসলামইসলাম যেসব বিষয়কে ধ্বংসাত্মক বলে স্থির করেছে, সেগুলো মুহলিকাত। হিংসা, লোক দেখানো আমল, আত্মগর্ব, অহঙ্কার, অনিয়ন্ত্রিত রাগ, প্রবল লোভ, কৃপণতা, নফসের খেয়ালের দাসত্ব, প্রতারণা, পরনিন্দা-অপবাদ, কঠোর হৃদয়-দুনিয়ার মোহ ইত্যাদি মুহলিকাতের নমুনা। আত্মাকে কলুষিত করে, এমন সব বিষয় থেকে নিজেকে বিরত রাখা ঈমানের প্রমাণ। এসব মন্দের ধারণ বা পরিহারের দিক থেকেও ব্যক্তির আচরণ বিশ্লেষণ করে ইসলামইসলাম যেসব বিষয়কে ধ্বংসাত্মক বলে স্থির করেছে, সেগুলো মুহলিকাত। হিংসা, লোক দেখানো আমল, আত্মগর্ব, অহঙ্কার, অনিয়ন্ত্রিত রাগ, প্রবল লোভ, কৃপণতা, নফসের খেয়ালের দাসত্ব, প্রতারণা, পরনিন্দা-অপবাদ, কঠোর হৃদয়-দুনিয়ার মোহ ইত্যাদি মুহলিকাতের নমুনা। আত্মাকে কলুষিত করে, এমন সব বিষয় থেকে নিজেকে বিরত রাখা ঈমানের প্রমাণ। এসব মন্দের ধারণ বা পরিহারের দিক থেকেও ব্যক্তির আচরণ বিশ্লেষণ করে ইসলাম
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কেবল বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।
ইবনে খালদুনের ‘আসাবিয়্যাহ’ বা সামাজিক বন্ধন তত্ত্ব থেকে শুরু করে শাহ ওয়ালিউল্লাহর ইরতিফাকাত বা সহায়ী ক্রমবিকাশ তত্ত্ব এবং সমসাময়িক চিন্তাবিদদের রাষ্ট্র ও সমাজকেন্দ্রিক বিশ্লেষণ সবই ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণের একটি অন্তঃপ্রবাহ রচনা করে। মূলত এখানে সমাজকে বোঝা হয় একটি ঈমানভিত্তিক কাঠামো দিয়ে, যার লক্ষ্য দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ের ফালাহ বা পরিপূর্ণ কল্যাণ।
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সমাজকে কেবল মানুষের পারস্পরিক চুক্তি বা ঐতিহাসিক বাস্তবতায় গঠিত রূপ হিসেবে দেখা হয় না, বরং তাকে আল্লাহর নির্দেশিত একটি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত ধারা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ব্যবস্থার কেন্দ্রে রয়েছে তাওহিদ আল্লাহর একত্ব, সার্বভৌমত্ব ও বিধানদানের পূর্ণ অধিকার।
এর সাথে যুক্ত হয় রিসালাত নবীদের মাধ্যমে প্রাপ্ত হিদায়াত বা নির্দেশনা, যা সমাজে নৈতিকতা ও কর্তব্যবোধের পথ দেখায়। আর আখিরাহ- চূড়ান্ত পরিণতি ও জবাবদিহির ধারণা সমাজের প্রতিটি স্তরে দায়িত্ব ও নৈতিকতার একটি অভ্যন্তরীণ সংবেদন সৃষ্টি করে। ফলে প্রতিটি সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর কেন্দ্রে থাকে আল্লাহর রুবুবিয়্যাহ (পালনকারিতা) ও উলুহিয়্যাহ (সার্বভৌম কর্তৃত্ব) এবং রাসূলুল্লাহর (সা:) প্রদর্শিত হেদায়াত ও নৈতিক নির্দেশনা।
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণে মানুষকে কেবল একটি সামাজিক প্রাণী হিসেবে দেখা হয় না, বরং তাকে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হয়, যার মধ্যে আমানত ও দায়িত্বের ধারণা নিহিত। মানুষ মূলত একটি নৈতিক ও দায়িত্বশীল সত্তা, যার আচরণ মূল্যায়ন করা হয় তার ইখতিয়ার (স্বাধীন ইচ্ছা), তাকওয়া (খোদাভীতি) এবং খিলাফত বা প্রতিনিধিত্বমূলক ভূমিকার ভিত্তিতে।
সমাজে তার আচরণ হবে ন্যায় ও নৈতিকতার প্রতিফলন, আর তার সামাজিক ভূমিকা হবে ইহকালীন ও পরকালীন দায়বদ্ধতা পূরণের উপায়। এখানেই ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসীয় শ্রেণী বিশ্লেষণ বা দার্শনিক বস্তুবাদ থেকে মৌলিকভাবে পৃথক। কারণ এখানে মানব আচরণের মাপকাঠি কেবল শ্রেণিসংগ্রাম নয়, বরং নৈতিক আত্মজিজ্ঞাসা ও আধ্যাত্মিক দায়বদ্ধতা।
ইসলামী সমাজ কাঠামোর তৃতীয় স্তম্ভ হলো শরিয়াহর আনুগত্য ও প্রতিপালন। ব্যক্তি তার আত্মিক, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি স্তরে শরিয়াহর বিধান পালনে সচেষ্ট থাকবে। এই আনুগত্য শুধু আনুষ্ঠানিক আইন মানার বিষয় নয়, বরং এটি একটি সচেতন, ঈমানভিত্তিক প্রয়াস, যার লক্ষ্য সমাজে আদল (ন্যায়), ইহসান (উত্তমতা) ও সালাহ (সর্বজনীন কল্যাণ) প্রতিষ্ঠা করা।
বিশেষত, অর্থনীতি ও রাজনীতির মতো জটিল সামাজিক কাঠামোয় শরিয়াহর নৈতিক মানদণ্ড অনুসারে আদল (ন্যায় ও ভারসাম্য) এবং মাসলাহা (জনকল্যাণ) অনুসন্ধান একটি কেন্দ্রীয় নীতি হয়ে ওঠে।
ইসলামী দৃষ্টিতে সমাজকে জাতীয়তা, বর্ণ বা শ্রেণীর ভিত্তিতে ভাগ করা হয় না। এর কেন্দ্রীয় পরিচয় হলো ঈমানভিত্তিক উম্মাহ অর্থাৎ এক অভিন্ন বিশ্বাসের জনগোষ্ঠী, যাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, ন্যায় ও ভ্রাতৃত্ববোধ বিদ্যমান।
এই ধারণা রাজনৈতিকভাবে একটি সীমাহীন ভ্রাতৃত্বের ভিত্তি গঠন করে, যেখানে ঈমান, তাকওয়া ও ন্যায়ের আদর্শ হলো সামাজিক সংহতির মূল চালিকাশক্তি।
ইসলামী সমাজ বিশ্লেষণে সামাজিক উত্থান-পতনের কারণ কেবল বাহ্যিক অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক ঘটনাক্রমে নির্ধারিত হয় না, বরং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক স্থিতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আল-কুরআন স্পষ্ট বলেছে, ‘আল্লাহ কোনো জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেরাই নিজেদেরকে পরিবর্তন করে।’ (সূরা রা’দ: ১১)।
অতএব, সমাজে অবক্ষয় দেখা দিলে তা হবে ঈমান, তাকওয়া ও আদলের অভাবের ফলাফল। পক্ষান্তরে সমাজের উন্নতি হবে নৈতিক শুদ্ধতা, হিদায়াতের অনুসরণ ও জনকল্যাণে সক্রিয় অংশগ্রহণের ফল।
ফলে, একজন মুসলিমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক আচরণকে বিচার করা হবে :
(ক) তাওহিদ-রিসালাত-আখিরাহর প্রতি তার সাড়া ও আনুগত্যের ভিত্তিতে,
(খ) মুকাল্লাফ (আল্লাহর নির্দেশপ্রাপ্ত) হিসেবে শরিয়াহর প্রতি তার দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে,
(গ) আদল (ন্যায়) ও সালাহ (কল্যাণ)-এর সাপেক্ষে তার সামাজিক ভূমিকার আলোকে।
একজন মুসলিম সমাজে সালাহ (শৃঙ্খলা ও শুদ্ধি) বিস্তার করছে নাকি ফাসাদ (দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টি করছে এই প্রশ্ন সমাজ বিশ্লেষণের একটি মৌলিক মানদণ্ড। কারণ ইসলামী সমাজ কাঠামোর মূল লক্ষ্য হলো : আল্লাহর বিধান অনুযায়ী এমন এক ন্যায়ভিত্তিক, কল্যাণকর ও পরিশুদ্ধ সমাজব্যবস্থা গঠন, যা মানবজাতির প্রকৃত মর্যাদা, দায়িত্ব ও চূড়ান্ত মুক্তির পথনির্দেশ করে।
সামাজিক জীবনে সালাহ বা কল্যাণ- পরিশুদ্ধিকে অবলম্বন করছে, না ফাসাদ বা বিশৃঙ্খলা-সমস্যা তৈরি করছে, দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, সেই সাপেক্ষে বিচার হবে মানুষের আচরণ।
মুসলিম সমাজ বিশ্লেষণের একটি সংহত বিশ্লেষণ কাঠামো অনুসন্ধান জরুরি, যাতে বিশ্বাস, চরিত্র, শরিয়ত, সংস্কৃতি ও বাস্তবতার পারস্পরিক সংযোগ পর্যবেক্ষণ করা যায়। এই কাঠামোকে মূলত পাঁচটি আন্তঃসম্পর্কিত স্তরে ভাগ করা যায় :
১. ঈমানি স্তর
এ স্তর হলো সব আচরণের ভিত্তি। একজন মুসলিমের সমস্ত কর্ম ও বর্জন ঈমানের শক্তিতে অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। ঈমান শুধু মুখের উচ্চারণ নয়, বরং অন্তরের গভীরে প্রোথিত এক জীবন্ত প্রেরণা, যা আল্লাহর অস্তিত্ব, তাওহিদ, ফেরেশতা, নবী, আখিরাত, কিতাব ও তাকদিরে বিশ্বাসের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়।
এ স্তর অনুসন্ধান করবে মনোজাগতিক বাস্তবতা। যেমন, একজন মুসলিম ঈমানের ঘোষণা ও সত্যায়নে যত্নবান কি না? তার কর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে কি না? গোপনে ও প্রকাশ্যে তার মধ্যে একরকম ঈমানি দায়বদ্ধতা রয়েছে কি না? এ জাতীয় বিষয়াবলিকে নজরে রেখে মুসলিম সমাজে ব্যক্তির আচরণ বিশ্লেষণ করা হবে।
২. আখলাকি স্তর
ঈমানের ফলস্বরূপ মানুষের অন্তর ও চেতনায় গঠিত হয় এক বিশেষ ধরনের চরিত্র, যা নিয়ন্ত্রণ করে তার ভাষা, প্রবণতা, ক্ষোভ, লোভ, ক্ষমা, ধৈর্য ও নম্রতাকে। এ স্তরে মূল্যায়ন করা হয় আচরণীয় বাস্তবতাকে; আত্মনিয়ন্ত্রণ, সদাচরণ ও আত্মশুদ্ধির মাত্রাকে।
এ স্তর অনুসন্ধান করবে আচরণীয় নানা দিক। যেমন, ব্যক্তি কতটা সৎ, বিশ্বাসযোগ্য, সংযত ও দয়ালু? রাগ, হিংসা, অহঙ্কার এসব থেকে সে নিজেকে কিভাবে মুক্ত রাখছে!
৩. শরয়ি স্তর
এ স্তরে আচরণের বিধি ও সীমার বিচার হয় ইসলামের শরিয়তের আলোকেই। অর্থাৎ কোনো কিছু ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুবাহ, হারাম, মাকরুহ বা নাজায়েজ এরূপ শরয়ি অবস্থান থেকে আচরণ বিশ্লেষণ করা হয়। এতে ব্যক্তির লিপ্ততা-অলিপ্ততার নানা মাত্রা তার আচরণ বিচারের পথ দেখাবে।
এ স্তর ব্যক্তিকে বিশ্লেষণ করবে আনুগত্যের মাপকাঠি দিয়ে। যেমন, ব্যক্তি বা সমাজ শরয়ি নির্দেশাবলির প্রতি কতটা আন্তরিক ও নিয়মানুবর্তী? হালাল রিজিক, ইবাদত, জুলুম-ইনসাফ, লেনদেন, বিচার- এসব বিষয়ে শরিয়তের অনুসরণ রয়েছে কি না।
৪. উরফি স্তর
উরফ সমাজের প্রচলিত রীতিনীতিকে বোঝায়, যা শরিয়তের সীমার ভেতরে থাকলে গ্রহণযোগ্য। এ স্তর আমাদের জানায়, ব্যক্তি বা সমাজ ঐতিহ্যগত, সাংস্কৃতিক বা আঞ্চলিক অভ্যাস কতটা শরিয়তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এ স্তরের রয়েছে বিশ্লেষণযোগ্য নানা দিক। যেমন, কোনো রীতিনীতি কি ইসলামবিরোধী হয়ে পড়েছে? আচার-আচরণে ইসলামবৈরী সংস্কৃতি বা ভ্রান্ত রেওয়াজ কতটা প্রভাব ফেলছে?
৫. ইজতিমায়ি-মায়াশি স্তর
এটি বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপটে আবর্তিত, যা সামাজিক কাঠামো, অর্থনৈতিক জীবন, বৈষম্য ও জীবনসংগ্রাম, রাজনৈতিক অবস্থা, শিক্ষাগত পরিস্থিতি ইত্যাদিকে অবলোকন করে, যার প্রভাব পড়ে ব্যক্তির আচরণে। দারিদ্র্য, নিরাপত্তাহীনতা, বঞ্চনা মানুষকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করতে চাইবে; কিন্তু ব্যক্তি ও সমাজের আচরণীয় সঠিকতাই ইসলামের অন্বেষা।
এ স্তরে পর্যবেক্ষণীয় বিষয়াবলি বিস্তর। যেমন, সামাজিক ন্যায়পরায়ণতা উপস্থিত না অনুপস্থিত। এতে ব্যক্তির ভূমিকা কেমন, ব্যক্তির আচরণে কতটা দুর্ব্যবহার ও নিষ্ঠুরতা সৃষ্টি হয়েছে। জীবিকাগত বাস্তবতায় একজন ব্যক্তি কোথায় দাঁড়িয়ে আছে ঈমান ও নৈতিকতার প্রশ্নে?
আচরণ বিশ্লেষণের পাঁচটি কার্যক্ষেত্র
এসব স্তরের আলোকে মুসলিম আচরণ বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে পাঁচটি মূল কার্যক্ষেত্র দাঁড়ায়। যেমন,
(ক) ইবাদতমূলক আচরণ
সালাত, সিয়াম, হজ, জাকাত ইত্যাদি ইবাদতগুলোর যথাযথ পালন একজন মুসলিমের ঈমান ও শৃঙ্খলার প্রমাণ। এসব ইবাদতের মানদণ্ডে মুসলিমদের আচরণ বিশ্লেষণ করা হয়। দেখা হয়, ব্যক্তি এসব ইবাদত পরিহার করে বসে আছে কি না। এসব ইবাদতে আত্মিক মনোযোগ ও ধারাবাহিকতা আছে কি না। ব্যক্তি ইবাদতকে জীবনের কেন্দ্র হিসেবে গ্রহণ করেছে কি না? করলে তার মাত্রা কতটা?
(খ) মুয়ামালাতমূলক আচরণ
এটি মানুষের লেনদেন, চুক্তি, ব্যবসাবাণিজ্য, দেনাপাওনা, পরিবারিক সিদ্ধান্ত ইত্যাদি অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কের পরিমণ্ডলে আচরণ নির্দেশ করে।
এখানে মূল্যায়নের বিষয় অর্থনৈতিকতার গোটা পরিমণ্ডলে ব্যাপ্ত। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির আচরণ ও ভূমিকা তার মূল্যায়নের গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড। এখানে বিচারের বহু দিক রয়েছে। যেমন, ব্যক্তির উপার্জন হালাল না হারাম। ব্যক্তি বা সমাজ অর্থনৈতিক ও সামাজিক আচরণে বিশ্বাসযোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও ইনসাফ রক্ষা করছে কি না।
(গ) মু’আশারাতমূলক আচরণ
মানুষ কিভাবে তার প্রতিবেশী, আত্মীয়, বন্ধু, সহকর্মী বা সাধারণ মানুষের সাথে আচরণ করে, সেটিই এখানে মূল প্রশ্ন। ইসলাম মানুষকে ‘হাসনাত’-এর দাওয়াত দিয়েছে- সত্যবাদিতা, কল্যাণের আদেশ, অকল্যাণে নিষেধ, আমানতদারি, ওয়াদা রক্ষা, প্রতারণা না করা, নরম কথা, দয়া, সহানুভূতি, পারস্পরিক সহনশীলতা ইত্যাদির অনুশীলন করতে শিখিয়েছে। ব্যক্তি তার অনুবর্তিতা করছে কি না?
(ঘ) মুহলিকাত বা ধ্বংসকারী বিষয়গুলো পরিহার
ইসলাম যেসব বিষয়কে ধ্বংসাত্মক বলে স্থির করেছে, সেগুলো মুহলিকাত। হিংসা, লোক দেখানো আমল, আত্মগর্ব, অহঙ্কার, অনিয়ন্ত্রিত রাগ, প্রবল লোভ, কৃপণতা, নফসের খেয়ালের দাসত্ব, প্রতারণা, পরনিন্দা-অপবাদ, কঠোর হৃদয়-দুনিয়ার মোহ ইত্যাদি মুহলিকাতের নমুনা। আত্মাকে কলুষিত করে, এমন সব বিষয় থেকে নিজেকে বিরত রাখা ঈমানের প্রমাণ। এসব মন্দের ধারণ বা পরিহারের দিক থেকেও ব্যক্তির আচরণ বিশ্লেষণ করে ইসলাম।
(ঙ) মুনজিয়াত বা নাজাতদায়ী বিষয়গুলোর অনুশীলন
মুনজিয়াত হচ্ছে তাওবাহ অর্থাৎ গুনাহ থেকে ফিরে আসা, আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকা ও নিজের গুনাহর শাস্তির ভয়, আল্লাহর রহমতের আশা, দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি, সবর, শোকর বা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা, ভয় ও আশার মাঝামাঝি স্থিতি, তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা, নিজের আমল পর্যালোচনা ও আল্লাহর উপস্থিতির অনুভব, কাজের আন্তরিকতা ও সত্যবাদিতা, আল্লাহ ও রাসূলের (সা:) প্রতি ভালোবাসা, আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকা ও বিনয়, আল্লাহর জিকির ও ধ্যান। মুমিনের লক্ষ্য শুধু পাপ থেকে বাঁচা নয়, বরং এমন গুণাবলির চর্চা করা, যা তার আত্মাকে আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যায়। এমনতর বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মুসলিমদের আচরণ বিশ্লেষণ করা হবে।
এসব উপাদান ও বৈশিষ্ট্যের বিচারে মুসলিম সমাজে ব্যক্তিদের আচরণ বিশ্লেষণ করা হবে। এগুলো দক্ষিণপন্থী/বামপন্থী/মডারেট/র্যাডিক্যাল নয়, বরং অন্তর্নিহিত ধর্মীয় অবস্থান দ্বারা তা নির্ধারিত। এতেও খুব সরলভাবে বর্গীকরণের সুযোগ নেই। মুসলিম সমাজ থেকে কেউ জিন্দিক বা ধর্মহীন হয়ে যেতেও পারে। কেউ হতে পারে মুরতাদ বা ধর্মত্যাগী। কিন্তু সাধারণভাবে মুসলিম সমাজে কেউ মুত্তাকি (খোদাভীরু) কেউ ফাজির (গুনাহগার), কেউ জালেম আবার কেউ আদেল বা ন্যায়পন্থী, কেউ ফাসেক (পাপাচারী) আবার কেউ সালেহ বা নেককার। কারো মধ্যে নেফাক (কপটতা) আছে, আবার কেউ মুখলিস বা নিষ্ঠাবান।
এভাবে নানা বর্গ কুরআন-সুন্নাহ ও মুসলিম উম্মাহর অনুশীলনের হাজার বছরের ধারাবাহিকতা থেকে চলে এসেছে। কিছু দৃশ্যমান চিহ্নকে ভিত্তি করে এসব বর্গে কাউকে স্থায়ী, নিরঙ্কুশ ও সাধারণভাবে বর্গীকরণ করা চলে না। প্রতিটি বিষয়ে রয়েছে উসুল বা মৌলিক নীতিমালা, কাওয়াইদ বা আইনগত বিধিব্যবস্থা, জাওয়াবিত বা নিয়ন্ত্রক নিয়ম/বিশেষ শর্তাবলি। এখানে যথার্থতা চাইলে স্বেচ্ছাচার ও অপপ্রয়োগের সুযোগ নেই। ইসলামী জ্ঞানব্যবস্থা এ পথ রুদ্ধ করেছে।
ইসলামের এই চিরায়ত ও সাধারণ অবস্থান থেকে বিচ্যুতি ও মুসলিম সামাজিক জীবনের চরম ভাঙনের প্রকল্প হিসেবে আমেরিকাভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক র্যান্ড করপোরেশনের বর্গীকরণ মুসলিম সমাজে ক্রিয়াশীল। এই থিঙ্কট্যাঙ্ক মুসলিমদের কিছু লক্ষণের ভিত্তিতে বিভাজিত করেছে। যেমন, (১) সনাতনধর্মী, (২) চরমপন্থী, (৩) ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী এবং (৪) আধুনিকতাবাদী। এই বিভাজনের অশুভ প্রভাব আমরা বিশ্লেষণ করেছি গত সপ্তাহের কলামে। এই প্রভাব থেকে পরিত্রাণের জন্য ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুশীলনের মধ্য দিয়ে সমাজ বিশ্লেষণের জরুরত ক্রমবর্ধমান। র্যান্ডের শ্রেণিবিন্যাসের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানে শুধু রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, বরং আত্মচিন্তা, আত্মমর্যাদা ও সত্তানুভূতির স্বাধীনতা রক্ষা করা।
ইসলামের নিজস্বতার অবলম্বনে আমাদের প্রয়োজন এক গাঠনিক ভাষা বুনন, যার শিকড় তাওহিদের ভেতরে, শরীর হিকমা দিয়ে তৈরি, ডানা গঠিত নবুয়্যতের হেদায়াতে, উড়াল চালিত হবে সালাফের ক্রমধারায়।
লেখক : কবি, গবেষক
সূত্র, নয়া দিগন্ত