নিজের পাপে আজ আওয়ামী লীগ ডেড বা মৃত। জামায়াত অস্পৃশ্য (রাজাকার), এনসিপি শিশু। কাজেই উইলিয়াম কুপারের সেই কবিতার মতো বিএনপির কোনো কোনো নেতা আওড়াচ্ছেন, I am monarch of all I survey/My right there is none to dispute; যদিও বিএনপির অ্যাকটিং চেয়ারম্যান বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, সামনের চ্যালেঞ্জগুলো তাদের জন্য খুব সহজ হবে না।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপির কিছু নেতা পরবর্তী তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করছেন, যা গণতান্ত্রিক চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়ায়। জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ভয় অন্য জায়গায়। ওনারাও নিজেদের আগে বা পরে আর কোনো ভালো মানুষের দ্বিতীয় দলকে গ্রহণ করতে মানসিকভাবে প্রস্তুত নহেন বলেই অনুমিত হচ্ছে। ‘দু-একজন ভালো মানুষ অন্যদলে থাকতে পারেন বা থাকা উচিত’ সেটা তাদের অনেকেই মানতে চান না। এনসিপি আবার জুলাই বিপ্লবের পুরা কৃতিত্ব নিজেরাই নিতে চায়।

এই তিনটি প্রবণতাই গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক। কারণ, প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে একচ্ছত্র ক্ষমতার বাসনায় বিভোর, অথচ গণতন্ত্রের ভিত্তি হলো বিরোধী মতের প্রতি সহনশীলতা, ক্ষমতা বিনিময়ের সুযোগ এবং একটি কার্যকর, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী পদ্ধতি।

একদল উত্তরে যেতে চাইলে অন্যদল যেতে চাচ্ছে দক্ষিণে। পারস্পরিক দূরত্ব কমাতে নয়, বরং যেন সোৎসাহে তা বাড়াতে চাচ্ছে। জুলাইয়ের পরিবর্তনের পর আমরা একটা নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি আশা করেছিলাম। কিন্তু আগের সেই রোগগুলোর প্রায় সবগুলোই ফিরে এসেছে! আমাদের পারস্পরিক ঘৃণা, অবিশ্বাস, অনাস্থার রঙ হুবহু আগের মতোই রয়ে গেছে।

গণতন্ত্র শুধু সরকার নির্বাচনের পদ্ধতি নয়, এটি একটি সংস্কৃতি—যেখানে মতপার্থক্য থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু সহাবস্থানের ন্যূনতম শিষ্টাচার বজায় রাখা আবশ্যক। তাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হলে, দলগুলোকে ‘আমরাই চূড়ান্ত’ ‘আমরাই শ্রেষ্ঠ’, ‘আমাদের বিকল্প নাই’—এই মনোভাব ত্যাগ করে, ‘আমরাও একটি অংশ’—এই মানসিকতা গ্রহণ করতে হবে। শুধু প্রতিযোগিতা নয়, সহযোগিতাও হতে হবে গণতন্ত্রের চালিকাশক্তি।

বর্তমানে প্রধান দুটি দল বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যকার শব্দÑবোমা নিক্ষেপের মাত্রা ও তীব্রতা দেখে ময়মনসিংহের চরপাড়ার মেডিকেল কলেজ ও পলিটেকনিকের ছাত্রছাত্রীর মাঝে মারামারির ঘটনাগুলো মনে পড়ে যায়।

ময়মনসিংহ শহরে মেডিকেল কলেজ এবং পলিটেকনিক কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থিত। ভবিষ্যতের ডাক্তাররা সংগত কারণেই ভবিষ্যতের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের চেয়ে নিজেদের উঁচু বা আশরাফ শ্রেণি বলে ঠাহর করতেন! পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের তুচ্ছার্থে মিস্ত্রি বলে ডাকতেন! পলিটেকনিকের ছাত্ররাও আর কম কীসে? তারাই বা ছাড়বে কেন? একই অ্যাঙ্গেলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য তারাও পেয়ে গেল জুতসই শব্দÑকবিরাজ। শুধু রাজনৈতিক ত্রুটিরেখা বরাবর নয়, অন্যান্য সামাজিক ত্রুটিরেখাতেও আমরা একপক্ষ অন্যপক্ষকে এভাবে টেনে নিচে নামাই।

পৃথিবীতে যত ঝগড়া, সংঘর্ষ, যুদ্ধ হয়েছে, তা এই শব্দবোমার কারণেই শুরু হয়েছে। বিএনপির একটি অংশ জামায়াতকে ডাকে ‘জাশি’, ‘আলবটর’, অন্যদিকে, জামায়াতের একটি অংশ বিএনপিকে ব্যঙ্গ করে ‘বিম্পি’, ‘বিছা’ ইত্যাদি নামে। সহজেই প্রতীয়মান হয়, এখানে মেডিকেল ছাত্রদের জায়গায় বিএনপি এবং পলিটেকনিকের জায়গায় জামায়াত রয়েছে। এই শব্দবোমা নিক্ষেপ জামায়াত পরে শুরু করলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক উপস্থিতির কারণে এখন লিড-রুলে চলে গেছে! এই প্রচারণা যুদ্ধে আওয়ামী লীগের সাইবার বাহিনীও কৌশল বুঝে কখনো জামায়াত আবার কখনো বিএনপির সঙ্গে যোগ দেয়, গিট্টুটি আরো শক্ত করে লাগানোর জন্য।

ফলাফল?

দু-দলের মধ্যে এমন এক তিক্ততা তৈরি হয়েছে, যা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যকার ঐতিহাসিক বিরোধকেও পেছনে ফেলেছে। পরিহাস হলো—বিএনপি এবং জামায়াতের সুহৃদ সেজে এই তিক্ততা আজ যারা বাড়িয়ে তুলছেন, তাদের অনেকেই কখনো ফ্যাসিবাদী নিপীড়নের শিকার হননি। তারা ধানক্ষেতে, পাটক্ষেতে রাত্রি কাটাননি, কিংবা রাজপথের রক্তাক্ত ব্যারিকেডে ও এদের দেখা যায়নি। তারা কেউ কারারুদ্ধ হননি, কিংবা গুমের আতঙ্কে কাটাননি! তাদের পলাতক কিংবা প্রবাসে থাকতে হয়নি! তবে কেউ কেউ মাফিয়া রানির কুসুম কুসুম সমালোচনা করে কিছুটা উপকারও করেছেন! অথচ আজ তাদের কীবোর্ড-যুদ্ধে জ্বলে উঠছে ঘৃণার আগুন, যা শেষ পর্যন্ত সুযোগ করে দিতে পারে ফ্যাসিবাদী পুনর্জন্মের।

এই কথাগুলো বলা এখন জরুরি। যারা নিজেদের দেশপ্রেমিক, ইসলামপন্থি, কিংবা জাতীয়তাবাদী বলে দাবি করেন—তাদের এই ব্যঙ্গ-বিদ্বেষ ছড়ানো বক্তব্য শুধু নিজেদের অস্তিত্বই খণ্ডিত করছে না, বরং সবার কমন ও ভয়ংকর শত্রুকে শক্তিশালী করে তুলছে। আওয়ামী লীগের প্রতিশোধপরায়ণ মানসিকতা, দেশ থেকে লুট করে নেওয়া বিলিয়ন ডলারের মজুত এবং সর্বোপরি হিন্দুত্ববাদী ইন্ডিয়ার সর্বাত্মক সমর্থন এই জাতির জন্য চরম হুমকি হয়ে আছে। ভুলে গেলে চলবে না—আওয়ামী লীগকে একক শক্তিতে হারানো কখনো সম্ভব নয়। আর যদি বিএনপি-জামায়াত নিজেদের মধ্যেই কাদা ছোড়াছুড়ি চালিয়ে যায়, তবে সত্যি বলতেই হয়—ফ্যাসিবাদের পুনর্জন্ম শুধু সম্ভব নয়, বরং অবশ্যম্ভাবী।

শক্তিশালী বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র টেকে না : বিএনপির সামনে আত্মঘাতী পথ এড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ

শুধু শাসক দল নয়, একটি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর সুরক্ষা নির্ভর করে বিরোধী রাজনীতির ওপরও। দুঃখজনক হলেও সত্য, ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান এই মৌলিক সত্যটি অগ্রাহ্য করেছিলেন। সেদিন যদি শেখ মুজিব সত্যিকার অর্থেই একটি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি সৃষ্টি করতেন বা সেই সুযোগ দিতেন, তবে হয়তোবা আজ আমাদের ইতিহাস অন্য রকম হতো!

আজ প্রায় একই ধরনের মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত, হেনস্তার শিকার হয়ে এখন তারা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বলয়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে—বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে বিরোধী দল হিসেবে কারা থাকবে? কিংবা তাদের গঠন ও পথচলা কেমন হবে?

শোনা যাচ্ছে, কিছু মহল বিএনপিকে পরামর্শ দিচ্ছে ভবিষ্যৎ বিরোধী দল ‘তাদের পছন্দমতো’ তৈরি করতে বা কিছু ম্যানুভারিংয়ের মাধ্যমে ‘অনুকূল’ বিরোধী দল প্রতিষ্ঠা করতে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই যুগে এ রকম কোনো পরিকল্পনা বা প্রচেষ্টাকে গোপন করে রাখা যাবে না।

সেদিন শেখ মুজিবকে বাজে পরামর্শ দিয়ে বিপথগামী করেছিলেন, শেখ হাসিনাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছেন, আজ তারাই আবার বিএনপির ঘাড়ে সওয়ার হওয়ার চেষ্টা করছেন। এটি হবে ভয়াবহ আত্মঘাতী একটি ভুল। সময়ের সঙ্গে তা বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে।

বিএনপির করণীয়

একটি বিস্তৃত রাজনৈতিক পরিসর নিশ্চিত করা, যেখানে বিভিন্ন মত ও চিন্তাচর্চার সুযোগ থাকবে। মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক বৈচিত্র্য গণতন্ত্রের প্রাণ।

বিরোধী দলের প্রাকৃতিক বা ন্যাচারাল বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করা, বরং রাজনৈতিক সহনশীলতা ও সৌজন্যের মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতি গড়ে তোলা।

গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগ স্বাধীন রাখা, যাতে সত্য উচ্চারণ এবং সরকারের ত্রুটি তুলে ধরার পরিবেশ থাকে।

প্রশাসনের ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে দেওয়া, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো বিরোধী মতকে হয়রানি না করে।

একটি কার্যকর বিরোধী দল সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জবাবদিহির আওতায় আনে এবং রাষ্ট্রকে টেকসই গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে নেয়। বিএনপি যদি সত্যিই গণতান্ত্রিক সংস্কার চায়, তাহলে তার উচিত হবে কোনো সাজানো বিরোধী দল নয়—বরং সত্যিকারের বিরোধী রাজনীতির উর্বর মাটি তৈরি করা। শেখ মুজিব যে ভুল করেছিলেন, শেখ হাসিনা যে ভুল করেছিলেন, তা যদি আবার কেউ করে, পরিণাম যে একই হবে, তা ইতিহাস বারবার বলে দিয়েছে।

জামায়াতের সামনে আসল চ্যালেঞ্জ : সমাধান কোন পথে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন ভারসাম্য গড়ে তোলার প্রয়াস চলছে, যেখানে আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র আধিপত্যের বিকল্প হিসেবে বিএনপির নেতৃত্বে একটি জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রয়াস স্পষ্ট। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি বিএনপি সরকারে আসে, তাহলে বিরোধী দল হিসেবে কারা ভূমিকা রাখবে? এখানে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অবধারিত।

জামায়াতের সম্ভাবনা ও বাস্তবতা

জামায়াতে ইসলামীর একটি সুসংগঠিত কাঠামো, আদর্শিক ভিত্তি এবং তৃণমূলে উল্লেখযোগ্য জনভিত্তি আছে। বহু নির্যাতন ও বাধা সত্ত্বেও দলটি টিকে রয়েছে এবং তার কর্মীবাহিনী এখনো সক্রিয় ও অনুগত। এদিক থেকে বিচার করলে, তারা ভবিষ্যতের একটি শক্তিশালী বিরোধী দলের অন্যতম দাবিদার।

সমস্যা : আস্থার সংকট

প্রথম বাংলাদেশি পাইলট যখন লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরার পথে গর্বভরে ইন্টারকমে এই সুসংবাদটি জানান, তখন এক সিলেটি ভদ্রলোক বলেন, ‘আল্লাহর ওয়াস্তে বিমান থামান, আমি নেমে যাব।’ জামায়াতকে নিয়ে আস্থার সংকট অনেকটা এ রকম! জামায়াতের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এলিট শ্রেণি ও সাধারণ জনগণের একটি বড় অংশের আস্থাহীনতা। এই আস্থাহীনতার পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে—

১. গণতন্ত্র নিয়ে অনিশ্চয়তা : জামায়াত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে কি না বা করলে কতটুকু করে—এ বিষয়ে দলটি এখনো সুস্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য বার্তা সমাজের সব জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি! দলীয় ঘোষণাপত্র বা ভাষণে গণতন্ত্রের কথা থাকলেও, তাদের অনেক নেতা বা ঘনিষ্ঠ আলেমদের ওয়াজ-মাহফিলে ভিন্ন বার্তা পাওয়া যায়। এতে জনগণের মধ্যে সন্দেহ জন্মায়—জামায়াত কি একবার ক্ষমতায় গেলে ইসলামী বিপ্লবের নামে আর ক্ষমতা ছাড়বে না?

ইসলামি শাসন বনাম গণতান্ত্রিক সহাবস্থান : অনেকেই আশঙ্কা করেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়ে যাবে। আদর্শের নামে এক ধরনের ‘হালাল’ ফ্যাসিবাদ কায়েম হতে পারেÑযেখানে অন্য মত, ধর্ম বা রাজনৈতিক অবস্থান দমন করা হবে। এমনকি জামায়াতের প্রাক্তন আমির শহীদ মতিউর রহমান নিজামীর ছোট ছেলেও এ রকম আশঙ্কা প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে জামায়াতের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গাগুলো থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। অথচ এই প্রশ্নের মুখোমুখি শুধু জামায়াত নহে, পুরো বিশ্বের ইসলামি আদর্শের দলগুলো একই প্রশ্নের সম্মুখীন!

নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও আধুনিক রাষ্ট্রনীতি বিষয়ে অবস্থান : জামায়াতের অবস্থান এখনো স্পষ্ট নয় এই ইস্যুগুলোর ওপর। এ বিষয়ে জামায়াত কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। ফলে, আধুনিক ও মধ্যপন্থি চিন্তার মানুষের মধ্যে একটি ভীতি ও দূরত্ব রয়ে গেছে।

করণীয় : স্পষ্ট বার্তা ও আদর্শিক পুনঃসংজ্ঞা

জামায়াতে ইসলামী যদি সত্যিই ভবিষ্যতে শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য দল হিসেবে গড়ে উঠতে চায়, তাহলে তাদের অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে—

গণতন্ত্র ও বহুত্ববাদ নিয়ে পরিষ্কার এবং দৃষ্টিগ্রাহ্য নীতিগত অবস্থান প্রকাশ করা, যা শুধু দলীয় সভা বা মিটিংয়ে নয়, জাতীয়ভাবে প্রচারযোগ্য হবে।

ওয়াজ-মাহফিলের বার্তা দলের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা, যাতে ধর্মীয় বক্তৃতায় দলকে ঘিরে বিভ্রান্তিকর বা বিভাজন সৃষ্টিকারী বার্তা না যায়।

নতুন প্রজন্ম, নারী, সংখ্যালঘু ও আধুনিক চিন্তার মানুষদের মধ্যে আস্থা অর্জনের জন্য স্পষ্ট ও উদার ভাষায় ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রদর্শন তুলে ধরা।

স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, সংবাদমাধ্যম ও বিরোধী মতের স্বাধীনতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া, যাতে জামায়াতকে আর কেউ ‘আদর্শের নামে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের কল্পনায়’ দেখে না।

জামায়াতের রয়েছে সাংগঠনিক শক্তি, ত্যাগী কর্মীবাহিনী এবং আদর্শিক স্পষ্টতা। কিন্তু এসব যথেষ্ট নয়—গণতন্ত্রে আস্থা ও সহনশীলতা প্রদর্শনের মাধ্যমেই তারা একটি গ্রহণযোগ্য বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। না হলে, তারা হয়তো অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে, কিন্তু জাতীয় রাজনীতির মূলধারায় প্রভাব ফেলতে পারবে না।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট

বিষয়: গণতন্ত্র

আমার দেশ