বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, ভারত হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হলেও এ চুক্তি তারা এখন গায়ের জোরে মানছে না। হাসিনা টুপ করে দেশে ঢুকে যাবেন বলে যে হুমকি দেন সেটি যে বোগাস; বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ভারতের হাসিনাকে ফেরত না দেয়ায় তা প্রমাণিত হয়।

জুলাই অভ্যুত্থানের মাঝামাঝি হঠাৎ করে শেখ হাসিনা উধাও হয়ে যান। তখন সারা দেশে রটে যায়, তিনি পালিয়ে গেছেন। অনেকে খবর দেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে ভেগে গেছেন। এর সমর্থনে বিমানের ফ্লাইট নম্বরসহ রেকর্ড কেউ কেউ প্রকাশ করেন। ২২ জুলাই দেখা গেল, তিনি আবার উদয় হয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বীরদর্পে ঘোষণা করেন- ‘শেখ হাসিনা পালায়নি, শেখ হাসিনা পালায় না’। এর দুই সপ্তাহের মাথায় তল্পিতল্পাসহ পালিয়ে ভারতে এক গুপ্ত এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।

বাস্তবে এর আগেও কয়েকবার তিনি দেশ ছেড়েছিলেন। যখন দেশে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলার অনুমান করেছেন, তখনই বিদেশে চলে গেছেন। বানোয়াট কথা বলা তার স্বভাব। ৫ আগস্টে পালানোর কয়েক দিনের মধ্যে গুপ্তস্থান থেকে অডিও বার্তায় নিজের অনুসারীদের জানান, তিনি সীমান্তের কাছাকাছি আছেন, যেকোনো সময় টুপ করে দেশে ঢুকে যাবেন। পরে জানা গেল, তাকে ভারত সরকার দিল্লির একটি অতি গোপনীয় বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। বাড়িটি শনাক্ত করার সাধ্য কারো নেই। এমনকি সেই বাড়ির ত্রিসীমানায় কেউ ঘেঁষতে পারে না।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত একটি মামলায় হাসিনার বিরুদ্ধে কারাদণ্ড দেয়ার পর আবারো তিনি হুমকি দিয়েছেন, দেশে ঢুকবেন। টুপ করে ঢুকে যাবেন, এমনটি অবশ্য বলেননি। এবার বলেছেন, আদালত ডাকলে তিনি এসে মামলা মোকাবেলা করবেন। এর আগে আদালত তার খোঁজে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। তিনি সাড়া দেননি। অথচ অডিওবার্তায় বলছেন, ‘মামলার হাজিরা দেয়ার নোটিশ দিলে নিশ্চয় আমি আসব। মামলা মোকাবেলা করব, কত ধানে কত চাল, সেটা আমি দেখে নেবো।’ অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারতের কাছে তার প্রত্যর্পণ চেয়েছে। ভারত তাকে ফেরত দেয়া দূরের কথা, সরকারের চিঠির জবাবও দেয়নি। হাসিনা দিল্লির কৌশলগত একটি অস্ত্র। এ অস্ত্র ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনমতো প্রয়োগ করে যাবে। সেই লক্ষণ স্পষ্ট বোঝা যায়। সময়ে সময়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে অডিওবার্তা দিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে যাচ্ছেন।

হাসিনাকে সামাজিক মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। থাইল্যান্ডে এক সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে একই আহ্বান নরেন্দ্র মোদির কাছেও ড. ইউনূস রাখেন। সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করেন না দাবি করে মোদি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ দিকে কয়েক দফায় ভারত বেশ কয়েকটি বাংলাদেশী ইউটিউব চ্যানেল প্রচারণার অভিযোগে সেগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। যখন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের প্রায় সব মিডিয়া একযোগে প্রচারণা চালাচ্ছে, তখন এ ঘটনা ঘটে। এসব ভারতীয় মিডিয়ার কোনোটি বাংলাদেশ বন্ধ করেনি। ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ও একইভাবে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি চ্যানেল নিজ দেশে সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। অথচ সোশ্যাল মিডিয়ায় হাসিনার বক্তব্য দেয়া নিয়ে মোদি অবলীলায় ড. ইউনূসের কাছে মিথ্যাচার করলেন।

গুপ্ত স্থানে থেকে কয়েক দিন পরপর হাসিনা অডিও বক্তব্য দিলেও পালিয়ে যাওয়ার এক বছরের মতো সময়ে একবারও তাকে সশরীরে দেখা যায়নি। এভাবে নিজেকে আড়াল করার পেছনে হতাশায় মুষড়ে পড়াকে কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তার দুরবস্থা প্রকাশ হয়ে যাবে, এ আশঙ্কা থেকে তিনি ভিডিওতে আসছেন না। তার ওপর বয়সের ভারে হতশ্রী চেহারা লুকাতেও এ কৌশল নিয়ে থাকতে পারেন। অডিও ক্লিপগুলোতে তার বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে, তিনি এখনো আগের মতো বিকারগ্রস্তই রয়ে গেছেন। তিনি নিজের কোনো দোষ দেখতে পাচ্ছেন না। প্রতিপক্ষকে অসম্মান করার মজ্জাগত স্বভাব একটুও বদলায়নি। প্রতিনিয়ত মিথ্যা বলার অভ্যাসও তেমনই রয়ে গেছে। সবাইকে এলোপাতাড়ি হুমকি-ধমকি দিয়েই চলেছেন।

ক্ষমতায় থাকার সময় নিজে যেসব অপরাধ করেছেন, অডিও বার্তায় ওই একই ধরনের অপরাধ সংঘটনে ড. ইউনূস সরকার, বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্র নেতৃত্বকে অভিযুক্ত করছেন। তার বিরুদ্ধে দণ্ডদানকারী আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে মারাত্মকভাবে আক্রমণ করছেন। এ আদালত তার সময়ে গঠিত হয়েছিল। এটিকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর বিচারিক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন। এখন এটিকে আদালত বলতে রাজি নন তিনি। এ আদালতের মানসম্মান ও আত্মসম্মানবোধ নেই বলে গালাগাল করেন। তার মতে, অন্তর্বর্তী সরকার চরম বেহায়ার মতো ক্ষমতায় বসে আছে, লজ্জা-শরমও নেই। তার মতে, ইউনূস সরকারের বৈধতা নেই। দাবি করছেন, ‘জনগণই তার শক্তি, বিদেশে তার প্রভু নেই।’ সত্য হচ্ছে, সাড়ে ১৫ বছরের শাসনে তিনি জনগণ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। তার শাসনের মূল নীতি ছিল পরিবার আত্মীয়স্বজন ও দলীয় লোকদের পেটপূর্তি। এর বাইরে শুধু ভারতের স্বার্থ দেখা। ভোট ব্যবস্থাকে জাদুঘরে পাঠিয়ে পুরোপুরি ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠেন। ভারতের প্রভুত্ব মেনে নিয়ে শতভাগ দাস বনে যান মোদি সরকারের। যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে তাতে ভারতের সায় আছে কি না জেনে নিতেন। ভারতকে এভাবে প্রভু মানতে গিয়ে চীনের কাছে চরম অপমান-অপদস্থ হয়েছেন।

হাসিনা কুখ্যাত হয়ে থাকবেন তার অনন্য এক বৈশিষ্ট্যে। মিথ্যাকে তিনি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যান, যা অন্য কারো পক্ষে স্পর্শ করা কঠিন। সত্যের বিপরীত কথা এমনভাবে বলার এমন ক্ষমতা তার আয়ত্তে যে, যে কেউ তা বিশ্বাস করবে। যারা সত্যটা নিশ্চিত জানেন, তারাও ধাঁধায় পড়ে যাবেন তার জানাটা ভুল কি না; অন্তত যেটি তিনি জানেন সেখানে কোনো ফাঁকফোকর আছে কি না। হাসিনাকে অনেকে প্যাথলজিক্যাল লায়ার বলেন। এ ধরনের মিথ্যাবাদীরা সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য করতে পারেন না। হাসিনার ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন নয়। তিনি সজ্ঞানে জেনেবুঝে মিথ্যা বলেন। সারা দুনিয়ার মানুষও যদি একটি সত্য জানেন, সেটিও হাসিনা নিজের স্বার্থে বানিয়ে মিথ্যা বলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তার বিন্দুমাত্র দ্বিধা থাকে না। মিথ্যা বলায় সম্ভবত তার একমাত্র প্রতিদ্ব›দ্বী হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথমবার ক্ষমতার চার বছরে ট্রাম্প ৩০ হাজার ৫৭৩টি মিথ্যা বলেছেন। মিথ্যা শনাক্তকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এটি হিসাব করে বের করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিকরা ট্রাম্পের মিথ্যা-শঠতা ধরতে কোনো বাধার মুখে পড়েননি। হাসিনার মিথ্যা যারা ধরবেন সেই সাংবাদিকরা তার চাটুকারিতা করার চাকরি নিয়েছিলেন। সুতরাং তার বলা একটি মিথ্যা কথাও ক্ষমতায় থাকার সময় চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। কেউ গুছিয়ে এসব মিথ্যা হিসাব করার সাহসও পাননি। তবে বিভিন্ন মিডিয়ায় থাকা তার বক্তব্য এবং এখনকার অডিও বার্তাগুলো থেকে কেউ চাইলে তিনি কয়টি মিথ্যা বলছেন, এখন সেগুলো গুনে রাখতে পারেন। এ কাজে বর্তমানে বাধা দেয়ার কেউ নেই।

সর্বশেষ অডিও বার্তায় হাসিনা বলেছেন, আমি যদি ক্ষমতায় থাকতে চাইতাম হয়তো কয়েক শ’ লোক মারতে হতো, অমি তা চাইনি। বাস্তবতা হচ্ছে- তিনি সাড়ে ১৫ বছরে বিরোধী দলের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছেন। এ তালিকায় সাধারণ মানুষ, নিরপরাধ নারী, শিশু-কিশোর রয়েছে। এমনকি স্বার্থে আঘাত লাগায় নিজের দলীয় লোকদেরও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছেন। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গুপ্ত কারাগার- আয়নাঘর সংস্কৃতি চালু করেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাবাহিনীকে দেশের মানুষের নিরাপত্তা ধ্বংসের কাজে লাগিয়েছেন। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে গেছেন। নিরাপত্তাবাহিনীগুলো সঠিক ধারায় ফিরিয়ে আনা এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনো আশঙ্কা রয়ে গেছে, আবারো গুম খুন শুরু হতে পারে; গুপ্ত কারাগারও চালু হতে পারে। হাসিনার নেতৃত্বে যারা এ জঘন্য কাজ করেছিল- এর হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

ওই বার্তায় তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত শিবির করে আল্লাহ রাসূলের নাম নেয়, মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করে, তাদের ঘরে কি মা-বোন নেই, মেয়ে নেই, আত্মীয়স্বজন নেই- সেটি একবার চিন্তা করে না এরা।’ হাসিনার বক্তব্য হচ্ছে, তার রাজনৈতিক বিরোধীরা দেশে গণহারে ধর্ষণ করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এদের খাওয়াপরার সুযোগ সুবিধা দিয়ে কি অপরাধটা করলাম।’ যেন বিএনপি-জামায়াতকে খাওয়াপরার সুযোগ দিয়ে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। এখন তারা তার অনুপস্থিতিতে দেশে ধর্ষণ চালাতে পারছে। সত্যটা হচ্ছে, হাসিনার দুঃশাসনে ধর্ষণ ও নারীনিগ্রহ ব্যাপক মাত্রায় বিস্তার লাভ করে। আওয়ামী লীগ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের লোকদের জন্য সারা দেশে নারীরা অনিরাপদ ছিল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ ও বিচারব্যবস্থা ছিল অসহায়। এখন অপরাধীরা কিন্তু হাসিনার আমলের মতো পার পাচ্ছে না।

হাসিনার অডিও বার্তার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- আর্মি, পুলিশসহ নিরাপত্তাবাহিনীকে সমর্থন করে বক্তব্য প্রদান। তিনি বলেছেন, ‘এখানে পুলিশকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, সেনাবাহিনীর সদস্যদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কেউ কাউকে মারতে এলে কাউকে অর্ডার দেয়া লাগে না, এটি আইনে আছে- কিভাবে হবে।’

৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা ক্রমাগত প্রচারণা চালান যে, শত শত পুলিশ হত্যা করা হয়েছে। অন্য দিকে তিনি আস্থা রাখছেন সেনাবাহিনীর ওপর; অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চান, সেনাবাহিনীর ওপর তার আস্থা আছে। এমন বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও চরম উসকানিমূলক।

বাংলাদেশের মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের সাথে সুর মিলিয়ে হাসিনাও ‘মব জস্টিস’ নিয়ে সোচ্চার। তবে একে তিনি মব জাস্টিস বলতে নারাজ, তার ভাষায় এটি ‘মব সন্ত্রাস’। মিডিয়া যে ব্যাপারটি হাসিনার মতো লুকিয়ে ফেলতে চায় সেটি হচ্ছে, সারা দেশে হাসিনার দীর্ঘ শাসনে চলা নির্মম রাজনৈতিক ও সামাজিক পীড়ন। হাসিনার যে পাণ্ডারা এসব সন্ত্রাস চালিয়েছে তাদের ওপর পীড়িতদের তীব্র ক্ষোভ আছে। অপরাধীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ ক্ষোভ থেকে যাবে। বিচারের যথেষ্ট উদ্যোগ না নিয়ে নিপীড়িত মানুষদের ‘মব’ বলে যে সুর তোলা হচ্ছে সেটি সমাজে শান্তি-স্থিতিশীলতা আনবে না। আমাদের নিরাপত্তাবাহিনীগুলোও তাদের নিজেদের কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমা চায়নি। কিন্তু তারা মিডিয়ার ‘মব’ ন্যারেটিভের সাথে তাল মেলাচ্ছে। বাংলাদেশের মিডিয়া ও নিরাপত্তাবাহিনী পাবলিক সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে।

হাসিনা বলেছেন, জুলাইতে যে ক’ট হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তা ম্যাটিকুলাস ডিজাইনের অংশ হিসেবে হয়েছে। তিনি মূলত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন, ছাত্র-জনতা যারাই এ আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন তারা ‘জঙ্গি, সন্ত্রাসী’। ইতোমধ্যে তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় জুলাই আন্দোলনকে ‘দাঙ্গা’ বলেছেন। ভারতীয় মিডিয়া একে আইএসআই, লস্কর-ই-তৈয়েবা জঙ্গিদের কর্মকাণ্ড বলে ৫ আগস্টকে কলঙ্কিত করতে চায়। হাসিনা ও তার অনুসারীরা এবং ভারতীয় প্রপাগান্ডা মেশিন একজোট। এ চক্রকে পরাজিত করা না গেলে জুলাই বিপ্লবকে তারা ব্যর্থ করে দিতে পারে।

পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে দিতে ২০১৩ সালে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি করা হয়। ওই চুক্তিকে বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, অভিযোগ আনা হয়েছে, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, তাদের চাওয়া হলে ফেরত দিতে হবে। চুক্তি সই হওয়ার পর তৎকালীন ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধ বলেন, বাংলাদেশের যেসব অপরাধী ভারতে পালিয়ে আছে কিংবা বন্দী অবস্থায় আছে তাদের বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ চুক্তি বাস্তবায়নে ভারত সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সহযোগিতা করবে।’ বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, ভারত হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হলেও এ চুক্তি তারা এখন গায়ের জোরে মানছে না। হাসিনা টুপ করে দেশে ঢুকে যাবেন বলে যে হুমকি দেন সেটি যে বোগাস; বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ভারতের হাসিনাকে ফেরত না দেয়ায় তা প্রমাণিত হয়।

সূত্র, নয়া দিগন্ত