দেশে ১৯৭৬ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পর পর ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ায়। সে হিসাবে পাঁচ দশকের বেশি সময়ের ব্যবধানে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপের পারদ চড়ছে চলতি বছরও। পরিবেশগত বিপর্যয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিকভাবেই তাপমাত্রা বাড়ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তবে সে তুলনায় বাংলাদেশে বৃদ্ধির হারটা একটু বেশি। এতে জনজীবনের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এভাবে উচ্চ তাপমাত্রা অব্যাহত থাকলে ভেঙে পড়তে পারে জনস্বাস্থ্য।
একজন মানুষ ঠিক কতটা তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে, তা নিয়ে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার একটি গবেষণা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা অনেকের ওপর পরীক্ষাটি চালিয়েছেন। তাদের ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ও ৫৭ শতাংশ আর্দ্রতায় টানা ৯ ঘণ্টা রেখে দেখেছেন, বেশির ভাগই অসুস্থ হয়ে পড়ে। কেউ টানা ৯ ঘণ্টা থাকতেই পারেনি, আর যারা বেশি সময় ছিল তাদের বমি, ডায়েরিয়া, ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।
দেশে বিগত কয়েক বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া, ডিহাইড্রেশন বেড়ে গেছে অনেক বেশি। রাজধানী ঢাকার মতো জনবহুল শহরে মানুষের শারীরিক ও মনোজগতে বড় পরিবর্তন হচ্ছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মানুষ ও প্রাণিকুলে মহামারীসহ নানা রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের ভাষায় স্বাস্থ্য হলো মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখার নাম। প্রকৃতি কোথাও আক্রান্ত হলে সেটা মানুষকেও কোনো না কোনোভাবে আক্রান্ত করবেই। আমাদের তাপমাত্রা যেভাবে বেড়ে চলছে, প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য তো বটেই, মানবস্বাস্থ্যের জন্যও এটা হুমকি। আমরা গত কয়েক দশকে অনেক নতুন নতুন রোগ-বালাইয়ের নাম শুনেছি। তাছাড়া অনেক বিরল রোগের প্রাদুর্ভাবও বাড়তে দেখা গেছে। এগুলো সবই প্রকৃতিকে আক্রান্ত করার ফল।’
বাংলাদেশে যেভাবে প্রকৃত তাপমাত্রা ও অনুভূত তাপমাত্রা বাড়ছে, এতে গোটা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বলি, মানুষ হলো প্রকৃতির সন্তান। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির একটা কারণ তো আছেই। এর বাইরে যেভাবে দ্রুত তাপমাত্রা বেড়ে চলছে, এটা চলতে থাকলে ইকোসিস্টেমে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এরই মধ্যে আমরা বায়ুদূষণের কারণে ভুগছি। বায়ুদূষণের কারণে যেসব রোগ-বালাই বাড়ছে, সেগুলো সামাল দেয়া যাচ্ছে না। আমরা ডেঙ্গু নিয়ে ভুগছি। ডায়রিয়ার প্রকোপও বাড়ছে। এগুলো সবই অতিরিক্ত তাপমাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত।’
বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা নিয়ে গত বছর একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ১৯৮০ থেকে ২০২৩ সাল—এ পাঁচ দশকের তাপমাত্রা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পাঁচ দশকের বেশি সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ ডিগ্রির বেশি। এ সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বেড়েছে দক্ষিণাঞ্চলে, ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরাঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি। আর রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
lead-inner
গবেষণা প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়েই বেড়েছে। সেই সময় থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে প্রতি বছর গড়ে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে। বাংলাদেশের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশগত বিপর্যয়সহ নানা কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। আর ঢাকায় তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে গণপরিসর, সবুজ ও জলাশয়ের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়াকে।
দেশের সবচেয়ে উষ্ণ মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয় এপ্রিলকে। এ বছর চলতি মাসে দেশে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও দেশের সাত জেলায় তাপপ্রবাহ ছিল। তাপ বাড়ার এ প্রবণতা আজও অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বাংলাদেশে যেভাবে প্রকৃত তাপমাত্রা ও অনুভূত তাপমাত্রা বাড়ছে এতে গোটা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য ব্যাহত হচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন বিশেষজ্ঞরা। জলাবায়ু পরিবর্তনের কারণ ছাড়াও মানবসৃষ্ট নানাবিধ কারণে দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা ব্যাপকতর হচ্ছে বলে জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এপ্রিলে গরমের তীব্রতা বাড়তে থাকে। মে মাসে তীব্র গরম থাকার পর জুনে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ধীরে ধীরে বর্ষার আগমন ঘটলে তাপমাত্রার তীব্রতা কমতে থাকে। গত বছরটা ছিল আমাদের জন্য ব্যতিক্রম। তবে চলতি বছর এখন পর্যন্ত গরম তার স্বাভাবিক মাত্রাতেই আছে।’
আন্তর্জাতিক ওয়েদার বিশ্লেষণ বলছে, এ বছর তাপমাত্রা গতবারের মতো রেকর্ড ভাঙবে না। বৃষ্টিবাদলও হবে—এমনটা জানিয়ে ড. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এখানে সমস্যা যেটা হচ্ছে, ঢাকাসহ দেশের নগর এলাকায় মানবঘটিত কারণে গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে ইটভাটা, অত্যধিক কলকারখানা, আনফিট যানবাহন, বাসাবাড়ি ও অফিস-আদালতে এসির সংখ্যা বৃদ্ধি, উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কারণে তীব্র বায়ুদূষণ, অবৈজ্ঞানিক উপায়ে বর্জ্য পোড়ানো—এসবই গরমের অনুভূতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে তাপমাত্রা হয়তো আগের চেয়ে অল্প বেড়েছে, কিন্তু গরমের অনুভূতি ৫-৭ ডিগ্রির মতো বেশি মনে হয়। এজন্য জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো বন্ধ করাসহ টেকসই উদ্যোগ না নিলে আগামী দিনগুলোয় বাংলাদেশের মতো এলাকায় মরুভূমির গরম অনুভূত হবে। ফলে এখানের জনস্বাস্থ্য ও কৃষি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানির আধার, বৃক্ষ নিধন আর কংক্রিটের আচ্ছাদনের কারণে ঢাকা পরিণত হয়েছে আরবান হিট আইল্যান্ডে। ফলে নগরীর তাপমাত্রা ৩৪-৩৬ ডিগ্রি থাকলেও তার অনুভূতি ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রিতে গিয়ে পৌঁছে। যে কারণে গরমের মৌসুমে এ নগরীর তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে। বিভিন্ন এলাকায় পানিরও তীব্র সংকট তৈরি হয়। বাড়ে রোগ-বালাইয়ের প্রবণতাও।
প্রায় চারদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় উষ্ণ তাপপ্রবাহ চলছে। এর মধ্যে কিছু এলাকায় বৃষ্টি হলেও তাতে তাপ কমেনি। আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়েছে, এখন যে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে তা আজ পর্যন্তও চলতে পারে। রোববার থেকে দেশের কিছু স্থানে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। তাতে কিছুটা কমতে পারে তাপমাত্রা।
ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও উষ্ণ তাপপ্রবাহের বেশ কয়েকটি কারণ দেখছেন পরিবেশবিদরা। তারা বলছেন, এর মূলে রয়েছে ভূমি আচ্ছাদনের (সবুজ, পানি ও ধূসর বা কংক্রিট আচ্ছাদন) মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট, কংক্রিটের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি। সেই সঙ্গে ভবনের নকশায় পরিবেশ ও জলবায়ুর ধারণা অনুপস্থিত, কাচনির্মিত ভবন ও এসিনির্ভর ভবনের নকশা তৈরি, সবুজ এলাকা নষ্ট করে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ, বনায়ন না করাসহ বহুবিধ কারণ রয়েছে। ময়লার ভাগাড়, ইটভাটা, যানবাহন ও শিল্প-কারখানার ধোঁয়া থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণে নগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি বায়ুদূষণে সৃষ্ট অতিক্ষুদ্র কণার কারণেও নগরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রাকৃতিকভাবেই ঢাকা শহরে কয়েক দশক আগেও নগর পরিকল্পনার মানদণ্ড অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ সবুজ এলাকা ও জলাশয় বিদ্যমান ছিল। কিন্তু নগর এলাকায় সরু রাস্তার পাশেই সুউচ্চ ভবন নির্মাণ, সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর মাধ্যমে জলাশয়-জলাধার-সবুজ এলাকা ধ্বংস করা হচ্ছে। নির্মল বাতাস, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, শীত ও গরমের তীব্রতা থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দেয়া নগর কর্তৃপক্ষের আবশ্যিক দায়িত্ব বলে মনে করেন খোদ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘নগরবাসীকে পরিবেশগত ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রথমত, আমরা গণপরিসর ও জলাশয় ব্যবস্থাপনার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। যেগুলো বেদখল, সেগুলো উচ্ছেদ চালিয়ে দখলমুক্ত করছি। আবার নতুন নতুন জায়গায় গণপরিসর সৃষ্টি করছি। দ্বিতীয়ত, রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে আমরা সবুজায়নের কাজ করছি। এতে বস্তিবাসী আমাদের সঙ্গে কাজ করছে।’
তাপপ্রবাহের কারণে দেশে কৃষির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় দেখা দিয়েছে পানির সংকট। এতে ফল ও ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষি গবেষকরা বলছেন, রোদ বা সূর্যের আলো কৃষির জন্য ক্ষতিকারক নয়, বরং উপকারী। কিন্তু অতি তাপমাত্রা বা তাপপ্রবাহ কিংবা শৈত্যপ্রবাহ কৃষির জন্য সহায়ক নয়। সেই অসহিষ্ণু পরিস্থিতির ওপর দিয়েই যাচ্ছে এখন দেশের মানুষ।
কৃষিবিদরা বলছেন, তাপপ্রবাহের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ভালো ফলনের জন্য ফলমূল ও ফসলের গাছের গোড়ায় পানি পৌঁছানো জরুরি। গাছের গোড়ায় পানি নিশ্চিত করা গেলে তাপমাত্রা আরো ২-৪ ডিগ্রি বৃদ্ধিতে গাছের কোনো ক্ষতি হবে না। গাছের ক্ষতি না হলে ফল ও ফসলেরও কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা না। কিন্তু তাপপ্রবাহ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কমে যাচ্ছে বৃষ্টির প্রবণতাও। বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। ফলে সামনের দিনগুলোয় ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তাপপ্রবাহ তথা হিট শকে মাঠের বোরো ধানের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটছে, বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে গেলে ধানে চিটা ধরার আশঙ্কা থাকে। এ অবস্থায় ধানে ফুল অবস্থায় পানি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধানগাছের গোড়ায় সর্বদা দুই-তিন ইঞ্চি পানি ধরে রাখা দরকার।
আম, লিচু, কাঁঠাল, জাম, জামরুলসহ সব ধরনের ফল ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আম ও লিচু ঝরে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে কৃষিবিদরা বলছেন, তীব্র তাপপ্রবাহে বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বর্তমানে পোকামাকড় ও রোগ-বালাই তেমন না থাকলেও দীর্ঘমাত্রায় তাপপ্রবাহে ধান নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে, এতে আমাদের দেশেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আমরা যেভাবে কংক্রিট আচ্ছাদন দিয়েছি, তাতে তাপমাত্রাকে সহনশীল রাখার চেষ্টা না করে আমরা তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছি। ঢাকা শহরে তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণ মূলত অতিমাত্রায় কংক্রিটের আচ্ছাদন। সেই সঙ্গে সবুজ, জলাশয় ও গণপরিসর কমে আসা। তাপমাত্রা মোকাবেলায় স্বল্প, মধ্য আর দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নিতে হবে। আপাতত অতিরিক্ত তাপ থেকে স্বস্তি দিতে তীব্র গরমের দিনে ওয়ার্ক ফ্রম হোম, স্কুল বন্ধ রাখা, রাস্তায় সুপেয় পানি সরবরাহ করাসহ নানা উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। আমরা পরিকল্পনা করছি রাজধানীতে গাছের আধিক্য কীভাবে বাড়ানো যায়। তবে এ তাপপ্রবাহ সমস্যার স্বল্পমেয়াদি কোনো সমাধান নেই। রাজধানীর ক্ষেত্রে মধ্যমমেয়াদি সমাধান হলো ঢাকাকে সবুজায়ন করা আর দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হলো বিকেন্দ্রীকরণ, যার নীতিগত সিদ্ধান্ত এখনই নিতে হবে।’