শুক্রবার রাতে রাজধানীর কাকরাইলে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। শনিবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ-ওই দিন জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া-পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ পার্শ্ববর্তী আল রাজী টাওয়ারের সামনে ছড়িয়ে পড়ে, যখন সেখানে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নুরুল হক নুরসহ দলটির শীর্ষ নেতারা। এ সময় সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হন নুর। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এর আগে সন্ধ্যায় বিজয়নগরে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সাংবাদিকসহ আহত হন বেশ কয়েকজন।

জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং পরবর্তীকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বলপ্রয়োগের ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, সন্দেহ নেই। এদিনের সংঘর্ষ আপাতদৃষ্টিতে দুটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মনে হলেও কোনো কোনো মহল এর গভীর রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছেন। হামলা ও সংঘর্ষের বিষয়ে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ পালটাপালটি অভিযোগ করেছে। তবে সত্য যাই হোক, এ ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতারই প্রতিফলন। এদিকে, এ ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিএনপি, জামায়াত, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। নিন্দা এসেছে উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকেও। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, তারা বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়েছিল। তবে সেদিনের ঘটনায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের সব চেষ্টা কি সত্যিই ব্যর্থ হয়েছিল, নাকি বলপ্রয়োগই ছিল একমাত্র পথ-এ প্রশ্নের উত্তর সুষ্ঠু তদন্তেই বেরিয়ে আসবে বলে মনে করি আমরা।

তদন্তের গুরুত্ব এজন্যই বেশি, কারণ প্রকৃত সত্য বেরিয়ে না এলে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভুল বার্তা যেতে পারে। একই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার না হলে ভবিষ্যতে দেশে এমন আরও সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থেকেই যাবে, যা আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের গণতন্ত্র ও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য ইতিবাচক হবে না। সরকার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জনগণের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, এটাই কাম্য।

সূত্র, প্রথম আলো