‘আমার ফাঁসি চাই’ বইটি মতিয়ুর রহমান রেন্টু লিখেছিলেন ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগের শাসনামলে। লেখক খুব কাছে থেকে দেখেছিলেন শেখ হাসিনাকে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে লেখা বইটিতে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রের বিভিন্ন ভয়াবহ দিক ফুটে উঠেছে। আলোড়ন সৃষ্টি করা বইটি হাসিনা সরকার নিষিদ্ধ করেছিল, পাশাপাশি মতিয়ুর রহমান রেন্টু সস্ত্রীক অবাঞ্ছিত ঘোষিত হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের পরিকল্পনায় জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়িত হয়েছিল এবং খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে নাগেশ্বরী নদীর ফেরির সারেংকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল বলে বইটিতে দাবি করা হয়। আরও বলা হয়, মিটিং-মিছিলে লাশ পড়ার খবর শুনলে খুশি হয়ে উঠতেন খুনি হাসিনা।

শেখ হাসিনা অনেক বদগুণ রপ্ত করেন পারিবারিক সূত্রে। পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে যিনি কোনো প্রকার স্বাধীনতা ঘোষণা না দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের ৯ মাস রণাঙ্গনে অনুপস্থিত থেকে মুক্তিযুদ্ধের নেতা হয়ে যান। অপরদিকে ১৯৬৯ সালে যেসব বাম রাজনৈতিক দল (পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি এবং সিরাজ সিকদারের পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন পরবর্তীকালে পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি) সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধ ও জনযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কায়েমের ঘোষণা দেয় এবং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে থাকা স্বাধীনতাকামী নিউক্লিয়াস (পরবর্তীকালে জাসদ)-সবাই শেখ মুজিবুর রহমানের রোষানলে পড়ে। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেই মুজিব মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজশাহীর মুক্তাঞ্চলে অবস্থানরত পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, সরাসরি গুলি চালিয়ে হত্যার আদেশ দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। এরপর তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে আসা জাসদ (নিউক্লিয়াস) নিধন শুরু করেন।

‘নকশাল দেখামাত্র গুলি করো’

এরপর শেখ মুজিবুর রহমানের সরাসরি নির্দেশে সমগ্র বাংলাদেশে হাজার হাজার প্রগতিশীল (জাসদসহ) নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। খুলনার এক জনসভায় তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ প্রদান করেন: ‘নকশাল দেখামাত্র গুলি করো’।

‘নকশাল কি কারও কপালে লেখা থাকে?’

ন্যাপের সভাপতি (আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি) মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রমাদ গুনলেন। নেতাকর্মীদের পল্টনে জনসভা আয়োজনের নির্দেশ দিলেন তিনি। লাখো মানুষের সভায় শেখ মুজিবকে উদ্দেশ করে মওলানা বললেন, ‘মুজিব, নকশাল কি কারও কপালে লেখা থাকে যে পুলিশ তাকে দেখে দেখে গুলি করবে?’

স্বাধীন দেশে ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হত্যা

রাজনৈতিক সমাবেশে পাখির মতো গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যা করা আওয়ামী লীগের পুরোনো স্বভাব। ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবসংলগ্ন এলাকায় ইউনাইটেড স্টেটস ইনফরমেশন সার্ভিস (ইউএসআইএস)-এর সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে পুলিশ ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে গুলি করে ছাত্রনেতা কাদের ও মতিউরকে হত্যা করা হয়। এ সময় অসংখ্য ছাত্র আহত হয়। একই কায়দায় ১৯৭৪ সালের এক সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ির সামনে জাসদের সমাবেশে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয় মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের।

সিরাজ সিকদার হত্যা

১৯৭৫ সালের ইংরেজি নববর্ষের দ্বিতীয় দিনটিতে ‘পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি’র প্রধান নেতা সিরাজ সিকদার মুজিব সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর তৎকালীন সরকারপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে দম্ভের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘কোথায় আজ সিরাজ সিকদার?’। এ হত্যাকাণ্ডের তিন সপ্তাহ পর শেখ মুজিবুর রহমান সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে বাকশাল কায়েম করে নিজে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ফ্যাসিস্ট হিসাবে আবির্ভূত হন। এরপর শেখ মুজিবের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের নামটি সম্পর্কে এক ভীতিকর অনুভূতি হতে থাকে মানুষের মনে। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সামরিক অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবুর রহমান পরিবারসহ নিহত হলে রাজনৈতিক দৃশ্যপট পালটে যায়। শেখ মুজিবুর রহমানের সাড়ে তিন বছরের দুঃশাসন এবং দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ ছিল। এ কারণেই দীর্ঘ ২১ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদদের ভুলের কারণে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা জাতীয় পার্টির সমর্থনে ক্ষমতায় আসার সুযোগ পায়।

বিডিআর হত্যাকাণ্ড

আধিপত্যবাদী শক্তির মদদপুষ্ট হয়ে ২০০৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে অজনপ্রিয় আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসার পরপরই, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) দরবার হলে হামলা করে ৫৭ নিরস্ত্র সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। এরপর হত্যা, খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, ব্যাংক ডাকাতি, আধিপত্যবাদী শক্তির গোলামি করা এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে মানুষের ঘৃণার পাত্র হয় দলটি। এর ধারাবাহিকতায়, ২০১৩ সালে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে নির্বিচারে মুসল্লিদের গুলি করে হত্যা করার পর পৈশাচিক উল্লাসে মেতে ওঠে আওয়ামী লীগ। তাদের হত্যাকাণ্ড এবং উল্লাস চলতে থাকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত।

আবারও ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন

বাংলাদেশের অত্যাচারিত জনগণ ভাবতে শুরু করেছিল, নিজ ভারতে অবস্থানরত হাসিনা নিজের ভুল বুঝতে পেরে চুপচাপ থাকবেন। কিন্তু তিনি নীরব থাকেননি। শেখ হাসিনার নির্দেশেই সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ১৬ জুলাই, ২০২৫-এ ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি পণ্ড করতে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে।

ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা

পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুই দিন আগে আশপাশের গ্রামগুলো থেকে গোপালগঞ্জ শহরে হাজার হাজার সন্ত্রাসী জড়ো করে নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। এ চক্রের মূল লক্ষ্য ছিল জুলাই, ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের নেতারা সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে পারলেও তাদের জীবিত বের হতে দেওয়া হবে না। এটি ছিল ঠান্ডা মাথায় জুলাই অভ্যুত্থানের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করার শেখ হাসিনার এক অশুভ নীলনকশা ও পরিকল্পনা। এনসিপি নেতাদের লাশ পড়লে রেন্টুর বইয়ে বর্ণনা মোতাবেক আবার পৈশাচিক আনন্দে মেতে উঠতেন হাসিনা।

চরিত্র বদলায় না

গোপালগঞ্জের ঘটনা প্রমাণ করল, আওয়ামী লীগ তার চরিত্র কখনো বদলাবে না। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে না গিয়ে গোপালগঞ্জকে ভিন্ন পরিচয়ে পরিচিত করেছেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর পুলিশসহ সব প্রতিষ্ঠানে গোপালগঞ্জের অযোগ্য লোকজন বসিয়ে দেন তিনি। সাধারণ মানুষ এদের সে সময় ‘গোপালি’ বলে ডাকা শুরু করে। গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণকারী অনেক যোগ্য ও ভালো লোক নিজ জেলার নামে পরিচিত হতে লজ্জা পেতেন। এমনকি আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী প্রশাসনে ব্যাপকভাবে গোপালিকরণ পছন্দ করতেন না। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় নেতা হয়েও সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠতে পারেননি এবং সে কারণে এনসিপির নেতাদের রুখে দেওয়ার জন্য গোপালগঞ্জ ছাড়া অন্য কোথাও পরিকল্পনা গ্রহণ করার চিন্তাও করেননি। এগুলো করতে গিয়ে তিনি গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষকে ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তির এজেন্ট হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।

গোপালগঞ্জের নাম বদলে যেতে পারে

পৃথিবীতে বহু দেশের নাম বদলে গেছে সময়ের ব্যবধানে, বদলে গেছে অনেক শহর-বন্দর ও গ্রামের নাম। জুলাই ১৬, ২০২৫-সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনার কারণে গোপালগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তনের জন্য দাবি উঠতে পারে। এ প্রসঙ্গে পুরোনো ঘটনা হলো : ডিসেম্বর ২৯, ২০১৩ ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ নামে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। এতে যোগদান করার কথা ছিল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। যথাসময়ে কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য বিএনপির কার্যালয় নয়াপল্টনে যাওয়ার উদ্দেশে বেগম জিয়া গাড়িতে উঠলেও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বাধার মুখে তাকে গাড়ি থেকে নেমে ঘরে ফিরতে হয়েছিল। দুই ঘণ্টা অনবরত চেষ্টা করেও গুলশানের বাসা থেকে বের হতে না পেরে পুলিশ, সরকার ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া। এ সময় গোপালগঞ্জের নামই বদলে যাবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে তাকে ঘিরে থাকা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন : ‘দেশ কোথায়? গোপালি? গোপালগঞ্জের নামই বদলে যাবে। গোপালগঞ্জের নামই থাকবে না। যারা এসব করছেন, আপনাদের ওপর আল্লাহর গজব পড়বে।’

স্মরণীয় হয়ে থাকবে মুক্তিযুদ্ধ এবং জনযুদ্ধ

বাংলাদেশে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ যেমন স্মরণীয় হয়ে থাকবে, ঠিক তেমনি ২০২৪-এ আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সংঘটিত বিনা অস্ত্রের জনযুদ্ধ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

আধিপত্যবাদী শক্তির মদদপুষ্ট গোষ্ঠী জুলাই বিপ্লবকে অবমূল্যায়ন করে ‘গণ-অভ্যুত্থান’ ‘আন্দোলন’ ইত্যাদি বলে অভিহিত করছে ঠিক, যেমনটি ১৯৭১-কে বলা হতো ‘গণ্ডগোলের বছর’। নাম যাই দেওয়া হোক না কেন, ভবিষ্যতে জুলাই-আগস্টকে বিপ্লব বলেই অভিহিত করা হবে।

দেশপ্রেমিকদের উত্থান ঠেকাতে চায়

ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তি বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক নেতাকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠতে দিতে চায় না। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে এ কারণেই সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। জাতির স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি মাথায় রেখেই বাংলাদেশে সৎ, দেশপ্রেমিক, যোগ্য এবং কঠোর পরিশ্রমী রাজনৈতিক নেতাদের নির্ভয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

এনসিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের দেশপ্রেমিক নেতারা যখনই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এগিয়ে যেতে চাইছেন, তখনই তাদের চলার পথ কণ্টকাকীর্ণ করার জন্য ফ্যাসিস্টের অনুগামী দুষ্টু ব্যবসায়ী চক্র বিপুল পরিমাণে অর্থ ব্যয় করে চলেছে। তাদের এখনো স্বপ্ন, ফ্যাসিস্ট স্বল্প সময়ের মধ্যে ফিরে আসবে-যাকে আজীবন ক্ষমতায় রাখার জন্য এ চক্র এক ব্যবসায়ী সম্মেলনে শপথ নিয়েছিল।

ব্যবসায়ী চক্র ও মাফিয়াগোষ্ঠী সক্রিয়

পতিত ফ্যাসিস্টের মদদপুষ্ট দুষ্টু ব্যবসায়ী চক্র ও মাফিয়াগোষ্ঠী আমদানিতে ‘ওভার ইনভয়েসিং’ এবং রপ্তানিতে ‘আন্ডার ইনভয়েসিং’-এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে এবং পাশাপাশি চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী এবং অসাধু আমলাদের জটিলতা সৃষ্টির কারণে নিরীহ, সৎ ব্যবসায়ীরা জুলুমের শিকার হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যবসা- বাণিজ্যের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। নির্বাচনের আগেই এ চক্রকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।

সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র

বাংলাদেশে সৎপথে থাকা এবং আইন মেনে চলা ব্যক্তিদের ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সাহায্য করা খুব কঠিন। কারণ বেআইনি কার্যকলাপে সিদ্ধহস্ত সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর হাতে রাষ্ট্রযন্ত্র বন্দি হয়ে আছে। এ বন্দিশালা থেকে রাষ্ট্রকে মুক্ত করতে হলে চালিয়ে যেতে হবে অবিরাম সংগ্রাম, তৈরি করতে হবে নতুন শক্তি, নতুন চিন্তাধারা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে নতুন মুক্তিসংগ্রামীদের। এ মুক্তিসংগ্রামকে মোকাবিলা করার জন্য বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সবাইকে নিয়ে জাতীয় নির্বাচন চায় ভারত। জুলাই ১৭, ২০২৫-এ নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

গোপালগঞ্জে সহিংসতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাওয়া হয়েছিল জয়সোয়ালের কাছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আপনারা জানেন। একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে আমরা (বাংলাদেশে) নির্বাচনকে স্বাগত জানাই, যেটা অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং যাতে সবার অংশগ্রহণ থাকে।’ ভারতের অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের সংজ্ঞা হলো আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন, আর পশ্চিমা বিশ্বের মতামত হলো জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি গোপালগঞ্জে বন্দি : গোপালগঞ্জ কি ভারতের কোনো অঙ্গরাজ্য? প্রশ্ন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গোপালগঞ্জ যদি ভারতের কোনো অঙ্গরাজ্য না হয়, তাহলে কেন ভারতে বসে শেখ হাসিনা যে হুকুম দেন, তা সেখানে পালিত হবে? এ জেলা কি বাংলাদেশের বাইরে? গোপালগঞ্জে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর জুলাই ১৬-এর হামলা প্রসঙ্গে এ কথা বলেন বিএনপির এ নেতা।

অধঃপতন

গোপালগঞ্জে এ ধরনের অরাজনৈতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ জাতীয় পর্যায় থেকে আঞ্চলিক দলে রূপান্তরিত হয়েছে এবং খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে দলটি জনগণের মন থেকে হারিয়ে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এবং মতিয়ুর রহমান রেন্টু লিখিত বইয়ে ‘আমার ফাঁসি চাই’ শিরোনামের পরিবর্তে ‘শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই’ দাবিতে বাংলাদেশের মানুষ সোচ্চার হয়ে উঠবে।

মেজর (অব.) মনজুর কাদের : সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য।

সূত্র, যুগান্তর