দেশের তরুণ সমাজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মব বা সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খল জনতার দৌরাত্ম্যের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়তা প্রদর্শন করতে না পারায় তারা হতাশও। তারুণ্য চায় শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে আমূল সংস্কার। সাধ্যের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশন এইডের জরিপে এ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। জুলাই গণ আন্দোলন-পরবর্তী প্রায় এক বছর সময়কালে দেশে রাজনৈতিক, শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান বিষয়ে তারুণ্যের ভাবনা নিয়ে এ জরিপের ফলাফল সোমবার প্রকাশ হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ তরুণের মতে, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় আগুন দেওয়া, দস্যুতা ও চুরি; মব সন্ত্রাস এবং পক্ষপাতদুষ্ট গ্রেপ্তার ও বিচার প্রক্রিয়া সর্বসাধারণের জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে। তারা চান- দুর্নীতি-দুরাচার-স্বজনপ্রীতির অবসান; প্রভাবমুক্ত শক্তিশালী বিচারব্যবস্থা, সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশ। রাজনীতিতে তাদের তেমন আগ্রহ নেই। জরিপে অংশ নেওয়া ৮৩ শতাংশ তরুণ জানান, রাজনীতিতে যোগ দিতে তারা আগ্রহী নন। কারণ, রাজনৈতিক সহিংসতা, রাজনীতিতে দুর্নীতির ব্যাপক চর্চা অথচ নৈতিকতার দুঃখজনক ঘাটতি। সব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন প্রশ্নে তারা দোদুল্যমান। অনেকেই আশাবাদী, অনেকে নিশ্চিত নন। তবে বিশেষজ্ঞের মতে, সংস্কারের একটা সুযোগ এসেছে। এটাকে কাজে লাগাতে পারলে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের চেতনা ও প্রত্যাশার বাস্তবায়ন সম্ভব। আগামী নির্বাচনে ৭৭ শতাংশ তরুণ ভোট দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। জরিপ অনুযায়ী তাদের ধারণায়-ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে সর্বাধিক ৩৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট পাবে বিএনপি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে জামায়াতে ইসলামী। তারা ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোট পাবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাবে ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। জরিপে দেশের তরুণ প্রজন্মের সাম্প্রতিক ভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু এটাই চূড়ান্ত বা অপরিবর্তনীয় ভাবার কারণ নেই। এর পরিবর্তন হতে একটুও সময় লাগে না। সংশ্লিষ্টদের যে কোনো একটি পদক্ষেপ, সিদ্ধান্ত, মন্তব্য বা নেতৃত্বের নৈতিক দৃঢ়তা-ঔদার্য কিংবা কারও স্খলনই রাতারাতি দাবার ছক উল্টে দিতে যথেষ্ট। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। ভালো বা মন্দ হওয়া জোয়ার-ভাটার মতো। আর এটা দেশের গোটা জনগোষ্ঠী বা অন্যান্য সব বয়সের মানুষের মতামতও নয়। বিশেষ করে, রাজনীতির মতো সংবেদনশীল বিষয়ে তরুণদের ভাবনাকে শতভাগ সংগত বিবেচনা করা বিজ্ঞোচিত হবে না। তবে আজকের এই তরুণ-তুর্কিদের ভাবনা থেকে আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণে ধারণা-পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন- সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সব অংশীজন। বোধ করি তাতে সব পক্ষেরই কল্যাণ।
সম্পাদকীয়
বিবেচনায় নিলে কল্যাণ
তারুণ্যের ভাবনা
তারুণ্য চায় শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে আমূল সংস্কার। সাধ্যের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশন এইডের জরিপে এ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। জুলাই গণ আন্দোলন-পরবর্তী প্রায় এক বছর সময়কালে দেশে রাজনৈতিক, শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান বিষয়ে তারুণ্যের ভাবনা নিয়ে এ জরিপের ফলাফল সোমবার প্রকাশ হয়।