অবশেষে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশে দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে এ অধ্যাদেশ (প্রথম সংশোধন) নিয়ে আপত্তির নিষ্পত্তি করা হয়েছে। দ্বিতীয় সংশোধনীর বিধান অনুযায়ী, কোনো কর্মচারী একক বা দলগতভাবে সরকারি কাজে বাধা দিলে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করলে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর ও নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া হবে। কমিটি গঠনের পর ৩১ কার্যদিবসের মধ্যে এসব শাস্তি দিতে পারবে সরকার। দণ্ড আরোপের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রিভিউ করা যাবে। সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ জারির পর বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি যুগান্তরকে জানিয়েছেন, ‘সরকারি চাকরি আইনের দ্বিতীয় সংশোধনীতে কর্মচারীদের আপত্তির ধারাগুলো সংশোধন করা হয়েছে। এতে আমরা সন্তুষ্ট। এ সংশোধনীকে আমরা স্বাগত জানাই।’

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫-এর প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই এটিকে বৈষম্যমূলক কালো আইন অভিহিত করে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। আন্দোলনকারীরা অধ্যাদেশটি প্রত্যাহারের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেন। কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে সরকারি অফিসে কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। এ পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাদেশটি দ্বিতীয়বার সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। উল্লেখ্য, প্রথম সংশোধনীর পর অধ্যাদেশে অনানুগত্যের কারণে যে কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান ছিল, যা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আপত্তি ছিল তাদের। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ‘আনুগত্য’ শব্দটি তুলে দিয়ে সে জায়গায় ‘সরকারের বৈধ আদেশ’ যুক্ত করা হয়। প্রথম সংশোধনীর পর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আশঙ্কা করছিলেন, ভবিষ্যতে আইনটির অপব্যবহার হতে পারে। অনেক জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ এ কথাও বলেছিলেন যে, ওই অধ্যাদেশ সংবিধানবিরোধী।

আমরাও বলে আসছিলাম, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫-এর যে ধারাগুলোর বিষয়ে কর্মচারীদের আপত্তি রয়েছে, সরকারের উচিত সেগুলোর যথাযথ ব্যাখ্যা তুলে ধরা অথবা এক্ষেত্রে ভাষাগত পরিবর্তন করা। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে অপব্যবহার বা নিবর্তনের আশঙ্কা আছে, এমন ধারাগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া। স্বস্তির বিষয়, সরকার দ্বিতীয়বার সংশোধনের মাধ্যমে অধ্যাদেশটির আপত্তির জায়গাগুলোয় পরিবর্তন এনেছে। আমরা আশা করব, দ্বিতীয় সংশোধনীর মধ্য দিয়ে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।

সূত্র, যুগান্তর