মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্টও যে মোনাফেক হতে পারেন, সেটার সর্ব নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরান তো আমেরিকার কোনো পাকা ধানে মই দেয়নি। অথচ, কোনো কারণ নাই, ইরানের কোনো অপরাধ নাই, তারপরেও সরাসরি আমেরিকা ইরান আক্রমণ করেছে। আক্রমণের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে, তিনি ইরানে হামলা চালাবেন কি না সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন ২ সপ্তাহ পর। প্রথম কথা হলো, তিনি কেনো অযাচিতভাবে ইরান আক্রমণ করবেন? তারপরেও যখন ২ সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন সেখানে তার মাথায় এত বড় কোন্ আকাশ ভেঙ্গে পড়লো যে মাত্র ২ দিন পর তৃতীয় দিনে একটানা ৩৭ ঘণ্টা উড়ে এসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসমূহে অন্তত ১০টি মাটি ভেদ করা বোমা মারতে হলো? এর মাধ্যমে এবং মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার অতীতের আগ্রাসী হামলার মাধ্যমে বিশ^বাসীর নিকট সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়ে গেলো যে, এই পৃথিবীতে মুসলিম জাহানের সবচেয়ে বড় দুশমন হলো আমেরিকা। এই আমেরিকা ইরাকে মিথ্যা অজুহাতে আক্রমণ করেছে এবং একটি সমৃদ্ধ, সম্পদশালী এবং শক্তিশালী দেশকে তছনছ করে দিয়েছে। ইরাকে হামলার সময় বলা হয়েছিলো যে, ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে। বহুবার ইরাক এবং তার প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন বলেছেন যে, তাদের কাছে কোনো গণবিধ্বংসী অস্ত্র নাই। তিনি আমেরিকাকে এবং জাতিসংঘকে আহবান জানিয়েছিলেন, তারা আসুক এবং দেখে যাক, ইরাকে কোনো গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে কিনা। কিন্তু ক্ষমতামদমত্ত আমেরিকা ঐসব সত্য-মিথ্যার কোনো ধার ধারেননি। সরাসরি ইরাকের ওপর হামলা করেছে। আগেই বলেছি যে, আমেরিকা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। সেই দেশের সামনে কি টিকতে পারে ইরাক? ফলে ইরাকের ভাগ্যে যা ছিলো তাই হয়েছে। তেলসমৃদ্ধ একটি দেশ আজ আমেরিকার ক্ষমতার দর্পের কাছে মাথানত করে আছে। আজ ইরাক বিজয় করে আমেরিকা সেখানে ২টি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করেছে। একই ঘটনা আফগানিস্তানেও। তবে আফগানরা বীরের জাতি। শত শত বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা নাই যে বীর আফগানরা কারো বশ্যতা স্বীকার করেছে। সোভিয়েট ইউনিয়ন ১০ লক্ষ সৈন্য নিয়ে আফগানিস্তান দখল করেছিলো গত ১৯৮৯ সালে। ১০ বছর ধরে আফগানরা পাহাড় পর্বতে, জনগণের মাঝে মিশে গেরিলা যুদ্ধ করেছে। ১০ বছরের যুদ্ধ সোভিয়েট ইউনিয়নের অর্থনীতি সামাল দিতে পারেনি। তাই কমিউনিস্ট সোভিয়েট ইউনিয়নকে লজ্জার সাথে আফগানিস্তান থেকে পাততাড়ি গুটাতে হয়েছে। এর পর ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আমেরিকা হামলা করে এবং দেশটি দখল করে। আফগানিস্তান দখলে রেখেছিলো ২০ বছর। এই ২০ বছর আফগানরা কারো সাহায্য পায়নি। তারপরেও তারা আমেরিকার বশ্যতা স্বীকার করেনি। ২০ বছরে আফগান যুদ্ধে আমেরিকা খরচ করেছে ৩ ট্রিলিয়ন ডলার। তারপরেও আফগানদেরকে পরাজিত করতে না পেরে ২০ বছর পর তাদেরকে লেজ গুটিয়ে পালাতে হয়েছে। আজ বীর আফগানরা রাশিয়া-আমেরিকা কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে বীর দর্পে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। লিবিয়া আফ্রিকার আর একটি তেল সমৃদ্ধ দেশ। এই দেশটিকে সমৃদ্ধির মহাসড়কে উন্নীত করেছিলেন দেশটির শাসক কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি। আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ আত্মীয় লিবিয়ায় চাকরি করেছেন। তখন ছিলো গাদ্দাফির শাসন। তিনি আমাকে বলেছেন, এত শান্তি এবং শৃঙ্খলা লিবিয়ার মতো অন্য কোনো দেশে তিনি পাননি। রাতে দরজা খুলে ঘুমিয়ে পড়লেও কোনো ভয় ছিলো না। চীনের কমিউনিস্ট নেতা মাও সেতুংয়ের রেড বুকের মতো গাদ্দাফিও রচনা করেছিলেন গ্রীন বুক। রেড বুকে যেমন ছিলো কমিউনিজমের সারকথা, তেমনি গ্রীন বুকে ছিলো পবিত্র ইসলামের মর্মবানী। লিবিয়াতে গাদ্দাফি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রতিটি লিবিয়ানের একটি বাড়ি থাকবে। তার নিজস্ব বাড়ি হবে সর্বশেষ বাড়ি। এমন একজন গণমুখী শাসকের বিরুদ্ধে আমেরিকা ন্যাটোকে লেলিয়ে দিয়েছিলো। সেই ন্যাটো লিবিয়ায় হামলা করে এবং কর্নেল গাদ্দাফিকে হত্যা করে। আজ লিবিয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে কেবল মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। লিবিয়াতে আমেরিকার অঙ্গুলি হেলনে যেমন কর্নেল গাদ্দাফিকে হত্যা করা হয়েছে, তেমনি ইরাকে আমেরিকার নির্দেশে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ॥দুই॥ ৩টি মুসলিম দেশের সর্বনাশ করে এবার আমেরিকা তার কালো থাবা বিস্তার করেছে ইরানের দিকে। আমেরিকার এই সর্বনাশা থাবা সম্পর্কে ৫ দিন আগে নিহত গাদ্দাফির কন্যা আয়েশা গাদ্দাফি সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। ইরানের জনগণের প্রতি এক আবেগময় আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ওহে ইরানের গর্বিত ও সংগ্রামী জনগণ! আমি এমন একজন নারী, যার দেশ ধ্বংস হয়েছে শত্রুর হাতে নয়, বরং পশ্চিমাদের মিষ্টি কথার ফাঁদে। তারা আমার বাবাকে বলেছিল, ‘পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ত্যাগ করো, বিশ্ব তোমার জন্য খুলে যাবে।’ আমার বাবা বিশ্বাস করেছিলেন, কিন্তু ফলাফল ছিল বেদনাদায়ক। ন্যাটোর বোমায় লিবিয়া ছারখার হয়ে গেল। আমরা হারালাম স্বাধীনতা, সম্মান আর ঘরবাড়ি। ইরানের ভাই ও বোনেরা! তোমাদের দৃঢ়তা, নিষ্ঠা ও আত্মমর্যাদা এই উপমহাদেশে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যারা মাথা নত করে, তারা ইতিহাসে হারিয়ে যায়; আর যারা সংগ্রাম করে, তারা চিরকাল বেঁচে থাকে মানুষের হৃদয়ে। আত্মসমর্পণ নয়, প্রতিরোধই জাতির গৌরব। পশ্চিমাদের প্রতিশ্রুতি যতই মধুর হোক না কেন, তারা শেষ মেশ ধ্বংসই ডেকে আনে। ফ্রান্স থেকে একজন লিখেছেন, দুই সপ্তাহ পর ডোনাল্ড ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নেবেন। এটা ছিলো মিথ্যার মুখোশ। ট্রাম্প অপেক্ষা করেননি। কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই বোমা বর্ষণ শুরু করেছে ইরানের আকাশে। তারা ভাবছে ইরানকে ধ্বংস করবে। হয়তো ইরানকে ভস্মে পরিণত করা যাবে। কিন্তু পরাজিত? না কখনো না। ইরান শুধুই একটা রাষ্ট্র নয়, এটা একটি প্রতিরোধের নাম, আত্মমর্যাদার প্রতীক। অটল দাঁড়িয়ে থাকবে ইরান। হয়ে উঠবে একবিংশ শতাব্দীর স্ট্যালিনগ্রাদ। কারণ, এই লড়াই শুধু মাটি কিংবা রাজনীতির নয়। এটা আদর্শের লড়াই। মহান ইসলামী জীবনাদর্শের লড়াই। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বোমারু বিমান বি-২ কি ধ্বংস করতে পেরেছে? ২২ জুন রবিবার দৈনিক ইনকিলাবের অনলাইনের খবর, ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কথা নিশ্চিত করে ইরান জানিয়েছে, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানেও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই তিনটি পরমাণু কেন্দ্রের পারমাণবিক উপকরণ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই তিন পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো পদার্থ নেই যা তেজষ্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ সময় রোববার (২২ জুন) সকালে লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ইরানে চালানো এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান অংশ নিয়েছে। এরপর ইরানের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়টি জানানো হয়।Local tourism ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির উপ রাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিন বলেন, আগেই আমরা তিনটি পরমাণু কেন্দ্র খালি করে ফেলেছিলাম। যদি ট্রাম্পের কথা সত্যি হয়ও আমরা বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়িনি। কারণ, পারমাণবিক উপকরণ আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। ॥তিন॥ ইনকিলাবের সুপ্রিয় পাঠক ভাইয়েরা, আমি এই লেখাটি লিখছি ২২ জুন রাতে। লেখাটি যেদিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম সেই দিক পরিবর্তন করতে হলো রাত পৌনে ১০টায় ইনকিলাবের অনলাইন সংস্করণের আর একটি খবরে। খবরটি পড়ে মুসলমান হিসাবে মনে নতুন করে আশা জাগলো। খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে সাম্প্রতিক আমেরিকান বিমান হামলার পর বেশ কয়েকটি দেশ এখন ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (টুইটার) একাধিক পোস্টে মেদভেদেভ বলেছেন, ইসফাহান, নাতানজ এবং ফোরডোতে মার্কিন অভিযান কেবল তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থই হয়নি বরং বাস্তবে বিপরীত ফলাফলও এনেছে। এদিকে রুশ সমর্থন আদায় করার জন্য ২২ তারিখ রাতেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরঘাচির মস্কো যাওয়ার কথা। ২৩ জুন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে ইরানের সুপ্রিম লিডার আলী খামেনির একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছানোর কথা। এর মধ্যে মিস্টার মেদভেদেভ দাবি করেছেন যে, আমেরিকার সাঁড়াশী বিমান হামলা ৩টি পারমাণবিক স্থাপনার তেমন একটা ক্ষতি করতে পারেনি। মেদভেদেভ আরো বলেন, এখন থেকে আগামী দিনগুলিতে রাশিয়া ও ইরান যৌথভাবে পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে শুরু করবে। ॥চার॥ মঙ্গলবার যখন এই লেখাটি প্রকাশিত হবে তার মধ্যে অনেক কিছুই ঘটে যাবে। পাশ্চাত্যের একজন বোমা বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, আমেরিকা পারমাণবিক স্থাপনাসমূহে যেসব বোমা ফেলেছে সেগুলি ভূগর্ভের ২০ ফুট নিচ পর্যন্ত যেতে পরে। কিন্তু ইরানের পারমানবিক বোমা অথবা বোমা তৈরির উপকরণ ভূগর্ভের অন্তত এক মিটার নিচে রক্ষিত আছে। ভূগর্ভের অতো অভ্যন্তরে প্রবেশ করার মতো বোমা আমেরিকা আজও বানাতে পারেনি। একটি কথা এখানে পরিষ্কার বলা দরকার। ১৩ জুন আসলে ইসরাইল ইরান আক্রমণ করেনি। সামনে ইসরাইলকে দিয়ে পেছন থেকে আমেরিকা ইরান আক্রমণ করেছিলো। কিন্তু যখন তারা দেখে যে ইরানের ক্লাস্টার বোমা এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের আয়রন ডোমের তৃতীয় স্তরও ভেদ করেছে তখন পেছন থেকে আমেরিকা সরাসরি সামনে এসেছে। এবার তাই যুদ্ধ হবে আমেরিকা বনাম ইরানের। ইসরাইলের আয়তন মাত্র ২২ হাজার ১৪৫ বর্গ কিলোমিটার। পক্ষান্তরে ইরানের আয়তন ১৬ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৯৫ বর্গ কিলোমিটার। অর্থাৎ ইরান ইসরাইলের চেয়ে ৭৫ গুন বড়। সুতরাং ইরানের রয়েছে স্ট্র্যাটেজিক ডেপথ। পক্ষান্তরে এই স্ট্র্যাটেজিক ডেপথ ইসরাইলের মোটেই নাই। ইরানে বোমা ফেলার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য আমি সিএনএন-এ শুনলাম। তিনি ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহবান জানিয়েছেন। ইরান তার জবাবে ইসরাইলে ২৩টি হাইপারসনিক ক্ষেপনাস্ত্র ছুঁড়েছে। এএফপি এবং রয়টার্সের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে যে, ইরানের কাছে এখনো অন্তত ৩ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। আরেকটি খবরে বলা হয়েছে যে, ২টি জায়ান্ট চীনা পরিবহন বিমান ইরানের আকাশে প্রবেশের পর পরই মিলিয়ে গেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সব বিমান চীনা অস্ত্র বোঝাই ছিলো। তারা ইরানের আকাশে ঢোকার পর ইরানের মাটিতে অবতরণ করেছে এবং ঐসব অস্ত্র খালাস করেছে। ট্রাম্প যেখানে নিঃশর্তে আত্মসমর্পণের কথা বলেছেন, সেটা শুনে ইয়েমেনের হুতি যোদ্ধারা হুঙ্কার দিয়েছেন যে, আত্মসমর্পণ নয়, বরং এবার আসল যুদ্ধ শুরু হচ্ছে। একই কথার প্রতিধ্বনি করেছে লেবাননভিত্তিক হেজবুল্লাহ এবং গাজা ভিত্তিক হামাস। মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার রয়েছে ১৯টি ঘাঁটি। এই ১৯টি ঘাটিতে রয়েছে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন। এবার শুরু হবে ঐসব ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। শুরু হবে মার্কিন নাগরিক নিধন। যেখানেই মার্কিনী পাওয়া যাবে সেখানেই তাদেরকে হত্যা করা হবে। শুরু হতে যাচ্ছে যুদ্ধের নতুন ডাইমেনশন।

Email:[email protected]

সূত্র, ইনকিলাব