স্বাস্থ্য খাতে টেকসই অর্থায়ন ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়। বর্তমানে এ খাতে বাজেটের মাত্র ৫ শতাংশ বরাদ্দ হয়, যা অপ্রতুল। কমিশন প্রস্তাব করেছে, এটি ১৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে।
ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক। তিনি অ্যালায়েন্স ফর হেলথ রিফর্মস বাংলাদেশের (এএইচআরবি) আহ্বায়ক। এর আগে তিনি ২০১৬-১৯ সাল পর্যন্ত ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ও ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশের নানা দিক নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেন বণিক বার্তায়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দিদারুল হক
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত বর্তমানে কোন কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এবং স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনি মনে করেন?
স্বাস্থ্য খাত একটি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং নৈতিক ভিত্তির মূল উপাদান। বাংলাদেশে এ খাতে অভূতপূর্ব সাফল্যের পাশাপাশি বেশকিছু গভীর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব, আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি, ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনের অভাব এ খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এছাড়া শহর ও গ্রামের মধ্যে সেবার মানের বৈষম্য, ওষুধের প্রাপ্যতার সমস্যা এবং চিকিৎসকদের মানবিকতা ও পেশাগত দক্ষতার ঘাটতিও বড় সমস্যা। স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এসব সমস্যার সমাধানে একটি বৈপ্লবিক রূপরেখা প্রদান করেছে। এটি শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন বা সেবা বৃদ্ধির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং জনমুখী, সর্বজনীন, সহজলভ্য এবং মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য একটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের আহ্বান জানায়। এ সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে আমূল পরিবর্তন আসতে পারে, যা জনগণের জীবনমান উন্নত করার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কমিশনের সুপারিশে কোন বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে বলে আপনি মনে করেন?
কমিশনের প্রতিবেদন একটি বিস্তৃত দলিল। যেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা, প্রশাসনিক সংস্কার, ওষুধ সরবরাহ এবং শিক্ষা—সব ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট সুপারিশ রয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলো:
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যাতে সব নাগরিক বিনামূল্যে এবং ন্যায্যভাবে সেবা পান। ইউনিয়ন সাব-সেন্টার, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো একীভূত করে সমন্বিত সেবা চালুর সুপারিশ করা হয়েছে, যা সেবার মান ও পরিসর বাড়াবে এবং রোগীদের বিভ্রান্তি কমাবে। শহরাঞ্চলে সেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যা শহরের জনগণের জন্য সেবা সহজলভ্য করবে। স্কুল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সৃজনশীল হেলথ এডুকেশন কার্যক্রম চালু করে শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যসচেতন করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা পর্যায়ে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা চালু করা হলে রোগীদের বিভাগীয় বা কেন্দ্রীয় হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন কমবে। এছাড়া কাঠামোগত রেফারেল সেবা চালু করে সঠিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। জাতীয় নারী স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্যে বিশেষায়িত সেবা প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে। জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক, জাতীয় ফার্মেসি নেটওয়ার্ক, ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি নেটওয়ার্ক, রক্ত সঞ্চালন নেটওয়ার্ক এবং অ্যাম্বুলেন্স নেটওয়ার্ক গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এগুলো সংকটে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়ার পাশাপাশি সেবার দক্ষতা বাড়াবে। সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা ফার্মেসি চালু, কেন্দ্রীভূত স্বচ্ছ ক্রয় পদ্ধতি, জেনেরিক নামে ওষুধ প্রেসক্রিপশন উৎসাহিত করা, এপিআই উৎপাদনে প্রণোদনা এবং ফার্মাকোভিজিলেন্স ব্যবস্থা জোরদার করার সুপারিশ রয়েছে। ১০ মিনিটের পরামর্শ নীতি, ডিজিটাল অভিযোগ প্লাটফর্ম এবং চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেবাকে আরো মানবিক ও রোগীকেন্দ্রিক করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
একটি স্বাধীন ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশন’ এবং ‘বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস’ গঠনের প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়া ১১টি স্বায়ত্তশাসিত আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ এবং একটি পৃথক ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশন (স্বাস্থ্য)’ গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। ইউনিক হেলথ আইডি, ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড এবং ডিজিটাল লজিস্টিক সিস্টেম চালু করে স্বাস্থ্যসেবাকে আধুনিক করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট ১৫ শতাংশে উন্নীত করা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য খাতে প্রশাসনিক ও নেতৃত্বের দুর্বলতা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। প্রশাসনিক ও নেতৃত্বের দুর্বলতা নিরসনে কমিশনের সুপারিশকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
স্বাস্থ্য খাতে কেন্দ্রীয়করণ, স্বচ্ছতার অভাব এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরুৎসাহিত করে। এ সমস্যা সমাধানে কমিশন বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছে:
বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা হবে, যা স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন, মান নির্ধারণ ও তদারকির দায়িত্ব পালন করবে। এটি সরকারপ্রধানের কাছে জবাবদিহি করবে এবং সংসদে বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেবে। বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস একটি একক সংস্থা হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মেডিকেল এডুকেশন ও পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তরকে একীভূত করবে। এর প্রধান হবেন মুখ্য সচিব পদমর্যাদার একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। এ সংস্থার তিনটি বিভাগ—জনস্বাস্থ্য, ক্লিনিক্যাল সেবা এবং চিকিৎসা শিক্ষা—জ্যেষ্ঠ সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ১১টি স্বায়ত্তশাসিত আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বাধীনতা প্রদান করা হবে। পাবলিক সার্ভিস কমিশন (স্বাস্থ্য) স্বাস্থ্য খাতে নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিক করবে। এ পদক্ষেপগুলো প্রশাসনিক জটিলতা কমিয়ে নেতৃত্বের দক্ষতা বাড়াবে এবং সেবার মান উন্নত করবে।
দেশের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও মানহীন প্রতিষ্ঠান নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। স্বাস্থ্যশিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে করণীয় কী?
স্বাস্থ্যশিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে কমিশন একটি যুগোপযোগী পরিকল্পনা দিয়েছে। বর্তমানে অনেক চিকিৎসকের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকলেও মানবিকতা, যোগাযোগ দক্ষতা এবং আপডেটেড চিকিৎসা জ্ঞানে ঘাটতি রয়েছে। এর সমাধানে কমিশনের প্রস্তাবগুলো হলো:
ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব মেডিকেল এডুকেশনের মান অনুযায়ী মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সাজানো হবে। মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ এবং শিক্ষায় রাজনৈতিক প্রভাব কমানো। কমিউনিটি-ভিত্তিক চিকিৎসা শিক্ষা এবং জিপি বা ফ্যামিলি মেডিসিন কোর্স চালু। চিকিৎসকদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং স্ট্যান্ডার্ড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালু। চিকিৎসকদের মানবিকতা, রোগীর সঙ্গে আচরণ এবং যোগাযোগ দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ প্রশিক্ষণ।
অন্তর্বর্তী সরকার কীভাবে এ সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন শুরু করতে পারে, বিশেষ করে তাদের সীমিত সময় ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায়?
অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে সময় ও রাজনৈতিক প্রস্তুতির সীমাবদ্ধতা রয়েছে, কারণ সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও জনসমর্থন প্রয়োজন, যা সাধারণত নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের ক্ষেত্রে বেশি থাকে। তবু ২০২৬ সালের প্রথম প্রান্তিকে নির্বাচনের সম্ভাবনা বিবেচনায়, সরকারের হাতে প্রায় সাত থেকে নয় মাস সময় রয়েছে। এ সময়ে কিছু নীতিগত ও প্রাথমিক পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব:
যেমন গ্রামীণ এলাকায় একীভূত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা এবং কার্যকর রেফারাল ব্যবস্থা গড়ে তোলা; একইভাবে শহরাঞ্চলেও রেফারাল ব্যবস্থাসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা সম্ভব প্রশাসনিক নির্দেশনার মাধ্যমে। ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশন’ ও ‘বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস’ গঠনের জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করা যেতে পারে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো ও কর্মপদ্ধতির খসড়া রূপরেখা চূড়ান্ত করতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা দরকার। তাছাড়া আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের জন্য উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি উচ্চপর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা প্রয়োজন।
আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, জুলাই ২০২৫ থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু করে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় আদেশ ও অর্ডিন্যান্স জারি করা হোক। এটি ২০২৬ সালের প্রথম প্রান্তিকে সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পথ তৈরি করবে এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি নীতিনির্ধারকদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করবে।
স্বাস্থ্য খাতে বাজেটে বরাদ্দ খুবই কম। এ খাতে অর্থায়নের বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাব কেন গুরুত্বপূর্ণ?
স্বাস্থ্য খাতে টেকসই অর্থায়ন ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়। বর্তমানে এ খাতে বাজেটের মাত্র ৫ শতাংশ বরাদ্দ হয়, যা অপ্রতুল। কমিশন প্রস্তাব করেছে, এটি ১৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে একটি জাতীয় স্বাস্থ্য তহবিল গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। এ তহবিল নির্দিষ্ট খাতে অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করবে এবং অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াবে। পর্যাপ্ত অর্থায়ন ছাড়া অবকাঠামো উন্নয়ন, জনবল প্রশিক্ষণ বা সেবার মান উন্নত করা সম্ভব নয়।
বেসরকারি খাতের সঙ্গে সমন্বয় কীভাবে সংস্কারে ভূমিকা রাখতে পারে?
বেসরকারি খাতের সঙ্গে সমন্বয় স্বাস্থ্যসেবার পরিসর ও মান বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ। কমিশন প্রস্তাব করেছে:
বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্সিং ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সহজ করতে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস পয়েন্ট’ চালু। মাননির্ভর গ্রেডিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করে বেসরকারি হাসপাতালের মান পর্যবেক্ষণ। ৫০ শয্যার বেশি হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকের নেতৃত্বে ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠন। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করে রোগীদের বিদেশমুখিতা কমানো। এ পদক্ষেপগুলো বেসরকারি খাতকে আরো দায়িত্বশীল ও মানসম্মত সেবা প্রদানে উৎসাহিত করবে।
সংস্কার বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজ ও জনগণের ভূমিকা কী হতে পারে?
সংস্কারের সাফল্যে নাগরিক সমাজ ও জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। জনগণ স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে সচেতন হলে এবং স্থানীয় পর্যায়ে তদারকি করলে সেবার মান বাড়বে। নাগরিক সমাজ সেবার গুণগত মান নিয়ে মতামত প্রদান, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এ সম্পৃক্ততা সংস্কার প্রক্রিয়াকে আরো গতিশীল ও ফলপ্রসূ করে তুলবে।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে জনমুখী, দক্ষ ও আধুনিক করে তুলতে পারে। তবে শুধু সুপারিশে থেমে থাকলে এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। এখনই সময় রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতা ভাঙার সাহস এবং নাগরিক সমাজের সমর্থন নিয়ে বাস্তবায়নের যাত্রা শুরু করার। জুলাই ২০২৫ থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি কার্যকর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে সাহস ও দূরদর্শিতার পরিচয় দেবে।