আওয়ামী লীগের অপশাসনের দীর্ঘ ১৬ বছরে বিরোধী মতাদর্শের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দমনের জন্য এমন কোনো পদক্ষেপ ও পথ ছিল না, যা সে অবলম্বন করেনি। বিচারের নামে প্রহসনের কায়দায় হত্যাসহ ক্রসফায়ারে হত্যা, অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, দমন-পীড়ন, আয়নাঘর প্রতিষ্ঠা, জোরপূর্বক চাকরি থেকে অপসারণ, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখল, অন্যায়ভাবে শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের রাজনৈতিক ক্ষমতার জোরে স্কুল-কলেজ থেকে বের করে দিয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়া, ব্যাংক দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস, মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও দুর্নীতির অভয়ারণ্যে পরিণত হয় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য পতিত ও পলাতক স্বৈরাচারী শাসক ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা জনগণের রোষানলে পড়ে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের ৫ তারিখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যান। ক্ষমতায় থাকাকালে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে এমন কিছু অসম গণধিকৃত চুক্তি সম্পাদন করেন, যা সুস্পষ্টভাবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বের জন্য অশনিস্বরূপ। বাংলাদেশর জন্য চিরকাল শত্রুর ভূমিকায় অবতীর্ণ ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে জনগণের মতের বিরুদ্ধে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। অশুভ শক্তির উপাসক শেখ হাসিনার দেশবিরোধী চুক্তির মধ্যে বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে ট্রানজিট চুক্তি, করিডোর চুক্তি, অবাধে স্থলবন্দর ব্যবহার, নৌবন্দর ব্যবহার এবং সমতাহীন বাণিজ্যিক চুক্তি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘ ১৬ বছর শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্যরা, দলীয় এমপিরা, দলীয় নেতাকর্মীরা, দলবাজ সরকারি আমলারা, দোসর ও পেটুয়া বাহিনীর ভয়ে জনগণ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। নিজের মতো করে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ, বক্তব্য প্রদান, স্বাধীনতাভাবে চলাচলের অধিকার থেকেও বঞ্চিত হায়েছিল বাংলাদেশের নিরীহ জনগণ।
সময়ের পরিক্রমায় গণঅভ্যুত্থানে শোচনীয়ভাবে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটে। তারপর একের পর এক পতিত শেখ হাসিনা, তার অবৈধ মন্ত্রি-এমপি, সিটি-পৌর মেয়র, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার ও দলীয় চামচাদের দুর্নীতির চিত্র উঠে আসতে থাকে। ফ্যাসিবাদের পতনের পর থেকে তাদের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল, বিশৃঙ্খল ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করার জন্য নানা রকমের অশুভ পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতায় থাকাকালে ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ভারতকে দেশের অভ্যন্তরের জমি ইজারা দিতেও কসুর করেননি। গত ৪ সেপ্টেম্বর পত্রিকান্তরে ‘আদানির ৯০০ একর জমি নিয়ে বিপাকে সরকার’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে জনগণ সতর্ক হয়। তারপর পতিত সরকারের প্রতি জনগণের ক্ষোভ ও ঘৃণা বাড়তে থাকে। সেখানে সংবাদে বলা হয়, ‘ভারতের বিতর্কিত শিল্পগ্রুপ আদানিকে পতিত শেখ হাসিনা সরকারের দেওয়া ৯০০ একর জমি নিয়ে বিপাকে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জমি এমন এক স্থানে অবস্থিত, যার সঙ্গে বাংলাদেশের নিরাপত্তার স্বার্থ জড়িত। চট্টগ্রামের মিরসরাই এলাকায় অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযোগকারী এ জমিটি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলায় যাতায়াতের জন্য ‘চিকেননেক’ হিসেবে পরিচিত। এ জমির বিষয়ে চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ আট মাস আগে চিঠি দিলেও ভারত এখন পর্যন্ত কোনো জবাব দেয়নি। ঢাকা এ চিঠির জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা যায়। ইতোপূর্বে এ জায়গায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য একটি স্থাপনা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।’
এদিকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৬ জুন নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রস্তাব পেশ করে ভারত। শেখ হাসিনা তাতে সম্মতি দিলে ওই বৈঠকেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা বাগেরহাটের মোংলায় বা রামপালের আশপাশে ১০০ একর জমি দেওয়ার প্রস্তাব করেন। ভারত এতে গোস্বা ও আপত্তি জানালে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার মোংলার পরিবর্তে রামপালে ৩০০ একর জমি দেয়। বেজার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওই পত্রিকাকে জানায়, ভারত প্রথমে রামপালের ৩০০ একর জমি বুঝে নিলেও পরবর্তীতে তারা মোচড় দেয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী রামপালের পরিবর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে এক হাজার ৫৫ একর জমি দাবি করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দেয়। পরবর্তীতে ওই চিঠিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ফরোয়ার্ডিংসহ বেজাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ভারতীয় হাইকমিশনের চিঠিতে বলা হয়, ২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ সংক্রান্ত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে মিরসরাইয়ে জমি চিহ্নিত করেছে এবং সেখানে যৌথ পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও ভারত চিঠিতে উল্লেখ করে। মিরসরাইয়ে ভারতের চিহ্নিত ওই পরিমাণ জমি বুঝিয়ে দেওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেজাকে অনুরোধ করে বলেও জানান সংস্থাটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বেজার একজন কর্মকর্তা জানান, ভারতকে দেওয়া ৯০০ একর জমির কোনো মূল্য নির্ধারণ করেনি বাংলাদেশ। এ ছাড়া এসব জমিতে আদানির জন্য স্থাপনা নির্মাণে সব ধরনের উন্নয়ন কাজ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান করবে এমন কথাও রয়েছে চুক্তিতে। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ থাকবে। তিনি আরো বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভারতীয় এলওসির অধীনে বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য আমরা ভারতের এক্সিম ব্যাংক ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের ওইসব চিঠির কোনো জবাব দেয়নি। ওই কর্মকর্তা জানান, মূলত মিরসরাইয়ে আদানির এ প্রকল্পটিতে বাংলাদেশের জন্য কোনো অধিকার রাখা হয়নি। ভূমি উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যন্ত্রপাতি স্থাপন ও লোকবল নিয়োগ থেকে শুরু করে যাবতীয় কর্মকা- ভারতই নিয়ন্ত্রণ করবে। ‘ওই এলাকায় কী ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা হবে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন করার এখতিয়ার আমাদের নেই’ বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। মিরসরাইয়ে যে এলাকাটিতে ৯০০ একর জমি আদানিকে দেওয়া হয়েছে, সেটির এক পাশে বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ উপকূল। আদানির এ প্রকল্প থেকে ভারতের ত্রিপুরার দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার।
উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রামের মিরসরাইভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান নয়া দালানের চেয়ারম্যান মুজাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ও পলায়নের পর এ প্রকল্প ছেড়ে ভারতীয়রা চলে গেছে। এখন সেখানে আর কেউ নেই। শেখ হাসিনার পতনের আগে ওই এলাকায় বাংলাদেশের কেউই যেতে পারতেন না। ৫ আগস্টের পর এলাকাবাসীকে নিয়ে বেজা কর্মকর্তারা সভা করেছেন। তারা আমাদের জানিয়েছেন, ৭০০ একর নিয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। এটি শুধু মৌখিক অঙ্গীকার ছিল মাত্র। ফলে এটি এখন অবমুক্ত করা যাবে। আর ৯০০ একরের বিষয়ে চুক্তি রয়েছে। এটি বাতিলের প্রক্রিয়া করা হবে। আদানির প্রকল্পকে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের পেটের মধ্যে এক খ- ভারত’। কারণ, সেখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নামে ভারতকে যে জমি দেয়া হয়েছে, তাতে একটি ছোট ভারত তৈরি হবে। এটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি, যা আমাদের জন্য খুবই বিপজ্জনক! মিরসরাইয়ে ওই জায়গাটির অবস্থান হচ্ছে ফেনীর কাছাকাছি। ভারতের জন্য যেমন একটি ‘চিকেননেক’ আছে আমাদের দেশের জন্যও ওই জায়গাটি একটি চিকেননেক। এটিকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারলেই আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। এসব প্রকল্প করার আগে শুধু অর্থনৈতিক দিক দেখলেই হবে না, দেশের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ ৯০০ একর জমিতে আদানির প্রকল্পকে চালিয়ে নেওয়া দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য উপযোগী নয় বলে মনে করছেন বেজার কর্মকর্তারা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদী চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে আমদানি করা কয়লা ব্যবহার হবে।
কিন্তু যে পদ্ধতিতে কয়লা আমদানি করা হবে তাতে আমদানি খরচ বেশি দেখানোর সুযোগ রয়েছে। এতে আদানির মুনাফা বৃদ্ধির বিশেষ সুযোগ রয়েছে। এছাড়া রেল ট্রানজিট সংক্রান্ত চুক্তি যাতে ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা দিয়ে প্রবেশ করে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পুনরায় ভারতে যেতে পারে সে ধরনের সুবিধা ভারতের হাতে আছে। এসব চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ নিয়ে সন্দেহ ও শঙ্কার শেষ নেই। একইভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশবাসী। এখন বিভিন্ন পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে হওয়া চুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি তোলা হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বুদ্ধিজীবী আনু মুহাম্মদ বলেন, ভারত প্রসঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের সুনির্দিষ্ট কিছু বক্তব্য, অভিযোগ ও সমস্যা আছে। এটা সাম্প্রদায়িক কোনো বিষয় নয়। এটি আধিপত্যের সমস্যা। শেখ হাসিনার সরকার শর্তহীনভাবে ভারতের কাছে মাথানত করে আত্মসমর্পণ করেছে। একের পর এক চুক্তি করেছে। এসবের পেছনে প্রধান কারণ ছিল জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে চিরস্থায়ী ক্ষমতা তৈরি করা। সে কারণে তার পুরো নির্ভরশীলতা তৈরি হয় ভারত রাষ্ট্রের ওপরে। তিনি এ সময় ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তির পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সঙ্গে সই করা চুক্তিগুলো প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে বলেন, যেসব চুক্তি জনস্বার্থবিরোধী, দেশের জন্য ক্ষতিকর সেগুলো বাতিল করা, চুক্তি বাতিলের পথ অনুসন্ধান করা এ সরকারের প্রথম দায়িত্ব।এদিকে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পাদিত চুক্তি ও সমঝোতা শুধু পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে হয়নি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও হয়েছে। এসব মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান চাইলে তাদের চুক্তি ও সমঝোতা পর্যালোচনা ও পুনর্বিবেচনা করতে পারে।
ভারতের সঙ্গে চুক্তি বাতিল বা পর্যালোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে, সবতো আর আমাদের মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে হয় না, সেখানে কিছু গোপনীয় আছে কি না আমার জানা নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বাংলাদেশ ভারতকে কি কি সুবিধা দিয়েছে কতটা পেয়েছে বা পায়নি তা অস্পষ্ট।প্রথম চুক্তিটি ছিল ২৫ বছর মেয়াদি মৈত্রী চুক্তি। এর পরপরই হয় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি। ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পড়ে যাওয়ার পর পর ফারাক্কা বাঁধসহ নানা বিষয় নিয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল। এরশাদ আমলে সম্পর্কের মধ্যে উত্থান-পতন ছিল সামান্য। দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আবারও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ পুনরায় ভারতের গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ হয় এবং অসম গণধিকৃত চুক্তি করে। আর কখনো এমন দেশ বিরোধী চুক্তির পুনরাবৃত্তি হোক তা বাংলাদেশের জনগণ চায় না।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে ভারতের সাথে করা চুক্তি ও সমঝোতা চুক্তিগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করা এবং দেশ বিরোধী চুক্তিগুলো থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নেওয়া।